স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রেলপথে চট্টগ্রামের সঙ্গে পর্যটননগরী কক্সবাজারের মেলবন্ধন স্থাপনের পথে সবচেয়ে বড়ধাপ অতিক্রান্ত হয়েছে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। ৫টি দেশের ৯ প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে এই দরপত্রে। সবকিছু ঠিকঠাক মতো শেষ হওয়া সাপেক্ষে আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের কাজ। এই রেলরুট কক্সবাজারের রুমা থেকে সম্প্রসারিত হয়ে সংযুক্ত হবে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পর্যন্ত। স্বপ্নের এই প্রকল্প এখন বাস্তবে রূপ পেতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার তথা বৃহত্তর চট্টগ্রাম রূপ নেবে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। জানা যায়, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ নির্মাণের টেন্ডারে অংশ নিয়েছে চীনের ৫টি এবং বাংলাদেশ, ভারত, স্পেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার একটি করে প্রতিষ্ঠান। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে দ্রুতই কার্যাদেশ প্রদান করা হবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ স্বপ্নবিলাসী এক প্রকল্প হলেও এই রুট নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল ব্রিটিশ সরকারের। ১৮৯০ সালে গ্রহণ করা হয়েছিল এই পরিকল্পনা। এরপর ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান আমলে এর সক্ষমতা যাচাই সম্পন্ন হয়। জাপান রেলওয়ে টেকনিক্যাল সার্ভিস নামের প্রতিষ্ঠান ১৯৭১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পুনরায় সক্ষমতা যাচাই করে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু সরকারেরও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছিল এই রেললাইন। কিন্তু এরপর আর কোন সরকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবেনি।
১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবারও শুরু হয় স্বপ্নের এই রেললাইন স্থাপনের প্রক্রিয়া। ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার হয়ে রুমা থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন মিটারগেজ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। মূলত তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় যে, এই রেললাইন নির্মিত হবে। তবে যুগের চাহিদা অনুযায়ী সরকার রেললাইনকে মিটারগেজ থেকে ডুয়েল গেজে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার এবং কক্সবাজারের রুমা থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দেবে ১২ হাজার কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৬ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এডিবি ধাপে ধাপে ইতোমধ্যেই দেড় শ‘ কোটি টাকা ছাড় করেছে। চলতি বছরের মার্চে এই রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু করে তা ২০২২ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: