ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জোবায়দার মামলার রুলের শুনানি শেষ

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা চ্যালেঞ্জ খালেদার আইনজীবীদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা চ্যালেঞ্জ খালেদার আইনজীবীদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করার অভিযোগে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এদিকে সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার ওপর জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। ফলে রুল শুনানির রায় যেকোন দিন ঘোষণার জন্য সিএভি (অপেক্ষমাণ) রাখা হয়েছে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণাদেব নাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেছেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন। আবেদনে অভিযোগ আমলে নেয়ার বিষয়ে নিম্ন আদালতের দেয়া আদেশ স্থগিত ও মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না এই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। জানা গেছে, এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানির জন্য হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ আতাউর রহমান খানের বেঞ্চে আবেদন শুনানি হতে পারে আজ। মঙ্গলবারেও এটি কার্যতালিকাতে ছিল। খালেদার জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার অভিযোগ আমলে নেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে।’ এরপর ২৩ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ মনোভাব পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিস পাঠান সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। নোটিসের জবাব না পাওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান তিনি। পরে গত ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২৪ জানুয়ারি এ অনুমোদনের চিঠি হাতে পেয়ে ২৫ জানুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদার ওই দিনই মামলা আমলে নিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। এরপর খালেদার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। গত বছরের ১০ আগস্ট মামলায় অভিযোগপত্র আমলে নেন বিচারিক (নিম্ন) আদালত। এ মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য ১ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে। ওইদিন খালেদাকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। রুলের রায় যে কোন দিন সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার ওপর জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। ফলে রুল শুনানির রায় যেকোন দিন ঘোষণার জন্য সিএভি (অপেক্ষমাণ) রাখা হয়েছে। রুলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণাদেব নাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এজে মোহাম্মদ আলী, তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন মোঃ খুরশিদ আলম খান। এর আগে গত বছরের ২ নবেম্বর মামলার রুল শুনানি করতে বিব্রতবোধ করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য ওই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী ডাঃ জোবায়দা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছর জোবায়দা রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপীল করলেও আপীল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। কিন্তু এ মামলায় আসামিপক্ষ দুদককে পক্ষভুক্ত করেনি। গত বছরের ২ এপ্রিল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মোঃ মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুদককে পক্ষভুক্ত করার আবেদন মঞ্জুর করেন।
×