ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ক্রিকেট লীগে খুলনা চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

জাতীয় ক্রিকেট লীগে  খুলনা চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন এলইডি টিভি ১৮তম জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডের তৃতীয়দিনে কি দুর্দান্ত বোলিং করলেন আল আমিন হোসেন। একাই ৬ উইকেট শিকার করলেন। আর তাতে করে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে তিনদিনেই ৩৯৮ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়নই হয়ে গেল খুলনা। আল আমিন প্রথম ইনিংসেও তিন উইকেট নিয়েছেন। তাই ম্যাচসেরাও হন নিউজিল্যান্ড সফরে জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া এ পেসার। তার সঙ্গে খুলনার প্রথম ইনিংসে ৬২ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে শতক করায় এনামুল হক বিজয়ও (১২২ রান) ম্যাচসেরা হয়েছেন। খুলনা টানা দ্বিতীয়বারের মতো এনসিএলে শিরোপা জিতেছে। প্রথম স্তর থেকেই একদল চ্যাম্পিয়ন হবে। যে দল সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাবে তারাই শিরোপা ঘরে তুলবে। দুই দলের মধ্যে শিরোপা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। একদল খুলনা। আরেকদল ঢাকা বিভাগ। ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে খেলে খুলনা। আর বরিশালের বিপক্ষে খেলে ঢাকা। ষষ্ঠ রাউন্ড শুরুর আগেই ৪৪ পয়েন্ট পেয়ে ঢাকা থেকে ৭ পয়েন্ট বেশি ছিল খুলনার। এরপরও শিরোপা জেতা নিশ্চিত ছিল না। কারণ ঢাকা যদি বোনাস পয়েন্টসহ পুরো ১৮ পয়েন্ট পায়, তাহলে খুলনার শিরোপা জেতা ভেস্তে যেতে পারে। কিন্তু ঢাকার যে অবস্থা তাতে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের ধারে কাছে আছে দলটি। জয়ের জন্য ১০, ব্যাটিং থেকে ৪, বোলিং থেকে ৩ ও প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকায় ১ পয়েন্টসহ পুরো ১৮ পয়েন্টও পাবে ঢাকা। কিন্তু তাতে কোন লাভ হচ্ছে না। চ্যাম্পিয়ন হতে বোনাস পয়েন্টসহ ১২ পয়েন্ট লাগত খুলনার। সেই কাজটি ভালভাবেই হয়েছে। জিতে ১০ পয়েন্ট পেয়েছে খুলনা। ব্যাটিং থেকে কোন পয়েন্ট মিলেনি। তবে বোলিং থেকে পুরো ৩ পয়েন্টই পেয়েছে। আর প্রথম ইনিংসে লিড নেয়ায় পেয়েছে ১ পয়েন্ট। সবমিলিয়ে ১৪ পয়েন্ট পেয়েছে খুলনা। তাতে ঢাকার ৫৫ পয়েন্ট থেকে তিন পয়েন্ট বেশিই মিলেছে। শিরোপা জয়ও সেখানেই হয়ে গেছে। এই শিরোপা জিততে ব্যাটিংয়ে এনামুল হক বিজয় ও দ্বিতীয় ইনিংসে শতক করা তুষার ইমরানের (১৩৮) ভূমিকা দুর্দান্ত ছিল। আর বল হাতে মাতিয়ে দিয়েছেন আল আমিন হোসেন। খুলনা প্রথম ইনিংসে ২০৭ রানে অলআউট হয়েছিল। দ্বিতীয়দিনে ঢাকা মেট্রো ১২২ রানেই গুটিয়ে যায়। এরপর আবার ব্যাট করতে নেমে এনামুল হক বিজয়ের ১২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৭২ রান করেছিল খুলনা। তাতেই ৩৫৭ রানে এগিয়ে গিয়েছিল। তৃতীয়দিন তুষার ইমরানের শতকে ৫ উইকেট হারিয়ে ৪২৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। জিততে ঢাকা মেট্রোর সামনে ৫০৯ রানের টার্গেট পড়ে। রানের পাহাড় দেখেই যেন ব্যাটসম্যানদের বারোটা বেজে যায়। আল আমিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা। চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় খুলনা। ফতুল্লায় খুলনা জেতার পর ম্যাচসেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সাবেক ক্রিকেটার ও ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদ এবং ওয়ালটন গ্রুপের সহকারী পরিচালক মিলটন আহমেদ। চ্যাম্পিয়ন দৌড়ে থাকা ঢাকা বিভাগ সিলেটে ইনিংস ব্যবধানে জেতার সুযোগে আছে। বরিশালকে ফলোঅনে ফেলে ঢাকা বিভাগ। প্রথম ইনিংসে ৫৮৮ রান করে। বরিশাল প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রানেই অলআউট হয়ে যায়। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয়দিন শেষে ৪ উইকেটে ২৫৯ রান করে বরিশাল। আজ চতুর্থদিনে ইনিংস হার এড়াতে হাতে থাকা ৬ উইকেটে ১৪১ রান করতে হবে বরিশালকে। লীগের নিয়ম হচ্ছে, প্রথম স্তর থেকে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দল চ্যাম্পিয়ন হবে। সর্বনিম্ন স্থানে থাকা দল দ্বিতীয় স্তরে নেমে যাবে। আগামী মৌসুমে তাদের দ্বিতীয় স্তরে খেলতে হবে। প্রথম স্তরে খেলার যোগ্যতা হারাবে। দ্বিতীয় স্তরের সেরা দলটি প্রথম স্তরে উঠে আসবে। প্রথম স্তর থেকে ঢাকা মেট্রোর যে অবনমন হচ্ছে, তা নিশ্চিত হয়ে গেছে। দ্বিতীয় স্তর থেকে রংপুরের প্রথম স্তরে উন্নীত হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি। আজই তা নিশ্চিত হয়ে যাবে। রংপুরের বিপক্ষে রাজশাহী ১৫৩ রানে এগিয়ে রয়েছে। যদি ম্যাচটির ফল রংপুরের বিপক্ষে না যায়, তাহলে রংপুর প্রথম স্তরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। আর আজ চতুর্থ ও শেষদিনে রংপুর কোনভাবে হারলে রাজশাহী প্রথম স্তরে খেলবে।
×