ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অবৈধভাবে খাল ভরাট

হালতি বিলে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

হালতি বিলে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ অনিশ্চিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ১০ জানুয়ারি ॥ নলডাঙ্গা উপজেলার মিনি কক্সবাজার খ্যাত হালতি বিলে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রতিবছর হালতি বিলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে আর্থিক লোকসানের মুখে পড়ছেন কৃষকরা। বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে গত বছর বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেও তা কোন কাজে আসেনি ভুক্তভোগী কৃষকদের। সমস্যা সমাধানে গত বছর নিজ উদ্যোগে খাল সংস্কারের মাধ্যমে যতদূর সম্ভব বোরো চাষ করেছিল কৃষকেরা। কিন্তু বিল থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য খননকৃত মূল খালটি দখলদাররা অবৈধভাবে পুনরায় ভরাট করায় কৃষকের সমস্যা একই রকম আছে বলে জানিয়েছেন তারা। সম্প্রতি সমস্যার সমাধান চেয়ে স্থানীয় কৃষকদের আয়োজনে মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার মিনি কক্সবাজার খ্যাত হালতিবিলে এখন পানি জমে রয়েছে। ফলে বিলটিতে বোরো চাষের সময়সীমা অতিবাহিত হতে চললেও এখনও বোরো চাষ শুরু“ করতে পারেনি এখানকার কৃষকেরা। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে বিলের প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ১৯৮১সালে হালতি বিলের পনি নিষ্কাশন সুবিধার জন্য ব্রক্ষপুর হতে মোহনপুর পর্যন্ত জিয়া খাল নামে ২০কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে একটি খাল খনন করা হয়। কিন্তু অবৈধ দখলদার কর্তৃক ভরাট ও দখল দারিত্বের কারণে সেই জিয়া খাল অচিরেই তার জৌলুস হারায়। বিশেষ করে খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জিয়া খালের উৎস মুখসহ এক কিলোমিটারজুড়ে অবৈধ দখল ও ভরাট করায় উপজেলার বাশিলা, সোনাপাতিল, তেঘড়িয়া, মাধনগর, খোলাবাড়িয়া, হালতি, পাটুলসহ ৮টি গ্রামের শত শত কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় এই খাল। বিগত বছরে বোরো চাষ অব্যাহত রাখতে স্থানীয় কৃষকেরা নিজ উদ্যোগে খালটির একাংশ পুনঃখনন করলেও এবছর পুনরায় তা ভরাট হওয়ায় সেটি আর কোন কাজে আসছে না। স্থানীয় এমপি, উপজেলা কৃষি অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ইউএনওর কাছে লিখিত আবেদন করেও বিগত কয়েক বছর ধরে সৃষ্ট এই সমস্যার মেলেনি ফলপ্রসূ কোন প্রতিকার। এ ব্যাপারে তেঘড়িয়া গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, হালতি বিলের নিচু এলাকা জলমগ্ন থাকায় সময়মতো ধান লাগানো কঠিন হয়ে পড়ে। কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, গত বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজেদের উদ্যোগে খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটি সংস্কার করে পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। কিন্ত ওই খালটি আবারও ভরাট হওয়ায় এবছর বোরো নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা। নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুন্ধাশু কুমার জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই।। আবেদন করলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, হালতি বিলে দুই থেকে আড়াই শ’ হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের অনেক দেরিতে বোরো ধান লাগাতে হয়।
×