ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঝুঁকিবহুল খেলায় লিপ্ত মার্কিন ও রুশ পাইলটরা

সিরিয়ার আকাশে সংঘর্ষের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

সিরিয়ার আকাশে সংঘর্ষের আশঙ্কা

সিরিয়ার আকাশসীমায় মার্কিন ও রুশ পাইলটরা ঝুঁকিবহুল খেলায় লিপ্ত রয়েছেন। সেখানে এক নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সমান্তরাল যুদ্ধ চালাতে মার্কিন ও রুশ বিমান ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে একই আকাশসীমাজুড়ে। রুশ পাইলটদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে বলে উদ্বিগ্ন আমেরিকান পাইলটরা ইসলামিক স্টেট জঙ্গীদের ওপর বোমাবর্ষণ করছেন আর রুশ পাইলটরা বোমাবর্ষণ করছেন সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সচেষ্ট বিদ্রোহীদের ওপর। সিরিয়ায় সাম্প্রতিক অস্ত্রবিরতি সত্ত্বেও রুশ যুদ্ধবিমান প্রতিদিনই আকাশপথে উড়ে যাচ্ছে। সেগুলোও ইসলামিক স্টেটের স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে থাকে। মার্কিন বিমানবাহিনী এ কথা জানায়। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। মার্কিন ও রুশ সেনাবাহিনীর মধ্যে এক বছর ধরে নিরাপত্তা চুক্তি রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকান পাইলটরা রুশ পাইলটদের সঙ্গে বিপজ্জনক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার হাত থেকে কোনক্রমে বেঁচে যান। রুশরা হয় আচরণবিধি সম্পর্কে অবহিত নন, নয়ত তা সর্বদাই অনুসরণ করতে অসমর্থ বা অনিচ্ছুক। মার্কিন এয়ার এক্সপেডিশনারি উইংয়ের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল চার্লস করকরান বলেন, তারা কদাচিৎই মৌথিকভাবে সাড়া দেয়। কদাচিৎই তারা অবস্থান পরিবর্তন করে। আমরাই সরে দাঁড়াই। তারা কী দেখতে পায় বা পায় না তা আমরা জানি না। তাছাড়া আমরা চাই না আমাদের কোন বিমানের সঙ্গে তাদের কোন বিমানের সংঘর্ষ হোক। রুশ বিমানগুলো আন্তর্জাতিক প্রটোকল অগ্রাহ্য করে তাদের পরিচয়সূচক সঙ্কেত প্রদান করে না। এতে আকাশে বিমান যানজট আরও জটিল রূপ নেয়। সিরিয়ায় রুশ পাইলটদের তৎপরতা সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য লিখিত অনুরোধের জবাব দেয়নি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আকাশপথে সৃষ্ট উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। আসাদ সরকারকে শক্তিশালী করতে মস্কোর ক্রমবর্ধমান জোরালো ভূমিকা, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর কথিত হস্তক্ষেপ এবং ইতোপূর্বে এর ক্রিমিয়া দখলকে কেন্দ্র করে ওই উত্তেজনা আগেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে আমেরিকান কমান্ডাররা চিন্তিত যে, সিরিয়ার আকাশে কোন বিমান সংঘর্ষ বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। ইউএস এয়ারফোর্সের কর্নেল ড্যানিয়েল ম্যানিং বলেন, যদি কোন বিমান বিদ্ধস্ত হয় তবে সেটি কারও গুলিতে ভূপাতিত না হয়ে বরং কোন ধরনের যান্ত্রিক সমস্যাই এর ধ্বংস হওয়ায় কারণ ছিল বলে মনে করাই বেশি স্বাভাবিক হবে। কিন্তু যুদ্ধের ধোঁয়াশা ও উত্তেজনার মধ্যে কোন ধরনের বৈরী তৎপরতা বিমানটিকে ভূপাতিত করেছিল বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে লোকজন প্রবৃত্ত হবে। মার্কিন ও রুশ বিমানগুলোর যাতে একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষ না বাধে বা একে অপরকে গুলি করে নিচে না ফেলে দেয়, সে লক্ষ্যে ২০১৫ সালে দু’দেশের কমান্ডাররা চার পৃষ্ঠার এক সমঝোতা স্মারক সই করেছিলেন। এখন পেন্টাগনের উর্ধতন সামরিক কর্মকর্তারা দু’সেনাবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করছেন। প্রস্তাবের আওতায় পেন্টাগনের তিনতারকা জেনারেলরা তাদের মস্কোর প্রতিপক্ষের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য অভিযান নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করবেন। পেন্টাগনের চেষ্টার পেছনে এ বিশ্বাস কাজ করছে যে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই অঞ্চলে মস্কোর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চাইতে পারেন। উর্ধতন সামরিক কর্মকর্তারা এ কথা বলেন। এখন অবধি যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই অন্যতম গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেপ্টেম্বরে এক আমেরিকার বিমান সিরিয়ার দেইর এজুরে ইসলামিক স্টেট জঙ্গীদের ওপর বোমা হামলা চালালে তাদের স্থলে বেশকিছুসংখ্যক সিরীয় সরকারী সৈন্য নিহত হয়।
×