ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের মেয়াদ সুষ্ঠুভাবে শুরু হওয়ায় আশা ভঙ্গের শঙ্কা

রাশিয়া প্রশ্নে ॥ কংগ্রেসে গভীর বিভেদ

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১০ জানুয়ারি ২০১৭

রাশিয়া প্রশ্নে ॥ কংগ্রেসে গভীর বিভেদ

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যদের উদ্বেগ ক্রমশ গভীরতর হচ্ছে। গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি (জিওপি) নামেও পরিচিত ওই দলটির চরম মতাবলম্বীরা বলছেন, আগামী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রেক্স টিলারসনকে অনুমোদন করার বিষয়ে তাদের মনে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। দিনকয়েক পরেই তার অনুমোদন প্রশ্নে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। দু’বড় রিপাবলিকান নেতা সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ও সিনেটর জন ম্যাককেইন রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের আইন পাস করানোর চেষ্টা করছেন বলে রবিবার এনবিসির সঙ্গে এক যৌথ সাক্ষাতকারে জানান। এ উদ্যোগ ক্রেমলিনের সঙ্গে সমঝোতা স্থাপনের বিষয়ে ট্রাম্পের অভিলাষের সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিকই হবে। এরূপ কোন বিলের প্রতি বড় ধরনের সমর্থন ট্রাম্পকে এ বিলের সঙ্গে একমত হতে চাপ দেবে বা এর বিরুদ্ধে ভেটো দিয়ে মার্কিন-রুশ সম্পর্ক প্রসঙ্গে তার দল থেকে দৃশ্যত তার আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকির সৃষ্টি করবে। শুক্রবার প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট টিলারসনের মনোনয়নের অনুমোদন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ সিনেটে শুনানি ও ভোটাভুটিকে কেন্দ্র উত্তেজনা বাড়িয়ে দেবে বলে মনে হয়। ওই রিপোর্টে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার দায়ে ক্রেমলিনকে দোষারোপ করা হয়। আরও বড় কথা, রাশিয়া নিয়ে মতপার্থক্যের ফলে নতুন প্রেসিডেন্টের মেয়াদ সুষ্ঠুভাবে শুরু হওয়ার বিষয়ে রিপাবলিকান নেতাদের আশা ভঙ্গ হওয়ার হুমকি দেখা দিয়েছে। এ সময়ে ট্রাম্পের কেবিনেট দ্রুত অনুমোদিত হবে এবং এ্যাফোর্ভেবল কেয়ার এ্যাক্ট রদ করার বিল নিয়ে দ্রুত ভোট হবে বলে রিপাবলিকানরা আশা করছেন। ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা রাশিয়ার ভূমিকাকে খাটো করে দেখিয়ে হ্যাকিং নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করেনি বলে জোর দিয়ে জানাতে চেয়েছেন। কিন্তু হ্যাকিং নিয়ে অব্যাহত মার্কিন তদন্ত ইস্যুটিকে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকাকালেও জিইয়ে রাখবে। ট্রাম্প, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও কংগ্রেসের কোন কোন সদস্যের কাছে দেয়া রিপোর্টের গোপনীয় অংশে হ্যাকিং নিয়ে মার্কিন তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়, যদিও তদন্তের সীমা অস্পষ্ট রয়ে গেছে। রিপোর্টের সঙ্গে পরিচিত এক ব্যক্তি এ কথা জানান। ক্যাপিটাল হিলে ডেমোক্র্যাটরাও সাইবার হামলার বিষয়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে তদন্ত করা হোক বলে দাবি জানাবেন বলে মনে হয়। সিনেটের গোয়েন্দা কমিটি ও সশস্ত্র বাহিনী কমিটিগুলোও ওই বিষয়ে তদন্ত করছে। চলতি সপ্তাহে টিলারসনের বিষয়ে শুনানির সময় রািশয়ার দিকে কিছুটা দৃষ্টিপাত করা হবে। গ্রাহাম ও ম্যাককেইন উভয়েই রবিবার বলেন, এক্সমবিল কর্পোরেশনের দীর্ঘদিনের প্রধান নির্বাহী টিলারসনের সঙ্গে তাদের ভাষায় ইতিবাচক বৈঠকের পরও তার সম্পর্কে তাদের মনে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে ব্যাপক ক্ষেত্রে কাজ করেছিলেন। সিনেটররা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, তাদের যদি টিলারসনের নাম অনুমোদন করতে হয়, তবে রিপোর্টটি প্রকাশিত হওয়ার কারণে আগামী প্রশাসনকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সম্পর্কে নিজস্ব অবস্থান বদলাতে হবে। রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ইলেক্ট্রনিক ব্যালট বাক্সে হস্তক্ষেপ করেছিল বলে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে কোন প্রমাণ দেখানো হয়নি। রাশিয়ার কথিত চেষ্টা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করেছিল কি-না সে বিষয়ে রিপোর্টে কোন মূল্যায়ন ব্যক্ত করা হয়নি। এটি রিপোর্টের এখতিয়ারবহির্ভূত বলে জানানো হয়। গ্রাহাম ও ম্যাককেইন মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই এক হুমকি ট্রাম্পের কাছ থেকে স্বীকৃতি চান। কিন্তু এর ফলে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির সাইবার হামলার বিরুদ্ধে দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই হ্যাকিংয়ের জন্য দায়ী করেন। তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার হ্যাকিং নিয়ে হৈচৈ করা ডেমোক্র্যাটদের পরাজয়জনিত দুঃখবোধেরই ফল এবং এটি তার জয়ের বৈধতাকে ক্ষুণœ করার লক্ষ্যে চালানো রাজনৈতিক প্রচারণারই অংশ।
×