ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে মতবিনিময়ে ওবায়দুল কাদের

বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৭ জানুয়ারি ২০১৭

বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। তাই ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার নিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের কাজ হচ্ছে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়। শুক্রবার সকালে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের কর্মসূচী সফল করতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করতে ব্যর্থ হয়ে বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একই ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা যত জনপ্রিয় হচ্ছেন, তত তার শত্রু বাড়ছে, জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে। তিনি প্রচ- ঝুঁকির মধ্যে আজ দেশ চালাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজে ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র ঘটনা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা এখন পরিষ্কার। ১৯ বার তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এটা ২০তম অপচেষ্টা। নতুন বিমান, নাটবল্টু ঢিলা, এটাও আরেকটা চক্রান্ত। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যে বুলেট হত্যা করেছে, ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু সে বুলেটের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। ষড়যন্ত্রকারীদের আরও মনে রাখতে হবে, ১৯৮১ সালের শেখ হাসিনা আর ২০১৭ সালের শেখ হাসিনা এক নয়, বরং হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। তাই এসব ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে ঠেকানো যাবে না। জঙ্গীবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনভাবে মনে করার কারণ নেই যে তারা শেষ হয়ে গেছে। তারা প্রতিনিয়ত ডালপালা গজাচ্ছে। এর প্রমাণ হলি আর্টিজানের পর কল্যাণপুর ও আশকোনার ঘটনা। সুতরাং পুলিশী এই অভিযানে সন্তুষ্ট না থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আত্মসন্তুষ্টির কোন কারণ নেই। দলীয় নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। এজন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। দলকে একটি সুশৃঙ্খল, কলহ-কোন্দলমুক্ত শক্তি হিসেবে তৈরি হতে হবে। দলের মধ্যে কেউ বিপথগামী হলে সংশোধন করা হবে। সংশোধন করা সম্ভব না হলে তাকে দল থেকে বের করে দিতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই। গুটি কয়েক নেতাকর্মীর জন্য শেখ হাসিনার উন্নয়নকে ম্লান করতে দেয়া যাবে না।’ জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের জনসভাকে ঐতিহাসিক জনসভায় রূপদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১০ জানুয়ারি ঢাকার সকল রাজপথ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঙ্গে মিশে যাবে। আর তাই এ জনসভার জন্য সাধারণ মানুষের যাতে কোন দুর্ভোগ না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই জরুরী। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জনগণের জন্য রাজনীতি করি। আর জনসভার জন্য জনগণ দুর্ভোগ পোহালে দলের ইমেজের জন্য তা ইতিবাচক হবে না। তাই রাজপথগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক রাখা দরকার যারা জনসভায় আসা মিছিলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে রাস্তার একপাশ দিয়ে নিয়ে আসবে। এতে যান চলাচলে কোন বিঘœ ঘটবে না, জনগণের দুর্ভোগ কম হবে। এ সময় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার জন্য সৃষ্ট যানজটের দুর্ভোগ পোহানোর জন্য রাজধানীবাসীর জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি ১০ জানুয়ারির জনসভাকে শুধু জনসমাগমের দিক থেকে নয়, শৃঙ্খলার দিক থেকেও ঐতিহাসিক জনসভায় পরিণত করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোল্লা মোঃ আবু কাওছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, খায়রুল হাসান, প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ নাথ এমপি। সভায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও নয়াদিল্লী হয়ে দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। এর আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বিশ্বের ইতিহাসে জঘন্যতম গণহত্যা শুরু করার আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেছিল।
×