ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাফিস অলি

চাই সচেতনতা

প্রকাশিত: ০৩:৩২, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

চাই সচেতনতা

নতুন বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশ। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। বিদায়ী বছরে কয়েকবার ঘটলেও নতুন বছরের শুরুতেই পুনরায় মনে করিয়ে দিল। প্রতিবার আমরা নতুন করে আতঙ্কিত হই এবং সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপারটাকে ভুলে যাই। বারবার ছোটাছোট সঙ্কেত পেলেও আমরা প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করি না। ফলে বড় একটা দুর্যোগ ঘটলে আমাদের অবস্থা ভেবে শিউরে উঠি! আমরা ছোটখাটো ভূমিকম্পের সঙ্গে পরিচিত হলেও বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি আমাদের দেশে রয়েছে। ভূ-গর্ভের দুটি টেকটোনিক প্লেটের উপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। যার সংঘর্ষের ফলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ফিরে তাকালে দেখা যায় ১৮৬৯ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ৬টি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। ৭ দশমিক ১ যার সর্বনিম্ন মাত্রা ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি আমাদের জানা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীর (সিডিএমপি) এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকা শরহের ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে। এতে দেশের অবস্থা হয়ে যেতে পারে যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের মতো। এই সমীক্ষা থেকে ভূমিকম্পের ভয়াবহতা কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়। ভূমিকম্পে আতঙ্ক নয়, বরং প্রয়োজন সচেতনতা এবং সাবধানতা। এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এর প্রতিরোধ সম্ভব নয়। কিন্তু পূর্বপ্রস্তুতি এবং সচেতনতার দ্বারা ক্ষয়ক্ষতি ও জীবননাশের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। ভূমিকম্পের ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা পেতে পূর্ব প্রস্তুতির বিকল্প নেই। তাৎক্ষণিক প্রস্তুতির মাধ্যমে এর সুফল অর্জনও সম্ভব নয়। কেননা এটি খুব দ্রুত সংঘটিত হয়। টের পাবার ১১ সেকেন্ডের মধ্যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যায়। ভূমিকম্পের সতর্কতা ও প্রস্তুতির মধ্যে প্রধান হচ্ছে সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী বিল্ডিং কোড মেনে নতুন ভবন তৈরি করা। বহুতল ভবনে রেট্রোফিটিংয়ের ব্যবস্থা নেয়া অতি জরুরী। ফলে ঝুঁকি অনেক কমে যায়। বাংলাদেশের সর্বত্র ভূমিকম্প-ঝুঁকি সমান নয়। নিজ এলাকায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা রাখাও প্রস্তুতির একটা অংশ। মনে রাখতে হবে, ভূমিকম্পের সময় দৌড়ঝাঁপ আরও বিপদের কারণ হতে পারে। ভবনে যদি ভূমিকম্প সহনীয় ব্যবস্থা থাকে তবে সেই ভবনের মধ্যেই একজন মানুষ বেশি নিরাপদ। তবে ভবনের মধ্যস্থ আসবাবপত্র থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে থাকলে এবং সেখান থেকে নিরাপদে বের হওয়ার সুযোগ থাকলে সেটা কাজে লাগাতে হবে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×