ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন সাবিনারা

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন সাবিনারা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তিই অনেক বেশি। আর সেই প্রাপ্তিতে মিশে আছে অনেক ইতিহাস, অনেক গৌরব, অনেক সাফল্য এবং অনেক পরিশ্রমের কীর্তিগাথা। ভারতের শিলং থেকে বৃহস্পতিবার ইতিহাস গড়ে, গৌরব-সাফল্য নিয়ে দেশে ফিরলো বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দল। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয় বাফুফে। বুধবার ‘সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে’ কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে স্বাগতিক ভারতের কাছে ১-৩ গোলে হেরে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ দল। উল্লেখ্য, চতুর্থবার অংশ নিয়ে এবারই প্রথম বাংলাদেশ দল ফাইনাল খেলে। এর আগে ২০১০ এবং ২০১৪ আসরে সেমিফাইনাল খেলে এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করে। সাফ অঞ্চলে ভারত বরাবরই প্রতিষ্ঠিত শক্তি। তাদের ফুটবলের ইতিহাসও অনেক পুরনো। চলতি আসরে তারাই ছিল ফেভারিট (আগের তিন আসরেরও শিরোপা তাদের)। অভিজ্ঞতা, গড় বয়স (ভারতের ৩৩, বাংলাদেশের ২৩), শক্তিমত্তা, ফিফা র‌্যাঙ্কিং (ভারত ৫৪, বাংলাদেশ ১১৪), পরিসংখ্যান (৭ ম্যাচের ৬টিতেই ভারত জয়ী, ১টিতে ড্র)Ñ সবকিছুতেই তারা বাংলাদেশের চেয়ে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে। তাই তাদের এবারের শিরোপা জেতাটা ছিল নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু বিস্ময় জাগিয়েছে বাংলাদেশ দল। তারা টুর্নামেন্ট খেলতে যায় সেমিফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে। সেখানে ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পারাটা ছিল নিঃসন্দেহে তাদের ঈর্ষণীয় সাফল্য। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এবারই তারা ভারতের সিনিয়র দলের সঙ্গে একটি ম্যাচে হারেনি, গ্রুপ পর্বে গোলশূন্য ড্র করে রুখে দেয়। যা টুর্নামেন্টে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই ড্রতে ভারতকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশই হয়ে যায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, যা ছিল আরেক চমক। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল মোট গোল করে ১৩টি। সাবিনা খাতুন করেন ১টি হ্যাটট্রিকসহ ৭টি, সিরাত জাহান স্বপ্নাও ১টি হ্যাটট্রিকসহ করেন ৫টি এবং নার্গিস খাতুন করেন ১টি গোল। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে ৬-০ গোলে হারায় ও ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপ সেরা হয়। সেমিতে মালদ্বীপকে হারায় ৬-০ গোলে। একমাত্র ফাইনালে গিয়েই তারা গোল হজম করে। বাফুফে এবারের মহিলা সাফটাকে তারা নিয়েছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে। আগামী বছর সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুর্ধ-১৬ দলের মেয়েরা খেলবে এএফসি অনুর্ধ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্বে। সেখানে শীর্ষ তিন দলের মধ্যে থাকতে পারলে উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিতব্য ২০১৮ সালের ফিফা অনুর্ধ-১৭ মহিলা বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলতে পারবে বাংলাদেশের মেয়েরা। এবারের সাফের চমৎকার ফল কি সেই দিনের সাফল্যের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে? তবে বাংলাদেশ দল গত দুই বছরে যে দুটি বয়সভিত্তিক দল তিনটি আসরের শিরোপা জিতেছে, সেই দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই আছেন এবারের সাফে জাতীয় দলে। খেলোয়াড়দের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলা এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব ... সবমিলিয়ে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের দলটির ভবিষ্যত অনেক উজ্জ্বল, এমনটাই মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধারা।
×