ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাস্টারপ্ল্যানে বদলে যাবে পুরান ঢাকা

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৭ জানুয়ারি ২০১৭

মাস্টারপ্ল্যানে বদলে যাবে পুরান ঢাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নগরবাসীকে কাক্সিক্ষত সেবা দিতে গত বছরের ৬ মে নগর পিতার দায়িত্ব গ্রহণ করেন সাঈদ খোকন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পর রাজধানীর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নগর উন্নয়নের মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করেন তিনি। মাস্টার প্ল্যানের অধিকাংশ কাজ শুরু হয়েছে। মাস্টার প্ল্যানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সড়ক ও ফুটপাথ এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ফুটওভার ব্রিজের উন্নয়ন ও সংস্কার। ফুটওভার ব্রিজ সাজানো হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে, সবুজের সমারোহে। সব সড়কে চলছে এলইডি লাইট স্থাপনের কাজ। সরিয়ে ফেলা হয়েছে সব বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ড। যত্রতত্র ব্যানার-ফেস্টুন-পোস্টার স্থাপনে আনা হয়েছে বিধি-নিষেধ। উদ্ধার করা হয়েছে খেলার মাঠ ও পার্ক। এছাড়া রাস্তার পাশে শুকনা বর্জ্য ফেলার জন্য ওয়েস্টবিন বসানো হয়েছে। নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চলছে অত্যাধুনিক পাবলিক টয়লেটের নির্মাণ কাজ। এছাড়া সিঙ্গাপুর নদীর আদলে আরেক ‘হাতিরঝিল’ বুড়িগঙ্গায়, জল সবুজের ঢাকা, ৫৭টি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ক্লোজ সার্কিট (সিসি ক্যামেরা) বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া পুরান ঢাকা ‘বাংলাদেশের মালয়েশিয়া’ বানানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীর উন্নয়নের মাস্টার প্ল্যান করে ডিএসসিসি। ইতোমধ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বদলে যেতে শুরু করেছে ঢাকা। বদলে যাওয়া রাজধানী দৃশ্যমান হতে কিছু সময় লাগবে। তিনশ’ রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। পুরান ঢাকাসহ বেশকিছু এলাকার ড্রেন ও স্যুয়ারেজ লাইনের উন্নয়নের শেষ হয়েছে। বাকি এলাকার কাজ চলছে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালকে পরিচ্ছন্ন বছর ঘোষণা করে রাজধানীর বর্জ্য ফেলার জন্য ওয়েস্টবিন বসানো হয়েছে। সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন বানানো হচ্ছে। ২০১৭ সালের মধ্যে সবগুলো কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন রাস্তায় খুব একটা ময়লা আবর্জনা থাকবে না। তিনি আরও বলেন, রাস্তাঘাট নির্মাণে আধুনিকায়নের জন্য কোল্ড রিসাইক্লিং এ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট ও কোল্ড মিলিং মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পলাশী এলাকায় এ যন্ত্রের সাহায্যে সড়ক উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করা হয়। এ যন্ত্রের সাহায্যে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন কাজের খরচ ৪০ থেকে ৪৫ ভাগ কমে আসবে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ৩৭ হাজার উন্নতমানের এলইডি লাইট স্থাপনের কাজ চলছে। সাঈদ খোকন বলেন, গোলাপবাগ মাঠ এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নগরীর সবগুলো খেলার মাঠ ও পার্ক উন্নয়ন করা হবে। আর নগরীকে বাসযোগ্য করতে নগরীর ফাঁকা জায়গা ও বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মেয়র বলেন, পুরান ঢাকাকে ‘বাংলাদেশের মালয়েশিয়া’ বানাব। মালয়েশিয়ার মতো পুরান ঢাকায় এলইডি লাইট জ্বলবে। রাস্তায় কোন কিছু হারিয়ে গেলেও তা দ্রুত খুঁজে পাবেন। তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গাকে রক্ষা ও দৃষ্টিনন্দন করতে সিঙ্গাপুর নদীর আদলে সাজাতে মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকার দ্বিতীয় হাতিরঝিল গড়ে তোলা হবে বুড়িগঙ্গার পাড়ে। প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। মেয়র বলেন, রাজধানীর পরিত্যক্ত খেলার মাঠ ও পার্কগুলোকে ‘জল-সবুজে ঢাকা প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন রূপে সাজানোর জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে খেলার মাঠ ও পার্কগুলোকে জল-সবুজে সাজানো হবে। ২০১৭ সালে বাসযোগ্য নতুন শহর উপহার দেব। বদলে যাবে ঢাকা।
×