ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাকিল আহমেদ

ক্যান্সার প্রতিরোধক পেয়ারা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৯ জানুয়ারি ২০১৭

ক্যান্সার প্রতিরোধক  পেয়ারা

অতি পুষ্টিকর ফল পেয়ারা। ভিটামিন সি, ক্যারোটিন য়েডস, ফোলেট, পটাশিয়াম, আঁশ এবং ক্যালসিয়াম উপাদানে ভরপুর এই দেশীয় ফল পেয়ারা। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় কমলার চেয়ে চারগুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। পেয়ারা পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং সংক্রমণ, প্রদাহ, ব্যথা জ্বর, বহুমূত্র, আমাশয় প্রভৃতি রোগে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পেয়ারার উপকারিতা পেয়ারাতে আছে অতিমাত্রায় ভিটামিন সি এবং আয়রন। এই ভিটামিন সি এবং আয়রন শরীরে ঠা া জমতে দেয় না। তাই পেয়ারা খেলে খুব সহজেই ঠা া কাশির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। পেয়ারা জ্বর সারাতে খুব ভাল কাজ করে। -পেয়ারাতে আছে ভিটামিন বি৩ ও বি৬ যা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল করে। মস্তিষ্ক ফ্রেস রাখে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। -পেয়ারাতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও বি। যা আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। পেয়ারাতে আছে উপকারী উপাদান ভিটামিন এ। ভিটামিন এ চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে কাজ করে। -ত্বকে নেচারাল ক্রিম ও টোনার জেল হিসেবে কাজ করে। পেয়ারা খেলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। ত্বককে যে কোন সমস্যা থেকে রক্ষা করে। কুচকে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে ত্বক করে টানটান। পেয়ারায় আছে ভিটামিন এ, বি, সি ও পটাশিয়াম যা ত্বকে এন্টি-অক্সাইড বৃদ্ধি করে। এন্টি-অক্সাইড ত্বক উজ্জ্বল করে ও বয়সের ছাপ দূর করে। পেয়ারা রক্ত থেকে কলেস্ট্রোল দূর করে। অতিরিক্ত কলেস্ট্রোল দূর করার মাধ্যমে উচ্চরক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। পেয়ারায় বিদ্যমান হাই-ফাইবার রক্তের চিনি কমানোর মাধ্যমেও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। -পেয়ারার সব থেকে অবাক করা ও কার্যকরী উপকারিতা হচ্ছে এটি ক্যান্সারের জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিক পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা পেয়ারা খায় তাদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ ভাগ কম থাকে। বিশেষ করে নারীদের স্তনের ক্যান্সার প্রতিরোধে পেয়ারা অনেক কার্যকর। -ব্লড সুগার কমানোর দারুণ ক্ষমতা আছে পেয়ারাতে। যারা পেয়ারা খায় তাদের ডায়াবেটিকস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। আবার ডায়াবেটিকস রোগে আক্রান্তরা রোজ একটি করে পেয়ারা খেলে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। -পেট ভাল রাখতে পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে। পেয়ারায় রয়েছে এ্যাস্ট্রিনজেন্ট ও এ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টিস। যা ডায়রিয়াতে বেশ ভাল কাজ দেয়। -থাইরয়েডের জন্য উপকারী কপারের খুব ভাল উৎস হচ্ছে পেয়ারা। কপার আমাদের দেহের খুব গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা দেহের হরমোন ও অর্গান সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর কপার দেহের হরমোন উৎপাদন ও শোষণকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য এবং এর পটাশিয়ামও শক্তিশালী প্রদাহ নিরামক গুণাগুণ থাইরয়েডের কাজকে উন্নত করতে সহায়তা করে। তাই থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা দূর করার জন্য পেয়ারা ও পেয়ারা পাতাকে খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে নিতে হবে। এছাড়াও পেয়ারা দেহের শক্তি বৃদ্ধি ও ওজন কমানোর কাজকে সহজ করে দেয়। -পেয়ারার থাকা ভিটামিন সি চুল পড়া রোধে বিশেষভাবে কার্যকরী। এছাড়া প্রতিদিন মাত্র ১টি পেয়ারা খেলে চুল গজানোতে সহায়তা করে। -একটি পেয়ারার প্রায় ৮১% পানি। তাই পেয়ারা খেলে দেহ পানিশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা পায় এবং ত্বক সুস্থ থাকে। পেয়ারার ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন টিস্যুর সুরক্ষাতেও কাজ করে। -পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা অনেক কঠিন পরিশ্রমের পরও আমাদের মাংসপেশি শিথিল করতে সহায়তা করে। -পেয়ারা এবং গাজর দুটিতেই সমপরিমাণ রেটিনল বা ভিটামিন এ রয়েছে। যদি গাজর খেতে ভাল না লাগে তাহলে ১টি পেয়ারা খেয়েও দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে পারেন। -পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এতে হজমের সমস্যা সমাধান হয়। এছাড়াও পেয়ারা অনেক ভাল একটি স্ন্যাকস। অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে ফাইবার সমৃদ্ধ পেয়ারা খান। অনেকটা সময় ক্ষুধার উদ্রেক হবে না।
×