ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বামনডাঙ্গায় শোকসভা

এমপি লিটন হত্যার ৮ দিন পরও রহস্য উদ্ঘাটিত না হওয়ায় ক্ষোভ, অসন্তোষ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৮ জানুয়ারি ২০১৭

এমপি লিটন হত্যার ৮ দিন পরও রহস্য উদ্ঘাটিত না হওয়ায় ক্ষোভ, অসন্তোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ৭ জানুয়ারি ॥ সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার আটদিন অতিক্রান্ত হলেও হত্যার কারণ উদ্ঘাটিত হয়নি। এ নিয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসহ প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এদিকে সুন্দরগঞ্জ ও বামনডাঙ্গায় শোক র‌্যালি ও শোকসভা করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। খুনীরা ধরা না পড়ায় অনেকের মধ্যেই নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সর্বক্ষণিক একটা আতঙ্ক বিরাজ করায় ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের কথা, লিটনের মতো একজন প্রভাবশালী এমপিকে নিজবাড়িতে খুন করার পরও যদি খুনীরা ধরা না পড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি। তবে পুলিশ সূত্র থেকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকা- সম্পর্কে প্রকৃত কোন তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে না। তারা তদন্তের অজুহাতে এখনও বিষয়টি চাপা রাখছেন। এমনকি গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো সত্ত্বেও তাদের সংখ্যা এবং গ্রেফতারকৃতদের সম্পর্কেও কোন তথ্য বা তাদের নাম জানাতেও তারা গড়িমসি করছেন। তাদের এমন রহস্যজনক আচরণে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে শনিবার আরও ১২ জনকে আটক করে আদালতে পাঠানো হলেও ছয়জনকে লিটন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরা হলো জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা সোনারায় ইউনিয়নের রামভদ্র গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে হাজী ফরিদ উদ্দিন, নিজপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সামিউল হক, খামার পাঁচগাছি গ্রামের একরামুল হকের ছেলে হাদিসুর রহমান, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর হাতিবান্ধা গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে জিয়াউল হক, পূর্ব শিবরাম গ্রামের মোঃ সাবু খন্দকারের ছেলে নবীনুর রহমান ও রামভদ্র গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে হযরত আলী। এই ছয়জনের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ গ্রেফতারকৃত ওই ছয়জনের জন্য সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। তবে শুনানি না হওয়ায় তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। রবিবার রিমান্ডের শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে। এছাড়া বাকি ছয়জনকে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তারা হলো রামভদ্র কদমতলা গ্রামের মৃত মঙ্গল দেওয়ানের ছেলে ইউসুফ আলী, শান্তিরাম ইউনিয়নের খামার পাঁচগাছির মৃত রিয়াজুল ইসলামের ছেলে মাজেদুল হক প্রামাণিক, শুকুর মাহমুদের ছেলে খায়রুজ্জামান, রামভদ্র কদমতলার মজিবর রহমানের ছেলে হুমায়ুন কবির লিটন, বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান আতিক ও হরিপুর ইউনিয়নের ভেলারায় গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে আতাউর রহমান। লিটন হত্যার সন্দেহভাজন রতনের গ্রেফতার অভিযান ব্যর্থ ॥ সাদুল্যাপুরের নলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপ গ্রামের বিভিন্ন নাশকতা মামলাসহ এমপি লিটন হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী মৃত মফিজুল ইসলামের ছেলে রতনকে গ্রেফতার করতে শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আকস্মিক অভিযান চালায় র‌্যাবের একটি দল। তারা বাড়ি ঘেরাও করে রাখে কিন্তু র‌্যাব রতনকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। রতন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। সুন্দরগঞ্জ ও বামনডাঙ্গায় শোকসভা র‌্যালি ॥ এমপি লিটন হত্যার প্রতিবাদে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা এলাকায় শনিবার বিশাল শোক র‌্যালি ও শোক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই শোক র‌্যালিটি বামনডাঙ্গার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে রেলস্টেশন সংলগ্ন বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসের সামনের মাঠে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। বামনডাঙ্গার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বন্ধ রেখে মালিক-কর্মচারীরা কর্মসূচীতে অংশ নেন। অপরদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগের দোয়া মাহফিল ও কোরানখানি ॥ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের উদ্যোগে শনিবার বিকেলে এমপি লিটনের রূহের মাগফিরাত কামনা করে কোরানখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগের পৌর কার্যালয়ে আয়োজিত এই দোয়া মাহফিলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
×