ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইয়াসিন হাসান

খেলাধুলায় মজার শব্দ

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

খেলাধুলায় মজার শব্দ

বক্সিং ডে বক্সিং ডে, শুনে মনে হতে পারে মুষ্টিযুদ্ধের দিন! হয়ত চোখের সামনে ভাসতে পারে মোহাম্মদ আলীর ছবি। কিন্তু আসলেই কি বক্সিং ডে মানে ঘুষাঘুষি কিংবা মুষ্টিযুদ্ধের দিন? অবশ্যই না। বক্সিং ডে বলতে বোঝানো হয় বড়দিনের পরের দিনটিকে অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বরকে। খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ক্রিসমাস। এদিন ছোট-বড়, গরিব-দুঃখীদের মাঝে উপহার বিতরণ করা হয়। সামর্থ্যবানরা সব সময়ই বক্সে করে গরিবদের উপহার দিয়ে থাকেন। উপহার দেয়া হয় ২৬ ডিসেম্বরও। এদিন কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহে সরকারী ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। প্রাচীন সনাতনী রীতি অনুযায়ী গরিব লোকদের উপহার প্রদান করাই এদিনের প্রধান উপজীব্য। এ উপহারসামগ্রী ‘ক্রিস্টমাস বক্স’ বা ‘বড়দিনের বাক্স’ নামে পরিচিত। সেখান থেকে ২৬ ডিসেম্বরকে বলা হয় ‘বক্সিং ডে’। অন্য এক অর্থ থেকে জানা যায় এদিন সবাই তাদের উপহার সামগ্রীর বক্স খোলেন। সে কারণেও নাকি এটাকে বক্সিং ডে বলা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে বক্সিং ডে’র সঙ্গে ক্রীড়াঙ্গন যুক্ত হলো কীভাবে? ইতিহাসের পাতা উল্টে জানা যায়, আদিকাল থেকেই ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে ক্রিসমাসের ছুটিতে দর্শকদের আনন্দ দিতে আয়োজন করা হয় ফুটবল ও রাগবির মতো জনপ্রিয় খেলাগুলো। বিশেষ করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ২০টি দল ২৬ ডিসেম্বর মাঠে নামে বাড়তি আনন্দ দিতে। সত্তর দশক থেকেই এর প্রচলন। ক্রিকেটের সঙ্গে বক্সিং ডের সম্পর্ক শুরু হয় ১৯৫০ সালে। পঞ্চাশের দশকের দিকে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া দুই দল ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস শেফিল্ড শিল্ড টুর্মামেন্টে অংশ নেয়। বড়দিনের উৎসবের দিন ম্যাচ থাকায় দুই দলের খেলোয়াড়রা তাদের পরিবারের সঙ্গে বড়দিন উদযাপন করতে পারেনি। দুই দলের ক্রিকেটাররা ম্যাচে অংশ নিয়ে খুব বিরক্ত প্রকাশ করেছিল। এরপর থেকেই এর নাম দেয়া হয় বক্সিং ডে টেস্ট। ১৯৫০-৫১ এ্যাশেজ সিরিজ খেলা হতো ২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ম্যাচের তৃতীয় দিনকে বক্সিং ডে নামকরণ করা হয়। ডাক ও গোল্ডেন ডাক প্রথম বলে আউট কোন ব্যাটসম্যান! টিভির পর্দায় প্রায়ই দেখা যায় হলুদ রঙের হাঁস হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। কমেন্ট্রি বক্সে বসে ধারাভাষ্যকারের বলত, ‘হি হ্যাজ গট আ ডাক।’ ‘ডাক’ শব্দটি কি? কোথা থেকে এল এ শব্দটি? শূন্য রানে আউটকে ক্রিকেটীয় ভাষায় বলা হয় ‘ডাক’। যদি প্রথম বলেই ব্যাটসম্যানরা আউট হয়ে যায়, তখন বলা হয় ‘গোল্ডেন ডাক’। ১৮৬৬ সালের ১৬ জুলাই ব্যাটিংয়ে নেমে কোন এক ম্যাচে প্রিন্স অব ওয়েলস শূন্য রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে আসেন। পরবর্তী দিনে ব্রিটিশ একটি পত্রিকা শিরোনাম করেছিল এভাবে, ‘প্রিন্স রয়্যাল রিটায়ার্ড টু দ্য রয়্যাল প্যাভিলিয়ন অন আ ডাকস এগ।’ অর্থাৎ হাঁসের ডিম নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে এসেছেন প্রিন্স রয়্যাল। সেবার প্রথম ‘ডাক’ শব্দটি ক্রিকেটের অভিধানে আসে। পরবর্তী সময়ে এর শাখা-প্রশাখা বেড়েছে। ব্যাটসম্যান প্রথম বলে আউট হলে তখন বলা হয় ‘গোল্ডেন ডাক’। দ্বিতীয় বলে আউট হলে বলা হয় ‘সিলভার ডাক।’ তৃতীয় বলে আউট হলে ‘ব্রোঞ্জ ডাক’। কোন বল না খেলে যদি রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে আসেন, তখন বলা হয় ‘ডায়মন্ড ডাক’। হ্যাটট্রিক হ্যাটট্রিক শব্দটি ক্রীড়াঙ্গনে বহুল ব্যবহৃত শব্দ। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, রাগবিসহ অধিকাংশ স্পোর্টসে হ্যাটট্রিক শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ক্রিকেটে টানা তিন বলে তিন উইকেট নিলে হ্যাটট্রিক শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ফুটবলে এক ম্যাচে কোন ফুটবলার তিন গোল করলে বলা হয়, অমুক খেলোয়াড়টি হ্যাটট্রিক করেছেন। হকিতেও টানা গোল করলে হ্যাটট্রিক হয়। ‘লাভ’ ‘লাভ’, শব্দটি ইংরেজী। বাংলায় করলে এর অর্থ দাঁড়ায় ভালবাসা। ভালবাসার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই, নেই কোন সংজ্ঞাও। রোমান্টিক কবি ভালবাসাকে ১০০ তে ১০০ দেবেন। আবার বিরহের কবি ভালবাসার মার্ক দেবেন জিরো। টেনিস তাহলে কি প্রেমহীন মানুষদের খেলা? না হলে টেনিসে ‘লাভ’র স্কোর শূন্য হয় কী ভাবে? ক্রিকেটে যেমন ‘ডাক’ মানে শূন্য। টেনিসে ‘লাভ’ মানে শূন্য। ম্যাচের শুরুতে দুই দলের স্কোর যখন ০-০ থাকে, তখন আম্পায়ার ম্যাচের ফলাফলকে ‘লাভ’ বলে সম্বোধন করেন। এক পক্ষ ১ পয়েন্ট পেলে স্কোর হয় ১৫, ২ পয়েন্ট পেলে স্কোর ৩০, ৩ পয়েন্ট পেলে স্কোর ৪০ এ পৌঁছায়। পরবর্তী পয়েন্ট পেলেই সেট নির্ধারণ হয়। প্রকারভেদে টেনিসের বিজয়ী নির্ধারণ হয় বিভিন্নভাবে। মেয়েদের সিঙ্গেলে তিন সেটের দুটি জিতলে ম্যাচ নিশ্চিত। ছেলেদের পাঁচটির মধ্যে বিজয়ীকে তিনটি সেট জিততে হয়। বার্ডি ও বগি বার্ডি ও বগি দুটো শব্দটি ব্যবহার করা হয় গলফ খেলায়। পারের চেয়ে এক স্ট্রোক কম খেলাকে বলা হয় বার্ডি। অন্যদিকে পারের চেয়ে এক স্ট্রোক বেশি খেলাকে বলা হয় বগি। ফুটবল যেমন গোলের খেলা, ক্রিকেট যেমন রান ও উইকেটের খেলা, গলফেও তেমন জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় কত কম শট খেলে সবগুলো গর্তে বল ফেলতে পারে। গলফ ১৮ গর্তের খেলা। সবকটি গর্ত সম্পন্ন করতে নেয়া হয় স্ট্রোক। ১৮ গর্তের জন্য সর্বমোট স্ট্রোক সংখ্যা ৭২ অথবা ৭১। এ স্ট্রোকের ভিত্তিতেই বিজয়ী নির্ধারিত হয়। ১৮ গর্তের মধ্যে দশটাই থাকে ৪ শটের গর্ত, চারটা থাকে ৩ শটের গর্ত আর বাকি চারটা থাকে ৫ শটের গর্তের। পারের থেকে এক স্ট্রোক কম খেলার নাম বার্ডি। দুই স্ট্রোক কম খেলাকে ইগল, তিন স্ট্রোক কম খেলাকে ডাবল ঈগল ও চার স্ট্রোক কম খেলাকে বলা হয় কনডোর। কনডোর অর্থ শকুন। গলফে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এর অর্থ, দৃষ্টি শকুনের মতো। অন্যদিকে পারের থেকে বেশি শটগুলোকে বগি, ডাবল বগি ও ট্রিপল বগি বলা হয়। লোনা কাবাডিতে যেই দল বেশি পয়েন্ট পাবে সেই দল জয়ী হবে এটা প্রায় সবারই জানা। কাবাডিতে মজার একটি শব্দ ব্যবহার হয় ‘লোনা’। এর আক্ষরিক কোন অর্থ নেই তবে ব্যবহারিক অর্থই বেশি। খেলোয়াড়ের শরীরের যে কোন অংশ বাউন্ডারির বাইরের ভূমি স্পর্শ করে তাহলে সে আউট হবে। এভাবে একটি দলের সবাই আউট হলে বিপক্ষ দল একটি ‘লোনা’ পয়েন্ট পাবে। এ ‘লোনা’ পয়েন্টের অর্থ অনেকেই অতিরিক্ত পয়েন্ট বলে থাকেন। ব্যবহারিক দিক থেকে এটি অতিরিক্ত পয়েন্টই। যদি কোন দল বিপক্ষ দলের সব খেলোয়াড়কে আউট করে তাহলে অতিরিক্ত ২ পয়েন্ট তাদের স্কোরবোর্ডে যুক্ত হয়। ‘লোনা’ হওয়ার পর খেলোয়াড়দের ১০ সেকেন্ডের বিপক্ষে মাঠে নামতে হয়। যে খেলোয়াড় সবার আগে আউট হবে সে খেলোয়াড় সবার আগে মাঠে প্রবেশ করবে। ‘ডাকনাম’ টাইগার (বাংলাদেশ ক্রিকেট দল) ॥ প্রতিটি দেশের ক্রিকেটে ওই দেশের ঐতিহ্যবাহী যে কোন একটি প্রাণীর নাম উল্লেখ থাকে। যা ওই দেশটির ক্রিকেটের ক্ষিপ্রতা, স্মারক ও ঐতিহ্য বহন করে। বাংলাদেশ দলকে ‘টাইগার’ হিসেবে সম্বোধন করার পেছনে এটাই বড় একটি কারণ। আমাদের জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সঙ্গে তুলনা করেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে টাইগার ডাকা হয়। ‘ব’-তে বাংলাদেশ, ‘ব’-তে বাঘ। ২০০০ সালে অভিষেক টেস্টকে কেন্দ্র করে প্রথম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের লোগো তৈরি করা হয়। লোগোটি তৈরি করেন প্রয়াত চিত্রশিল্পী আহমেদ রেজা। প্রোটিয়া (দক্ষিণ আফ্রিকা) ॥ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের ডাকা হয় প্রোটিয়া নামে। প্রোটিয়া একটি ফুলের নাম। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় ফুলের নাম প্রোটিয়া। এটি বৃহত্তর কেপ ফ্লোরাল অঞ্চলের বিশেষ প্রজাতির একটি ফুল। কেপ ফ্লোরাল অঞ্চল একটি বৃহৎ জীববৈচিত্র্য হটস্পট এবং ইউনেসকো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডের লোগোতে আছে এই ফুল। এ কারণে ক্রিকেট দলকে প্রোটিয়া বলা হয়। ব্ল্যাক ক্যাপস ও কিউই (নিউজিল্যান্ড) ॥ ১৯৯৮ সালের জানুয়ারি থেকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল ব্ল্যাক ক্যাপস নামে পরিচিত। ক্লিয়ার কমিউনিকেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান সে সময় নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের স্পন্সর হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি ক্রিকেট দলের জন্য ছোট্ট নাম খুঁজছিল। একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল তারা। পরবর্তী সময়ে অফিসিয়ালি দলটির নাম ব্ল্যাক-ক্যাপস রাখা হয়। এ ছাড়া দেশটির ফুটবল দলকে বলা হয় অলওয়াইটস। নিউজিল্যান্ডের প্রতিটি নাগরিককে বলা হয় কিউই। কিউই একটি পাখির নাম, যা শুধু নিউজিল্যান্ডেই পাওয়া যায়। বিশ্বের অন্য কোন দেশে এ পাখিটি দেখা যায়নি। দুর্লভ পাখিটির নামানুসারে নিউজিল্যান্ডের নাগরিকরা কিউই নামে পরিচিত। সেলেকাও (ব্রাজিল) ॥ ব্রাজিল ফুটবল দলের ফুটবলারদের ব্যবহারিক নাম ‘সেলেকাও’। এটা কোন ডাক নাম নয়। সেলেকাও পর্তুগিজ শব্দ। এর অর্থ জাতীয় দল। অর্থাৎ যেই খেলোয়াড়টি জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করছে তাকে সেলেকাও ডাকা হয়। তবে ব্রাজিল ফুটবল দলের ডাক নাম আছে। সেটা হলো ‘এসক্রিট ক্যানারিনহো।’ এসক্রিট ঘোড়ার একটি প্রজাতি, যা শুধু দৌড়ে জিততে পছন্দ করে। ক্যানারিনহো শব্দের অর্থ শিরোপা জয়ী। দুইয়ে মিলে অর্থ দাঁড়ায়, দৌড়ে শিরোপা জিততে পছন্দ করে বা শিরোপা জিতেছে এমন কেউ। এ জন্য ব্রাজিল দলকে ‘এসক্রিট ক্যানারিনহো’ বলা হয়। কাতালান (বার্সেলোনা) ॥ বার্সেলোনার ফুটবলারদের কাতালান বলা হয়। কাতালান মূলত স্পেনের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঙ্গরাজ্য। রাজধানী বার্সেলোনাসহ কাতালানের অন্য তিনটি শহর হলো গিরোনা, লেইদা ও তারাগোনা। বার্সেলোনা শহরের স্থানীয় অধিবাসীদের কাতালান বলা হয়। বার্সার ডাক নাম ব্লুরানা অর্থাৎ নীল আর মেরুন রঙের সমষ্টি। বার্সেলোনার সমর্থকদের ক্লুস বলা হয়। কাতালান ভাষায় যার অর্থ অ্যাস। বাংলায় পাছা। রেড ডেভিল (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড) ॥ ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে রেড ডেভিল ডাকা হয়। তবে আরও দুটি নাম আছে, দ্য হেথেন্স, দ্য বাজবি বেবস। তবে রেড ডেভিলস বলেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বেশি পরিচিত। রেড ডেভিলের একটি ইতিহাসও আছে। প্রথম ইংলিশ দল হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে খেলতে আমন্ত্রণ জানায় ফ্রান্স। ফ্রান্সে প্রথম সফরেই সবকটি ম্যাচ (ছয়টি) ম্যাচ জেতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাদের পারফরম্যান্সে ফরাসী সাংবাদিক পত্রিকায় খবর প্রকাশ করে এ শিরোনামে, ‘লেস ডায়াবেলস রুজেস’-এর অর্থ ‘দ্য রেড ডেভিলস’। সে সময়ে দলের ম্যানেজার ছিলেন স্যার ম্যাট বাজবি। দলকে যখন নতুন করে পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তখন খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে বার বার বলতেন, ‘ইউ আর দ্য রেড ডেভিলস’। সে থেকেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাক নাম হয়ে যায় রেড ডেভিলস। এছাড়া ১৯৬০ সালে স্যালফোর্ড সিটি রেড নামের এক ‘লাল দানব’ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছিল। ১৯৭০ সালে প্রাতিষ্ঠানিকরূপে দলের ব্যাজে এই লাল দানবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
×