ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নরসিংদীর সবুজ টিলা সোনাইমুড়ির টেক হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৮ জানুয়ারি ২০১৭

নরসিংদীর সবুজ টিলা সোনাইমুড়ির টেক হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী, ৭ জানুয়ারি ॥ নরসিংদী সমতল এলাকা হলেও ঢাকা সিলেট মহাসড়ক দিয়ে সিলেট যাওয়ার সময় হাতের ডানে ও বাঁয়ে দু’দিকেই পড়বে সৌন্দর্যময় সবুজ টিলা। মনে হবে ছোট ছোট টিলা যেন আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। টিলা সমাকীর্ণ এমনই একটি জায়গা হচ্ছে সোনাইমুড়ির টেক। ঢাকা থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে শিবপুরের সোনাইমুড়ির টেক। এ অঞ্চলের মাটির রং গৈরিক। সোনাইমুড়ির টেক অঞ্চল বিপুল বনজসম্পদের ভা-ার। এখানে যারা বসবাস করে তারা সবাই কৃষিকাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এ এলাকায় পৃথক পৃথক বিচিত্র জীবনধারা ও সংস্কৃতি রয়েছে। লালমাটির এলাকাজুড়ে রয়েছে তরিতরকারির ক্ষেত ছাড়াও কাঁঠালবাগান, জলপাইবাগান, আমবাগান, জামবাগান; রয়েছে টিলার গায়ে বেড়ে ওঠা নাম না জানা অনেক বনৌষধি। ১৯৬৮ সালে শিবপুর উপজেলার বাঘাব গ্রামে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের সময় প্রায় ৬০ ফুট মাটির নিচে পাওয়া গিয়েছিল একটি ধানের ছড়ার ডাঁটা ও একটি হিজল গোটা। প্রাকৃতির এ সৌন্দর্যের জন্যই এটি ছায়াছবির শূটিংস্পট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অনেকদিন ধরে। এখানে এলে প্রায়ই দেখা যাবে কোন না কোন চিত্রপরিচালকে ছবির শূটিং নিয়ে ব্যস্ত। নায়ক-নায়িকারা ব্যস্ত ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয়ে। শুধু চিত্রকর্মীরা নয়, এখন পর্যটকরাও আসতে শুরু করেছেন। শীতকালে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস-মাইক্রোবাসে অনেকে সোনাইমুড়ি আসছে পিকনিক করতে। ইদানীং স্থানীয় অনেক শিল্পপতি পাহাড় কিনে (সরকারী বন্দোবস্ত নিয়ে) পাহাড়ের চূড়ায় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ মোটেল, পিকনিক স্পট ও বাংলো নির্মাণে ব্যস্ত রয়েছেন। অন্যদিকে এলাকার প্রভাবশালী কিছু লোক লালমাটির পাহাড় কেটে ট্রাকভর্তি করে ইটভাঁটির জন্য এবং বিভিন্ন কাজে এ মাটি বিক্রি করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। অথচ পর্যটন সংস্থা সামান্য কিছু অর্থ ব্যয় করলেই এখানে গড়ে তুলতে পারে বিউটি স্পট। আয় করতে পারে প্রচুর রাজস্ব। সোনাইমুড়ির টেকের পাশেই রয়েছে কামারটেক, সৃষ্টিগড়, ইটাখোলা, যশোর, মরজাল, জয়মঙ্গল, বাঘাব, জয়নগর ছাড়াও কুমারটেক এলাকা। কুমারটেক এলাকায় মাটির নিচু থেকে যেসব মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে (খ্রিস্টপূর্ব তিন হাজার বছর আগের), সেজন্য প-িতরা এলাকাটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থল হিসেবেও গণ্য করেন। ঢাকা থেকে সরাসরি বাস, পাইভেটকার, মাইক্রোবাস অথবা ট্রেনে চড়ে নরসিংদী হয়ে আসতে পারেন সোনাইমুড়ির টেক। এখানে এলে জেলা সদরে থাকার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল- হোটেল রিয়াজ, হোটেল আরাফাত, হোটেল নিরিবিলি, হোটেল আজিজ।
×