ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দখলমুক্তের পরও ঢামেকের সামনে অবৈধ স্থাপনা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১০ জানুয়ারি ২০১৭

দখলমুক্তের পরও ঢামেকের সামনে অবৈধ স্থাপনা

জান্নাতুল মাওয়া সুইটি ॥ ছোট একটি খাবারের দোকান। দোকানে বসে খাবার খাচ্ছেন লোকজন। দোকানের ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে সড়কের ওপর। এ রকম পাঁচটি খাবারের হোটেল অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরী বিভাগের সামনের সড়ক ও ফুটপাথে। পাশে তো ছোটখাটো চায়ের দোকান, ফলের দোকান আছেই। দখলমুক্ত ঘোষণা করার পর আবারও অর্ধশতাধিক অবৈধ দোকানপাট বসানো হয়েছে ঢামেকের সামনের ফুটপাথে। এতে রোগী, পথচারী ও যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এই দখলের সঙ্গে হাসপাতালের কিছু কর্মচারী, আনসার ও পুলিশের সদস্যরা জড়িত। প্রতিটি দোকান থেকে দিনে নির্দিষ্ট পরিমাণে চাঁদা আদায় করছেন তারা। গত ১৫ অক্টোবর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে এ্যাম্বুলেন্স চাপায় দুই নারী, এক শিশুসহ পাঁচজন নিহত হন। এর পরদিন পথচারী ও রোগীদের চলাচলের সুবিধার্থে এই এলাকার ফুটপাথ ও সড়ক থেকে শতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এর আগে গত বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট চারবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল (ডিএসসিসি)। ওই সময় দোকানিদের মালামালও জব্দ করা হয়। কিন্তু পরদিন আবার দোকান নিয়ে বসে যান দোকানিরা। বলতে গেলে, সকালে উচ্ছেদ আর বিকেলেই দখল হয়ে যায় এই ফুটপাথটি।সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনের দক্ষিণ পাশে রাস্তা ও ফুটপাথ দখল করে রয়েছে প্রায় ২৫টি অস্থায়ী দোকান। এর মধ্যে ১০টি ফলের, আটটি প্লাস্টিকেরসহ বিভিন্ন দোকানপাট রয়েছে। বিপরীত পাশের ফুটপাথে রয়েছে চারটি ভাতের হোটেল, ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান ১০টি। অন্যদিকে ঢামেকের বহির্বিভাগের গেটের সামনে চালু হয়েছে ২৭টি দোকান। ঢাকা মেডিক্যালের সামনের ফুটপাতের এক ফল ব্যবসায়ী জনকণ্ঠকে বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে এই এলাকায় ব্যবসা করেন তিনি। আবুল হাশেম নামের এক ব্যক্তি ফুটপাথ ও সড়কের অবৈধ দোকান নিয়ন্ত্রণ করেন। তাকে দোকান বাবদ দিনে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এই টাকা হাসপাতালের কর্মচারী, আনসার ও পুলিশ সদস্যের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা হয়। এছাড়া দোকান বসানোর সময় তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়। ওই দিন অনেক খুঁজেও আবুল হাশেমকে পাওয়া যায়নি। ফুটপাথ সংলগ্ন এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, কয়েক মাস পরপরই এই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। পরে নেতা ও পুলিশের সহযোগিতায় তারা আবার দোকান বসান। তার এই ব্যবসায় দিনে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে জরুরী বিভাগের সামনের সড়ক দিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন ফারুক ভুঁইয়া।
×