ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পররাষ্ট্র দফতরে সংবাদ সম্মেলনে কেরি

ওবামা আমলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ॥ যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সামরিক সম্পর্ক

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৭ জানুয়ারি ২০১৭

ওবামা আমলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ॥ যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সামরিক সম্পর্ক

যুক্তরাষ্ট্র আটবছরের ওবামা প্রশাসনের আমলে ভারতের সঙ্গে সামরিক অংশীদারী গড়ে তুলেছে। এ প্রশাসন বিশ্বে আমেরিকার অবস্থানও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তার দায়িত্ব ত্যাগের দু’সপ্তাহ আগে একথা বলেন। কেরি বলেন, এশিয়াতে আমরা আমাদের মিত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছি, উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করছি, আঞ্চলিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সামর্থ্য বৃদ্ধি করছি, দক্ষিণ চীন সাগরে আইনের শাসন সমর্থন করছি এবং ভারতের সঙ্গে এক সামরিক কৌশলগত অংশীদারী গড়ে তুলছি, ভিয়েতনামের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করছি এবং মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি যেখানে অবাধে নির্বাচিত এক পার্লামেন্ট প্রথমবারের মতো গঠিত হয়েছে। কেরি বলেন, গত আট বছরে ওবামা প্রশাসনের গৃহীত নীতির কারণে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ২০০৯ সালে যেমন ছিল সেই তুলনায় উন্নত হয়েছে। তিনি পররাষ্ট্র দফতরের ফগি বটম হেডকোয়ার্টাসে সাংবাদিকের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। এটিই ছিল শীর্ষ আমেরিকার কূটনৈতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে এমন এক দেশ তুলে দিয়ে যাব, যার আন্তর্জাতিক অবস্থান আট বছর আগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দায়িত্ব গ্রহণের সময়ের তুলনায় অনেক উন্নত। তিনি বলেন, আমাদের ইউরোপ ও এশিয়ার বৈদেশিক জোটগুলো উদ্যমশীল ও শক্তিশালী। আমরা এশিয়াতে আমাদের কর্মকা- জোরদার করেছি, কোরিয়া ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় করেছি, কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে আমাদের ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করেছি, বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলোর কিভাবে কাজ করা উচিত, সেই সম্পর্কে এক নতুন মডেল নির্ধারণের চেষ্টায় চীনের সঙ্গে ফলপ্রসূভাবে কাজ করেছি। তিনি বলেন, আমরা ন্যাটোর সঙ্গে আমাদের মিত্রতা শক্তিশালী করেছি, যুদ্ধের সামনের কাতারের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের মৈত্রী জোরদার করেছি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের সমর্থনের মাত্রা দৃষ্টান্তবিহীন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকান ইতিহাসের যে কোন সময়ের তুলনায় আরও বেশি স্থানে আরও কার্যকরভাবে আরও গভীরভাবে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে ওবামা প্রশাসনের কৌশল ফলদায়ক হতে শুরু করেছে, কারণ সন্ত্রাসী দলটি দ্রুত এর ভূখ- হারাচ্ছে। কেরি বলেন, দায়েশের ভুয়া খিলাফত শীঘ্রই ধূলিসাৎ হতে চলেছে। এখন এর অর্থ এই নয় যে, দায়েশের সমগ্র হুমকি হঠাৎ মুছে গেছে। না, তা হয়নি। দায়েশ স্পস্টতই এ পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সঙ্গে কোনভাবে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। কাজেই হুমকি টিকে থাকবে এবং তারা খুব সম্ভবত নতুন নতুন ঘাঁটি গড়তে বা বিক্ষিপ্তভাবে হামলায় প্ররোচনা ও উৎসাহ যোগাতে চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমেরিকা ও এর কোয়ালিশন অংশীদাররা কূটনৈতিক ওসামরিক উভয় দিক দিয়ে সঠিক পথে রয়েছে। কেরি বলেন, আমাদের সেই লক্ষ্যে অবিচল থাকা উচিত। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, এ বছর ও ভবিষ্যতে দায়েশ সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হতে যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখা উচিত যে, সন্ত্রাসবাদের কারণে যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের সহায়তা ছাড়া কোন স্থানেই আমরা এসব সন্ত্রাসীকে পরাজিত করতে পারব না। আর তারা হলো ইসলামী বিশ্বেরই আমাদের বন্ধু ও অংশীদার। কেরি ইরানের পরমাণু কর্মসূচী সম্পর্কিত চুক্তিটির কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটি বিনা যুদ্ধে বড় আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধান করতে কূটনীতির শক্তিরই প্রমাণ। সিরিয়া নিয়ে ব্রিটেনকে দোষারোপ কেরির ॥ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের পরিকল্পনাকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও পার্লামেন্ট সদস্যরা বিপথে পরিচালিত করেছিলেন। কেরি বৃহস্পতিবার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে একথাও দাবি করেন। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, যদি সিরীয় শাসকগোষ্ঠী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তবে তিনি তাদের ওপর বোমাবর্ষণ করবেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ২০১৩’র আগস্ট মাসে দামেস্কের উপকণ্ঠে সারিন গ্যাস প্রয়োগ করার পর ওবামা তার ব্যক্ত প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হন। একে কেউ কেউ ওবামা শাসনের সবচেয়ে বড় কলঙ্ক বলে দেখে থাকেন। বিমান হামলার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভোটকে ওবামা ও অন্যরা প্রসঙ্গক্রমে কার্যকরণগত সম্পর্ক হিসেবেই দেখান। কিন্তু কেরি প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের সঙ্গে এক কূটনৈতিক বিত-ার মাত্র এক সপ্তাহ পর ঐ সম্পর্ককে স্পষ্ট করে দেখান। ইসরাইলের নিন্দা করে জাতিসংঘে গৃহীত এক প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে এ বিরোধ দেখা দেয়। Ñপিটিআই ও গার্ডিয়ান
×