ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে ৯ দফা প্রস্তাব গণফোরামের

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৯ জানুয়ারি ২০১৭

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে ৯ দফা প্রস্তাব গণফোরামের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন কমিশন আইনসহ ৯ দফা প্রস্তাব দিয়েছে গণফোরাম। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনসহ পৃথক ৮ দফা প্রস্তাব দিয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি। রবিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এসব প্রস্তাব তুলে ধরে দল দুটি। ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকের কাছে নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে বলেন, ‘আম্পায়ার যদি নিরপেক্ষ না থাকে তাহলে কি খেলা হয়? নির্বাচনকালীন সরকার ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকতে হবে। ২০০৮ সালের মতো জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা যেন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’ এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন আইনে কি কি বিধান করা প্রয়োজন সে বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলেছি। সার্চ কমিটি গঠনে আমরা কোন নাম প্রস্তাব করিনি। তবে ক্যাটাগরি বলেছি। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন ছাড়া বিগত নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়নি, তাতে কি সংবিধানের ব্যত্যয় হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজ্ঞ বলেন, ‘যদি তারা অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে থাকে তাহলে অবশ্যয় ব্যত্যয় ঘটেছে। সেটা জনগণ বিচার করুক।’ বৈঠকে গণফোরামের উত্থাপিত ৯ দফা প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছেÑ নির্বাহী বিভাগের প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন, শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতাসহ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কার্যকর ক্ষমতা সংবলিত একটি নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন, সিইসি নিয়োগে ৫ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন, নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন করা ইত্যাদি। ড. কামালের নেতৃত্বে গণফোরামের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সভাপতি পরিষদ সদস্য তোবারক হোসেন, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ ও ম শফিক উল্ল্যা, সগীর আনোয়ার, মোশতাক আহমেদ, অধ্যাপক বিলকিস বানু, মহিউদ্দিন কাদের, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, এস এম আলতাফ হোসেন, শান্তিপদ ঘোষ ও নৃপেন ঘোষ। গণতন্ত্রী পার্টির ৮ দফা ॥ নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের কাছে সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনসহ আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল গণতন্ত্রী পার্টি। রবিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলটি এই প্রস্তাব দেয়। গণতন্ত্রী পার্টির ১৮ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী। বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি আরশ আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি আইন তৈরি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি জরুরী ভিত্তিতে বা অধ্যাদেশ জারি করে এই আইন প্রণয়ন করতে পারেন। এক্ষেত্রে ১৫ দিন থেকে একমাস সময় লাগবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দ-িত বা অভিযুক্তদের যে কোন ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানান আরশ আলী। তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী পরিবারের কোন সদস্য বা স্বাধীনতাবিরোধী কোন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছে, এমন ব্যক্তিদেরও যে কোন পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণকে প্রস্তাবিত আইনে নিষিদ্ধ করতে হবে। গণতন্ত্রী পার্টির ৮ দফা প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইসি গঠনে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করতে হবে। বিকল্পে সার্চ কমিটি গঠন করতে। তবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) উল্লিখিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয় বলেও দলটির প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। গণতন্ত্রী পার্টির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সভাপতিম-লীর সদস্য ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, মাহমুদুর রহমান বাবু, ভুপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, নুরুর রহমান সেলিম, জহুরুল ইসলাম, জেড এ ওয়াহেদ, বাবুল দে, বেগম কানন আরা, শরাফত আলী হীরা, আরশাদ হারুন, কাজী রইসুল হক মাসুক ও মাহতাব উদ্দিন।
×