ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাহীয়ান দ্বীপ

পিসকোভার জ্বলে ওঠার নেপথ্যে

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

পিসকোভার জ্বলে ওঠার নেপথ্যে

নতুন বছরের প্রথম টুর্নামেন্টেই আলো ছড়ালেন ক্যারোলিনা পিসকোভা। বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড়দের হতাশ করে ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন বনে যান তিনি। শনিবার শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে চেক প্রজাতন্ত্রের এই টেনিস তারকা ৬-০ এবং ৬-৩ সেটে হারান ফ্রান্সের এ্যালিজ কোর্নেটকে। এই জয়ের প্রভাব পড়েছে র‌্যাঙ্কিংয়েও। প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে পাঁচে জায়গা করে নিলেন ক্যারোলিনা পিসকোভা। স্লোভাকিয়ার ডোমিনিকা সিবুলকোভাকে পেছনে ফেলে একধাপ সামনে উঠে এলেন তিনি। তবে এছাড়া শীর্ষে থাকা বাকি চার তারকার অবস্থানই অপরিবর্তিত। গত কয়েক বছর ধরেই গ্র্যান্ডসøামে খেলছেন পিসকোভা। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডেই বারবার আটকে যাওয়া এই চেক তারকার সেরা সাফল্য অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ড। অবশেষে সেই ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে গত বছরই প্রথম কোন গ্র্যান্ডসøামের ফাইনালে জায়গা করে নেন তিনি। এ্যানাস্তাসিয়া পাভলিউচেঙ্কোভা এবং আমেরিকার দুই বোন ভেনাস-সেরেনাকে বিদায় করে জায়গা করে নেন ইউএস ওপেনের ফাইনালে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। বছরের শেষ মেজর টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনের ফাইনালে জার্মানীর এ্যাঞ্জেলিক কারবারের কাছে হেরে যান তিনি। তবে সেই হারের পরও দমে যাননি পিসকোভা। নতুন মৌসুমের শুরুতেই তার প্রমাণ দিলেন এই চেক তারকা। নতুন মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টেই নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরলেন ছয় ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতার এই খেলোয়াড়। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে ক্যারিয়ারের সপ্তম শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেন তিনি। ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্ট জয়ের পথে চেক প্রজাতন্ত্রের এই টেনিস তারকা ইতালির রবার্তা ভিঞ্চি, ইউক্রেনের এলিনা ভিতলিনা এবং সর্বশেষ ফাইনালে ফ্রান্সের এ্যালিজ কোর্নেটকে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেন তিনি। গত মৌসুমের শুরুতেই টেনিস বিশ্বকে অবাক করে দেন মারিয়া শারাপোভা। মেলডোনিয়াম সেবনের কারণে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে টেনিস কোর্টের বাইরে ছিটকে যান তিনি। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কোর্টে দেখা যায়নি বেলারুশ সুন্দরী ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কাকে। চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভা, পোল্যান্ডের এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা, রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ এবং সার্বিয়ার আনা ইভানোভিচরাও ছিলেন নিস্প্রভ। অভিজ্ঞ তারকাদের ভিড়ে সাফল্যের আলোয় ভেসেছেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। বছরের প্রথম এবং শেষ গ্র্যান্ডসøাম নিজের শোকেসে তুলে পুরোটা সময়ই আলোচনার শীর্ষে ছিলেন তিনি। মাঝে রিও অলিম্পিকের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে পান প্রথম রৌপ্য জয়ের স্বাদও। আর সেরেনা উইলিয়ামস জিতেছেন শুধুই উইম্বলডন। কোর্টে তার বাজে পারফর্মেন্সের প্রভাব পড়েছে র‌্যাঙ্কিংয়েও। এ্যাঞ্জেলিক কারবারের কাছে শীর্ষস্থান হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেন তিনি। গত বছরের বাকি থাকা ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জিতেন স্পেনের টেনিস তারকা গারবিন মুগুরুজা। তবে নতুন মৌসুমের শুরুতেই পুরোনো সেই তারকাদের কাউকেই জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। সেরেনা উইলিয়ামস, এ্যাঞ্জেলিক কারবার কিংবা ক্যারোলিন ওজনিয়াকি প্রত্যেকেই নতুন মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেন বর্তমান টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নাম্বার তারকা কারবার। শীর্ষ তারকাকে হারিয়ে শুরুতেই চমকে দেন ইউক্রেনের এলিনা ভিতলিনা। শেষ আটের লড়াইয়ে ভিতলিনা ৬-৪, ৩-৬ এবং ৬-৩ সেটে হারান কারবারকে। তবে বেশিদূর এগুতে পারেননি ভিতলিনাও। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে র‌্যাঙ্কিংয়ের ছয় নাম্বারে থাকা ক্যারোলিনা পিসকোভার কাছেই হেরে ছিটকে পড়তে হয় তাকে। শেষ পর্যন্ত যে কারবারই শিরোপা জয়ের হাসি হাসেন। গত বছরের শেষ মুহূর্তে এসে হঠাৎ করেই বাগদানের ঘোষণা দেন সেরেনা উইলিয়ামস। বাগদানের পর অকল্যান্ড ক্লাসিক দিয়েই নতুন মৌসুম শুরু করেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। জয় দিয়েই নতুন বছর শুরু করলেও অকল্যান্ড ক্লাসিকের খুব বেশিদূর এগুতে পারেননি তিনি। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই হেরে টুর্নামেন্ট থেকে লজ্জাজনকভাবে বিদায় নেন দুই নাম্বারে থাকা এই তারকা। স্বদেশী মেডিসন ব্রেঞ্জেলের কাছে কঠিন লড়াইয়ে ৪-৬, ৭-৬ এবং ৪-৬ সেটে হার মানেন ৩৫ বছর বয়সী সেরেনা উইলিয়ামস। অকল্যান্ডে ভক্ত-অনুরাগীদের হতাশ করেন তার বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসও। কেননা বাহুতে ইনজুরির কারণে যে টুর্নামেন্ট থেকেই নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন ভেনাস। সেরেনা-ভেনাসের বিদায়ের একদিন পর ছিটকে যান সাবেক শীর্ষ তারকা ক্যারোলিন ওজনিয়াকিও। জার্মানির জুলিয়া জর্জেসের কাছে হেরে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ছিটকে পড়েন তিনি। যে টুর্নামেন্ট থেকে সেরেনা-ভেনাস-ওজনিয়াকিরা বিদায় নেন সেখানে চমকে দিলেন লরেন ডেভিস। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেই অকল্যান্ড ক্লাসিকের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে লরেন ডেভিস সরাসরি সেটে হারান অষ্টম বাছাই এনা কোঞ্জুকে। প্রতিপক্ষকে ৬-৩ এবং ৬-১ সেটে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের স্বাদ পান তিনি। এটাই তার ক্যারিয়ারের প্রথম ডব্লিউটিএ শিরোপা। পুরুষ টেনিসে অবশ্য দুর্দান্ত খেলছেন র‌্যাঙ্কিংয়ের এক ও দুই নাম্বারে থাকা এ্যান্ডি মারে এবং নোভাক জোকোভিচ। শনিবার রাতে কাতার ওপেনের ফাইনালে মুখোমুখি হন তারা। যেখানে ব্রিটিশ তারকা মারেকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পান নোভাক জোকোভিচ। তবে মারে-জোকোভিচ শুরুর দিকেই সেরা পারফরমেন্স উপহার দিলেও নিস্প্রভ সাবেক দুই শীর্ষ তারকা রাফায়েল নাদাল এবং রজার ফেদেরার। বছরের প্রথম টুর্নামেন্টে বাজে পারফর্ম করেই বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। তবে তাদের চোখ এখন মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। যদি স্বরূপে ফিরতে পারেন তারা!
×