ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাগর কোড়াইয়া

প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি

বাংলাদেশ ভূপ্রকৃতিগতভাবে এমন একটা অবস্থানে রয়েছে যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়তই সংঘটিত হয়। আর দেশের জনগণ সেই দুর্যোগ মোকাবেলায় বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ প্রশংসিতও হয়েছে। যদিও ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের এ দেশ ভূমিকম্পের দ্বারা অনেকবার আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তথাপি ভূমিকম্পের সঙ্গে এ দেশের মানুষ বেশি পরিচিত নয়। বিগত কয়েক বছরে মাঝারি ও মৃদু ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে দেশ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ছিল না। তবে দেশের জনসাধারণের মনে একটা অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পগুলো ভবিষ্যতে বড় কোন ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিচ্ছে কিনা সেই আশঙ্কাকে কোন মতেই এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। আমাদের দেশ যে ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এটা স্পষ্ট। ইদানীং প্রায়ই দেশের কোন না কোন অঞ্চল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে। বছরের শুরুতেই আবারও ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠেছে দেশ। ৩ জানুয়ারি ভূমিকম্পনে তুলনামূলক বেশি কেঁপে উঠেছে সিলেট অঞ্চল। আমরা জানি যে কোন মুহূর্তে ভূমিকম্পে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার যন্ত্র এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি তাই সচেতনতা, প্রশিক্ষণ ও পূর্ব প্রস্তুতিই হতে পারে ক্ষতি থেকে আমাদের রক্ষার কৌশল। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন একটাইÑ আমাদের দেশে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষ কতখানি সক্ষম এবং অভিজ্ঞ? পৃথিবীর ভূমিকম্প দূর্যোগপূর্ণ দেশগুলো এই দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে। ভূমিকম্পের ক্ষতি দূরীকরণে তাদের রয়েছে দক্ষকর্মী; সর্বোপরি জনগণ ভূমিকম্পের সময় কিভাবে নিজেদের রক্ষা করতে পারে সেই বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞ করে তোলা হয়। এটা অনুমেয় যে, ঢাকা শহরের জনসংখ্যার আধিক্য এবং পরিকল্পনাবিহীন দুর্বল বহুতল ভবন নির্মাণই ভূমিকম্পের সময় আমাদের জন্য কাল হতে পারে। এ শহরে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির কথা ভাবলে গা শিউরে ওঠে। তাই দেশের প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ স্থান থেকে ভূমিকম্প মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে। সচেতনতা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতিই ভূমিকম্প মোকাবেলার একমাত্র উপায় এবং ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে দিতে পারে। অনেকে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে নিজেকে বাঁচাবার জন্য ছোটাছুটি করে আহত বা নিহিত হন। মনে রাখতে হবে, ভূমিকম্প মানুষকে আক্রমণ করে না বরং কোন ভবন, ঘরবাড়ি ও স্থাপনা ভেঙ্গে পড়ে মানুষ হতাহত হয়। উদ্ধার কাজ সম্পাদনে অত্যাধুনিক মেশিন-যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার পানি ও খাদ্য মজুদ অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। বনানী, ঢাকা থেকে
×