ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৪৮ দল নিয়ে বিশ্বকাপের পক্ষে এ আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার

মেসি না আসায় হতাশ ম্যারাডোনা

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

মেসি না আসায় হতাশ ম্যারাডোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একই মঞ্চে বর্তমান সময়ের এবং সাবেক ফুটবল সেরাদের উপস্থিতি ছিল সোমবার রাতে। সুইজারল্যান্ডের জুরিখে অনুষ্ঠিত হয় ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান। বর্ষসেরা হওয়ার লড়াইয়ে নাম ছিল আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি, পর্তুগালের তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও ফ্রান্সের তরুণ তারকা এ্যান্টোনি গ্রিজম্যানের। শেষ পর্যন্ত বর্ষসেরার মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটা হাতে তুলেছেন রোনাল্ডো। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিনেদিন জিদান, লুইস ফিগো ছাড়া সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম দিয়াগো ম্যারাডোনা। কিন্তু এমন এক মঞ্চের আশেপাশেও ছিলেন মেসি। এ বিষয়টা নিয়ে দারুণ হতাশা ব্যক্ত করেছেন ম্যারাডোনা। ঠিক পরদিনই (মঙ্গলবার) বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ৪৮ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেবে। এর আগেই বিষয়টির পুরোপুরি পক্ষে নিজের সমর্থন জানিয়ে দেন এ কিংবদন্তি। ১৯৯১ সাল থেকে ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের প্রবর্তন করা হয়। তবে ২০১০ সালে এটি একীভূত হয়ে যায় ফ্রান্সের দেয়া ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের সঙ্গে। তখন থেকে একটিই পুরস্কার পেয়েছেন বিশ্বসেরা ফুটবলার। সেটা একত্রে নাম ছিল ফিফা ব্যালন ডি’অর। তবে এ বছর আবার আলাদাভাবে দুটি পুরস্কার দেয়া হলো। এ বছর একাই এ দুটি পুরস্কার জেতার গৌরব দেখিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডো। তবে ফিফা বর্ষসেরার বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুপস্থিত ছিলেন মেসি। বুধবার ক্যাম্প ন্যুতে এ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে কোপা দেলরে’র ফিরতি লেগের প্রস্তুতি নিতে হবে এমন অজুহাত দেখিয়ে জুরিখে যাননি মেসিসহ বার্সিলোনার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জেরার্ড পিকে ও লুইস সুয়ারেজরা। এরা সবাই ফিফা বর্ষসেরা একাদশে ঠাঁই পেয়েছেন এবার। বিষয়টি একেবারেই ভাল লাগেনি মেসির স্বদেশী কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যারাডোনার। ৫৬ বছর বয়সী সাবেক আর্জেন্টাইন তারকা বলেন, ‘মেসিকে নিয়ে আমি হতাশ। ঘরে বসে টিভি দেখে আপনি কারও সঙ্গে লড়াই করতে পারবেন নাÑ এখানে এলে আপনি লড়াই করতে পারবেন।’ ফিফার এই অনুষ্ঠানে বার্সেলোনার প্রতিনিধি হিসেবে যান ক্লাব সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমিউ ও ক্লাবটির পরিচালকরা। উপস্থিত থাকলেও বার্সা কর্মকর্তাদের মু-ুপাত করেন আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জেতা ম্যারাডোনা। তিনি মনে করেন খেলোয়াড়দের লড়াইয়ের জায়গা হচ্ছে মাঠ। আর এমন একটি পুরস্কারের মঞ্চটা সবসময়ই বড় একটি প্রতিযোগিতার স্থান। ম্যারাডোনা বলেন, ‘আমি জানি না, এমন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বার্সিলোনা কেন এলো না। কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়ার মতো বিষয় তাদের আছে এবং তারা লিওর (মেসি) না আসাটা প্রাধান্য দিয়েছে। আমি মনে করি, বার্সিলোনায় থাকার চেয়ে জুরিখে এসে তারা বেশি লড়াই করতে পারত।’ একই মঞ্চে ফিফার ৪৮ দল নিয়ে বিশ্বকাপ করার প্রস্তাবনাকেও সমর্থন জানান ম্যারাডোনা। ১৯৯৮ সালে ২৪ দল থেকে বাড়িয়ে ৩২ করা হয়েছিল বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা। এরও আগে ১৯৮২ সালে ১৬ দল থেকে বাড়িযে করা হয়েছিল ২৪। কিন্তু সেপ ব্লাটারের বিদায়ের পর নতুন সভাপতি হিসেবে ফিফার দায়িত্ব নিয়েই নিজের সংস্কার প্রস্তাবনায় সবচেয়ে উপরে ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের বিষয়টি রাখেন জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো। মঙ্গলবার সেটাই নিশ্চিত হয়েছে। ২০২৬ থেকে ১৬ গ্রুপে তিনটি করে দল নিয়ে মোট ৪৮ দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ। প্রতি গ্রুপ থেকে দুটি করে ৩২ দল উঠবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। সবমিলিয়ে ৮০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৩২ দিনে। এর অনেকে বিরোধিতা করলেও অনুমোদিত হওয়ার আগেই প্রস্তাবনার পক্ষে কথা বলেন ম্যারাডোনা। তিনি বর্ষসেরা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এটা আমার কাছে খুবই চমৎকার একটি চিন্তা-ভাবনা মনে হয়েছে। যেসব দেশ এমন ধরনের প্রতিযোগিতায় কখনও আসতে পারেনি তাদের জন্য বড় একটা সুযোগ তৈরি করে দেবে। আমার মনে হয় না গুণগত মান কমে যাবে।’
×