ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতা

প্রকাশিত: ০৬:২২, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

কবিতা

স্বাধীনতা গণতন্ত্র সাম্যের ইশতেহার মতিন বৈরাগী রাত্রির অন্ধকার ভেঙে আমার কাছে যারা আসে তারা আসে অনেক দূর থেকে তাদের কারও মুখে কোনো হাসি নেই, কান্না নেই, কেবল মৌনস্থির এক মুখ বেদনা রাশিরাশি তারা আমার জানালায় দাঁড়ায় নৈঃশব্দে আমি কি স্পষ্ট দেখি তাঁদের! না-কি ছায়া! না-কি এক হাওয়ার ঘূর্ণন আমার জানালায় এক অস্থিরতায় পাখি হয় পাতা হয় মায়ের মুখের মতো নাকি তাঁরা এক দৃশ্য থেকে আরেক দৃশ্যাবলী রুয়ে দিয়ে যায় বেদনাগুলো অলৌকিক আয়নায়, নাকি একটা দিনের গল্প বলে গলে যায় চুপচাপ কাচের শার্শীতে আর আমি শুনি কতোগুলো শব্দ যুক্ত হয় ভেঙে যায়- লাফিয়ে ওঠে তীব্র ঝাঁকুনিতে নির্মাণ করে ১৬ ডিসেম্বর প্রথম পরিচয় স্বাধীনতা গণতন্ত্র আর সাম্যের ইশতেহারÑ ১০.০২.১৬. তামাটে রঙের বাহু মহিবুর রহমান মিহির যুদ্ধে যাবার অস্থির ধূসর সন্ধ্যায় চাপলাস ধানের মতো তামাটে রঙের মৃগেল বাহুতে স্থিত হয়ে থাকে দুটি চোখ কুয়াশার শব্দ শুনে বেড়ে যায় রাত পাড়ার কুকুর দুটি স্তদ্ধতা ভাঙার ঘেউ ঘেউ শব্দ করা থামিয়ে দিয়েছে এই কিছুক্ষণ আগে। কলুন বিড়িটা ঠোঁটে চেপে পাড়ি দেই হেমন্তের নদী মেঘনা। ঐ যে কবরের মতন বাংকারে মিলিটারী দেখা যায়। ট্রিগারে আঙুল চলে, সশব্দ বারুদে ঝরে দুই জোড়া কাবুলী শুকর। চিক চিক জ্বলে ওঠে সহযোদ্ধা কাশেমের ফলবান চোখ আমার তৃষিত চোখে অকসমাৎ ভেসে ওঠে চাপলাস ধানের মতো তামা রঙে মিনা করা মৃগেলের মতো তোর দুটি বাহু ডোর। জল সমাচার জাহাঙ্গীর হোসেন বাদশাহ জলের গায়ে আগুন দিলে কাঁদে জলে ছায়া, জলের পাখি গল্প কুঁড়ায় বাড়িয়ে বেদম মায়া। জলের কাঁটা ধনুক হয়ে মন কোটরে বিঁধুক, জলের আলোয় ক্লান্ত আঁধার হাওয়ার চোটে নিভুক। জলের প্রেমে সাঁতরে ফেরে ঘর পালানো মাছ, জলের মতন বক্র জীবন নিষিদ্ধ এক কাঁচ। আমরা আমাদের হলাম ইকবাল পারভেজ আমাদের দেশ আমাদের হলো পাট, ধান, আমজাম, কলমি শাক আমাদের হলো বৈশাখ আমাদের হলো রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জসীমউদ্দীন আমাদের হলো আমাদের সুন্দরবন আমাদের হলো, বাঘ, হরিণ, মৌয়াল গোলপাতা আমাদের হলো আমাদের নদী আমাদের হলো, নৌকা, পরান মাঝি, বৈঠা, ইলিশ, আমাদের হলো আমাদের চলনবিল আমাদের হলো হাওড় বাঁওড়, ভাটি, শাপলা শালুক, মলা-ঢেলা, ভেলা আমাদের হলো সমুদ্র আমাদের হলো, পাহাড়, সমতল, শালবন গজারি আমাদের হলো আমাদের রাষ্ট্রপতি আমাদের হলো মন্ত্রী, আমলা, নেতা, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র শিক্ষক আমাদের হলো আমাদের জাদুঘর আমাদের হলো, সোনারগাঁও আমাদের হলো মসজিদ, মন্দির আমাদের হলো আমার সোনার বাংলা আমাদের হলো বটের ছায়া, আকাশ-বাতাস, চাঁদ, জোসনা রোদ, শীত, গ্রীষ্ম, কুয়াশা, শিশির আমাদের হলো আমাদের সেনানিবাস আমাদের হলো সেনা, নৌ, পুলিশ আমাদের হলো আমাদের রাজধানী আমাদের হলো বন্দর, ঘাট, গঞ্জ, বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের হলো আমাদের ভাষা আমাদের হলো জারি, সারি, ভাটিয়ালী, পুঁথি আমাদের হলো স্বাধীনতা তুমি এসেছো তাই কবিতা আমাদের হলো আমরা আমাদের হলাম।
×