ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় যাত্রা বিরতির পর আটকা পড়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফ্লাইটও

ঘন কুয়াশায় শাহজালাল বিমানবন্দরে সিডিউল বিপর্যয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৮ জানুয়ারি ২০১৭

ঘন কুয়াশায় শাহজালাল বিমানবন্দরে সিডিউল বিপর্যয়

আজাদ সুলায়মান ॥ ঘন কুয়াশার দরুন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে দেশ-বিদেশের অধিকাংশ এয়ারলাইন্সেরই ফ্লাইট কমবেশি বিলম্বের শিকার হয়েছে। এমনকি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফ্লাইটও ঢাকায় এসে আটকা পড়ে। রাতে ঢাকাতেই অবস্থান করার পর সকাল নয়টার দিকে তাকে বহনকারী ফ্লাইট আকাশে ওড়ে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কয়েকটি ফ্লাইটের সিডিউল পরিবর্তন করতে হয়েছে। ভোরে ঢাকায় নামতে না পেরে দিল্লী যেতে হয়েছে সৌদিয়ার ফ্লাইট। সিডিউল বিলম্বের শিকার যাত্রীরা বিমানবন্দরে দীর্ঘক্ষণ আটকা পড়েন। ঘন কুয়াশা যদি আজও অব্যাহত থাকে- তাহলে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মুসাদ্দিক আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেছেন, শুক্রবার রাত দুটোর পর থেকে ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু এক ঘণ্টা আগেই ঘন কুয়াশার দরুন ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারেনি। এ কারণে বিমানের প্রায় সব কটা ফ্লাইটের সিডিউলে হেরফের ঘটেছে। যার প্রভাব পড়বে কমপক্ষে দু থেকে তিনদিন। আর যদি প্রতি রাতেই ঘন কুয়াশা পড়ে- তাহলে সঙ্কট জটিলতর হবার আশঙ্কা রয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন ইকবাল করিম জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে ভিজিবিলিটি ছিল জিরো। এ রকম অবস্থায় ফ্লাইট ওঠানামা করার কোন উপায় নেই। এমিরেটসের ফ্লাইট যখন রাত পৌনে একটায় ট্যাক্সিওয়ে থেকে টেক অফের জন্য রানওয়ের দিকে ছুটছিল, তখন হঠাৎ ২০০ মিটারের ভিজিবিলিটি জিরোতে নেমে আসে। উপায় না দেখে অনেক কষ্টে সেই ফ্লাইট অন্য একটি লাইটার কারের সহায়তায় ফিরিয়ে আনা হয়। ওই ফ্লাইট শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকা ছেড়েছে। জানা যায়, রাতে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে জ্বালানি নেয়ার জন্য এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতির সিডিউল ছিল চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী একটি ফ্লাইটের। কিন্তু ঢাকায় অবতরণের পর ওই ফ্লাইটও ঘন কুয়াশার শিকার হওয়ায় অকাশে উড়তে পারেনি। বাধ্য হয়েই তাকে বিমানবন্দরে আট ঘণ্টা কাটাতে হয়েছে। সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে তার ফ্লাইট বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। বিমান জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে বিমানের কমপক্ষে ৭টি ফ্লাইটের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এর মধ্যে লন্ডনের ফ্লাইট সকাল দশটার পরিবর্তে দুপুর দেড়টায় ঢাকা ছেড়েছে। সৌদি আরবের একটা ফ্লাইট শনিবারের পরিবর্তে রবিবার দুপুুরে রিসিডিউল করা হয়েছে। সকালের সিডিউলে থাকা কলকাতা, সিঙ্গাপুর ব্যাঙ্ককসহ কক্সবাজারের ফ্লাইট দু’ঘণ্টা বিলম্বে ঢাকা ছেড়েছে। শুধু বিমান নয়, বিলম্ব হয়েছে অন্যান্য বেসরকারী এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটও। তবে যাত্রীদের বিমানবন্দরে বেশ খাতির যতœ করা হয়েছে। কোন ধরনের সেবার ঘাটতি ছিল না। গ্রপ ক্যাপ্টেন ইকবাল করিম জনকণ্ঠকে বলেন, শীতকালীন আবহাওয়ার এ রকম বিপর্যয়ের দরুন ফ্লাইট সিডিউলে পরিবর্তন ঘটাই স্বাভাবিক। যখন ঘন কুয়াশা পড়ে, তাতে দুনিয়াব্যাপী ফ্লাইট সিডিউলে বিপর্যয় ঘটে। এমনিতে শীতকালে শাহজালাল এয়ারপোর্টের সব সিডিউল আগ-পিছ করা হয়েছে। তার মাঝে শুক্রবার রাতের ঘন কুয়াশার কারণে প্রথম ধাক্কা লাগে এমিরেটসের ফ্লাইটে। পরে ভোরে সৌদিয়ার একটি ফ্লাইট ঢাকায় নামতে না পেরে চলে যায় দিল্লীতে। দুপুরে সেটা ফিরে এসে বিকেল তিনটায় যাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হয়। তবে এত সময় এয়ারপোর্টে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের তারা ঠিকমতো খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এদিকে আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে বিমানের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন চলছে শৈত্যপ্রবাহ। রাতে এ ধরনের ঘন কুয়াশার মাত্রা আগামী কদিন বিরাজ করতে পারে। সেজন্য রাত বারোটা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত ফ্লাইটের সিডিউলে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
×