ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা দক্ষিণের নতুন চার ইউনিয়নে সড়ক ও ড্রেনের উন্নয়ন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

ঢাকা দক্ষিণের নতুন চার ইউনিয়নে সড়ক ও ড্রেনের উন্নয়ন হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হওয়া চারটি ইউনিয়নের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। ডিএসসিসির আওতাধীন শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল এবং সারুলিয়া এলাকার উন্নয়নে ৭৩৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের একটি প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রায় ৮ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের মোট নয়টি নতুন ও সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রকল্পগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি আটটি ইউনিয়ন নতুন করে ডিএসসিসির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সংযুক্ত এলাকায় নাগরিক সুবিধা বর্তমানে অপ্রতুল। প্রাথমিক অবস্থায় চারটি ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি চারটি ইউনিয়ন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ইউনিয়নগুলোর উন্নয়নে প্রকল্প নেয়া হবে বলে মন্ত্রী জানান। জানা গেছে, প্রকল্পের আওতাভুক্ত চারটি এলাকার মোট ১৫২ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন ও ১৮৫ কিলোমিটার ড্রেন উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া সড়কগুলোতে এলইডি বাতি স্থাপন, বৃক্ষরোপণ ও ফুটপাথ প্রশস্তকরণের কাজও করা হবে। মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে ১৬টি একনেক সভায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ১৩১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ১৭টি সভায় অনুমোদন দেয়া হয় ১২৭ প্রকল্পে, যেগুলোর প্রাক্কলিত ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৬ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নদী খননের সময় অপসারিত পলি দিয়ে ব্লক ইট তৈরি করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এতে নদীর নাব্য রক্ষার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশসম্মত ইট তৈরির মাধ্যমে অর্থের সাশ্রয় হবে। পাইলট আকারে শীঘ্রই এ সংক্রান্ত প্রকল্প নেয়া হবে বলেও মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, একই ছাদের নিচে গণযোগাযোগ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর ও ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সরকারের গণযোগাযোগ কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে তথ্য ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য তথ্য ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পটি সংশোধিত (১ম) আকারে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ভবন সম্প্রসারণ করায় ৬০ কোটি টাকার মূল প্রকল্পটির নতুন সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা। রমনা সার্কিট হাউস রোডে ১৬ তলা ভবনটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪০ জেলার ৯৪ উপজেলায় ১২৮টি দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হবে। এজন্য ব্যয় হবে প্রায় ৩ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা। অনুমোদন পেয়েছে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্প (১ম সংশোধিত)। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। ভোলা জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৫৫ কোটি টাকা। বাগেরহাট জেলায় ৮৩টি নদী, খাল পুনঃখনন এবং মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের নাব্য বৃদ্ধি প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এছাড়া সভায় অনুমোদন পেয়েছে ৩৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ৫৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি পার্বত্য জেলায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প এবং ১৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ ও উপকেন্দ্রসমূহের উন্নয়ন প্রকল্প। জানা গেছে, মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে খরচ হবে ৭ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে ৫০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা।
×