ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাকসবজি রফতানি বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ১২ জানুয়ারি ২০১৭

শাকসবজি রফতানি বৃদ্ধি

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের খামারবাড়িতে তিন দিনব্যাপী মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হলো দ্বিতীয় সবজিমেলা। বিপুল দর্শকধন্য প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ১১২ রকমের শাকসবজি। ইদানীং মাশরুমসহ কয়েকরকমের বিদেশী শাকসবজির আবাদও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দেশে। ইতোমধ্যে আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারসসহ ফলফলাদির উৎপাদনও বেড়েছে যথেষ্ট। বিশ্বে শাকসবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। মানুষ শুধু ভাত বা রুটি খেয়ে বাঁচে না। এর সঙ্গে চাই আনুষঙ্গিক উপকরণ। মাছ-মাংস-ডিম-শাকসবজি, ভিটামিনস ও মিনারেলস। প্রোটিনের পাশাপাশি শর্করা ও অন্যান্য। শাকসবজিতে মানুষের জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ উপাদান মেলে প্রচুর পরিমাণে। জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইদানীং মানুষের মধ্যে শাকসবজি, ফলমূল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে যথেষ্ট। তবু হতাশার কথা এই যে, বিপুল পরিমাণে উৎপাদনের কারণে প্রতিবছর অনেক শাকসবজি নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে অনুকূল আবহাওয়ায় এবং উন্নত চাষাবাদে বিভিন্ন রকম শাকসবজির উৎপাদন বেড়েছে কয়েকগুণ। বাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি থাকায় প্রায়ই কৃষক ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়, এমনকি তার উৎপাদন খরচও ওঠে না। উদ্বৃত্ত সবজি খাওয়ানো হয় গবাদিপশুকে। এরপরও বিনষ্ট হয়। বগুড়ার শিবগঞ্জে উৎপাদিত বাঁধাকপি রফতানি হচ্ছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে। অবশ্য শুধু বগুড়া থেকেই নয়, যশোরসহ অন্য দু’একটি জেলা থেকেও বাঁধাকপি এবং অন্যবিধ শাকসবজি রফতানির খবর আছে। রাজধানীর একাধিক প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত। রফতানিকারকদের দাবি, তারা মাঠপর্যায়ে সরাসরি সবজি কিনে থাকেন কৃষকের কাছ থেকে। এতে তারা নগদ অর্থে ভাল দাম পেয়ে থাকেন। অতঃপর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং শীতলীকরণ পদ্ধতিতে কন্টেনারে ভরে শাকসবজি রফতানি করেন সংশ্লিষ্ট দেশে জাহাজযোগে। তবে এক্ষেত্রে তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে যথাযথ সহযোগিতা পান না বলে অভিযোগও রয়েছে। এই যেমন, মাঠপর্যায়ে সবজি কিনতে গেলে তা মূলত কেনা হয়েছে রফতানির জন্য, এই মর্মে প্রত্যয়ন প্রয়োজন। অন্যদিকে প্রয়োজন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের সনদপত্র। এসব ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা একান্ত আবশ্যক। অধিকাংশ শাকসবজি প্রধানত ঋতুনির্ভর বলে এক্ষেত্রে সময়ও একটি অন্যতম নিয়ামক বৈকি। সর্বদা আমলাতন্ত্রের নজরদারি ও খবরদারি চলে না এখানে। এমন হওয়াও বিচিত্র নয় যে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ইত্যাদি আদপেই জানে না যে শাকসবজি যাচ্ছে বিদেশে। সে অবস্থায় বাজার ধরে রাখার জন্য সরকারী বিভিন্ন বিভাগের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। শাকসবজি রফতানির পথ ও পদ্ধতি সহজসাধ্য করে তোলা আবশ্যক। ইতোমধ্যে আলু, বাঁধাকপি, আম রফতানির সুসংবাদ মিলেছে। পর্যায়ক্রমে উদ্যোগ নিতে হবে অন্যবিধ শাকসবজি রফতানির ক্ষেত্রেও। এর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহযোগিতায় দেশের পাশাপাশি বিদেশেও নিয়মিত বাংলাদেশী শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি কৃষিপণ্যের মেলার আয়োজন করা।
×