ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মাঠ প্রস্তুতির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে

টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব শুরু ১৩ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব শুরু ১৩ জানুয়ারি

নূরুল ইসলাম/মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, টঙ্গী ও গাজীপুর থেকে ॥ টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমা মাঠের প্রস্তুতিকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব এজতেমা। এবারও দু’পর্বে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব এজতেমার আয়োজন। ১৩, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব এজতেমা। বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে টঙ্গীর একবর্গ কিলোমিটার এলাকা বাঁশের খুঁটি দিয়ে চটের ছাউনির মাধ্যমে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ চলছে। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রতিদিন প্রস্তুতি কাজে অংশ নিচ্ছেন। আগামী ৭দিনের মধ্যে এ বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও সিটি কর্পোরেশন পানি, বিদ্যুত ও টয়লেট নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেছে। রাজধানী ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে টঙ্গীর তুরাগ নদীতীরে বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি বিশ্ব এজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এজতেমায় অংশ নেয়া তবলীগ জামাতের মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও ৩২ জেলার মুসল্লি এজতেমায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। ৩২ জেলার মুসল্লিরা দুই ভাগে ১৬ জেলা করে এ বছরে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবেন। গত বছর যে ৩২ জেলার মুসল্লি দুই পর্বে বিশ্ব এজতেমায় অংশ নিয়েছিলেন, ওই ৩২ জেলার মুসল্লি এ বছর ইজতেমায় অংশ নিতে পারছেন না। তবে সেসব জেলায় জেলাভিত্তিক বিশ্ব এজতেমা পালিত হচ্ছে। টঙ্গীর তুরাগতীরে প্রতিদিন এজতেমা মুসল্লির সঙ্গে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও ধর্মাবলম্বীরা এজতেমা ময়দানের ১৬৫ একর এলাকা বিস্তৃত চটের প্যান্ডেল নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কর্মরত মুসল্লিরা খুঁটির ওপর চট টাঙ্গানো, কেউ লোহার খুঁটি ও পাইপ দিয়ে মূল মঞ্চ তৈরি করছেন, কেউ টয়লেট নির্মাণের কাজ করছেন, কেউবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ, কেউবা বালু দিয়ে মাঠ সমান করার কাজ করছেন। পুরো মাঠে নামাজের জন্য দাগ (কাতার) দেয়া হচ্ছে। মুসল্লিদের জেলা ও উপজেলায় নির্ধারণ করার জন্য খুঁটি ও খিত্তা তৈরি করা হচ্ছে। হাসিমুখে, আনন্দের সঙ্গে সবাইকে এজতেমা ময়দানে বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ করতে দেখা গেছে। বিশ্ব এজতেমায় আগত মুসল্লিদের তুরাগ নদী পারাপারের জন্য সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ৭টি ভাসমান সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। শুক্রবার ছুটির দিনে টঙ্গী, উত্তরা, গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী-বেসরকারী ধর্মপ্রাণ বিভিন্ন পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায়শ্রমে অংশগ্রহণ করবেন। প্রতিবারের মতো এবার বিদেশী মুসল্লির থাকার জন্য এজতেমা মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে টিনশেড দিয়ে কামরা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিদেশী আবাসনের পশ্চিমে তুরাগপারে গ্যাস সুবিধাসহ তাদের রান্নার চুলা ও রন্ধনশালা নির্মাণ করা হচ্ছে। এজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তবলীগ জামাত অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নিয়ে থাকেন। এ বছর ২০১৭ সালের ৫২তম ইজতেমার দুই পর্বে অংশ নেয়া ৩২ জেলা হলো- ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, সৈয়দপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুর, যশোর, বাগেরহাট, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, বরিশাল চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সাতক্ষীরা।
×