ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জোকোভিচের শুরু শিরোপা জিতেই

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৯ জানুয়ারি ২০১৭

জোকোভিচের শুরু শিরোপা জিতেই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নাদাল-ফেদেরার এখন আর সেরা ফর্মে নেই। যে কারণে তাদের সেই রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের দৃশ্যগুলো দেখার সুযোগ পান না ভক্ত-অনুরাগীরা। সাবেক দুই শীর্ষ তারকা নিজেদের হারিয়ে খোঁজার সময় টেনিস বিশ্বের বড় তারকা হয়ে গেছেন মারে-জোকোভিচ। গত কয়েক মৌসুমে টেনিস কোর্টে রাজত্ব করছেন এই দুই তারকাই। শনিবারও তারা প্রায় তিন ঘণ্টার এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ উপহার দিলেন টেনিস বিশ্বকে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটতে থাকা এ্যান্ডি মারেকে থামিয়ে দিলেন নোভাক জোকোভিচ। কাতার ওপেনের ফাইনালে স্যার এ্যান্ডি মারেকে হারিয়ে নতুন মৌসুমের প্রথম শিরোপা জিতলেন জোকোভিচ। সেইসঙ্গে টানা ২৮ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডও ভেঙ্গে গেল মারের। শিরোপা জয়ের কঠিন লড়াইয়ে এদিন সার্বিয়ান তারকা নোভাক জোকোভিচ ৬-৩, ৫-৭ এবং ৬-৪ সেটে হারান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তারকা মারেকে। কাতার ওপেনের ফাইনালটি ছিল বর্তমান বিশ্ব টেনিসের এই দুই তারকার ৩৬তম মুখোমুখি লড়াই। যেখানে শেষের হাসি ফোটে জোকোভিচের মুখেই। স্কটিশ তারকার বিপক্ষে জোকোভিচের এটা ২৫তম জয়। এমন প্রতিপক্ষকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম শিরোপা নিজের শোকেসে তুলে দারুণ রোমাঞ্চিত জোকোভিচ। ম্যাচ শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সার্বিয়ান তারকা বলেন, ‘বছরটা স্বপ্নের মতোই শুরু। এখানে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে জেতাটা আমার কাছে অবশ্যই স্বপ্নের মতো।’ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আগে এই টুর্নামেন্ট তাকে দারুণভাবেই অনুপ্রেরণা দিবে বলে মনে করেন জোকোভিচ। ম্যাচ শেষে বর্তমান টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নাম্বারে থাকা এই টেনিস তারকা প্রতিবেদকদের করা প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আপনারা যদি জিজ্ঞেস করেন তাহলে বলব এটাই বছর শুরুর সবচেয়ে ভাল দৃশ্য। এই টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচ খেলা তারপর বিশ্বের এক নাম্বার তারকার বিপক্ষে তিন ঘণ্টা লড়াই করা এবং সবচেয়ে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে ম্যারাথন ম্যাচ জেতা। অস্ট্রেলিয়ায় কয়েকদিন পরেই যা শুরু হতে যাচ্ছে তার জন্য নিঃসন্দেহেই ইতিবাচক দিক।’ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে চলছে এখন জোকোভিচের একক রাজত্ব। শেষ ছয়বারের পাঁচটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। এবারও তাই ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখিয়ে ফেললেন সাবেক নাম্বার ওয়ান এই তারকা। এদিকে জোকোভিচের বিপক্ষে দুই ঘণ্টা ৫৪ মিনিট কঠিন লড়াই করে হারটাকে কঠিন বলছেন মারে। বর্তমান বিশ্বের নাম্বার ওয়ান তারকার মতে, ‘এমন একটা হার মেনে নেয়া খুবই কঠিন। তবে এটা অনেক উচ্চ পর্যায়ের টেনিস। নতুন বছরের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন আমার চোখ আগামী কয়েক সপ্তাহ সামনের দিকে।’ কারণটা তো খুবই সুস্পষ্ট। আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। মেলবোর্নের সেই কোর্টে নামতে মুখিয়ে রয়েছেন সব টেনিস তারকাই। কিন্তু মেলবোর্নের কোর্ট যেন মারের জন্য দুর্ভাগ্য। ফাইনালে গিয়েই থেমে যেতে হয় তাকে। ২০১০-১১ সালে টানা দুইবার শিরোপা জয়ের খুব দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান তিনি। কিন্তু ফাইনালেই হেরে যান মারে। ২০১৩ সালেও একই চিত্রনাট্য। পরের বছর না পারলেও গত দুইবারই ফাইনালে উঠে হেরেছেন তিনি। অর্থাৎ গত সাত বছরের মধ্যে পাঁচবারই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনাল খেলেছেন এ্যান্ডি মারে। কিন্তু শিরোপা জয়ের ম্যাচটিতেই থেমে যেতে হয় তাকে। এই পাঁচবারের চারবারই আবার হেরেছেন জোকোভিচের কাছে। এবার অবশ্য আশাবাদী মারে। জোকোভিচের কাছে হারের পরও তিনি বলেছেন, ‘আজ রাতে এই হারের পরও আমি মনে করি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের সুযোগ রয়েছে।’ বছরের শুরুতে পুরুষ এককে কেবল ভাল করেছেন মারে-জোকোভিচই। নাদাল-ফেদেরার তো দুর্দান্ত শুরু করেও টুর্নামেন্টের মাঝপথে থেমে গেছেন। তাই অনেকেরই ধারণা পুরুষ এককে এবারও জমে যেতে পারে মারে-জোকোভিচের লড়াই।
×