ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাবাদার বোলিং তোপে বড় হার লঙ্কানদের

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

রাবাদার বোলিং তোপে বড় হার লঙ্কানদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অন্তত হার এড়ানো প্রয়োজন ছিল। ড্র করতে পারলেও সিরিজ হারটা ঠেকানো যেত আপাতত। কিন্তু তৃতীয়দিনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল কোন ‘ভানুমতির খেল’ ছাড়া কেপটাউন টেস্টে হার এড়ানোই অসম্ভব সফরকারী শ্রীলঙ্কার জন্য। সেটা সত্য হতে চতুর্থদিন মাত্র ২২ ওভার অপেক্ষা করতে হলো। কাগিসো রাবাদার পেস তোপে ৫০৭ রানের বিশাল লক্ষ্যের চাপে ২২৪ রানেই গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস। ফলে ২৮২ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। পোর্ট এলিজাবেথে প্রথম টেস্টে ২০৬ রানে জিতেছিল প্রোটিয়ারা। ফলে টানা দুই জয়ে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আগেভাগেই জেতা নিশ্চিত করল স্বাগতিক দল। ৫০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য। আর সেটা তৃতীয়দিনের চা বিরতির আগেই নির্ধারণ করে গেছে প্রোটিয়া শিবির। পাহাড়সম সেই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয়দিনই ১৩০ রান করতে ৪ টপঅর্ডারের উইকেট হারায় লঙ্কানরা। প্রথম ইনিংসের মতোই এবারও ঝড় তুলেছিলেন রাবাদা আর ভারনন ফিল্যান্ডার। চতুর্থদিন কঠিন চ্যালেঞ্জ ও চাপ ছিল অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও দিনেশ চান্দিমালের কাঁধে। কিন্তু তারা সেটা পালন করতে পারেননি। কারণ রাবাদা শুরু থেকেই জ্বলে উঠলেন তার গতি নিয়ে। ফিরিয়ে দিলেন ৩০ রান করা চান্দিমালকে। এরপরই যেন একা হয়ে যান ম্যাথুস। অবশ্য বেশিক্ষণ তাকে ক্রিজে থাকতে দেননি রাবাদা। অর্ধশতক থেকে ১ রান দূরে থাকতে (৪৯) সাজঘরে ফেরেন উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা কুইন্টন ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ওই ওভারেরই প্রথম বলে উপুল থারাঙ্গাকে (১২) শিকার করেছিলেন রাবাদা। এই জোড়া আঘাতের পর আর কোনভাবেই প্রতিরোধ গড়তে পারেনি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। রাবাদার গতির তোড়ে একের পর এক আত্মসমর্পণ করেছেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। শুধু দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রঙ্গনা হেরাথ লড়াই করেছেন শেষ পর্যন্ত। তাকে আর টলাতে পারেননি রাবাদা কিংবা ফিল্যান্ডার। হেরাথ একাই লড়ে ৪৫ বলে ৪ চারে ৩৫ রান করে থেকেছেন অপরাজিত। মধ্যাহ্ন বিরতির আধাঘণ্টা আগেই শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে গেছে ২২৪ রানে। মাত্র ৫৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন রাবাদা। আর ফিল্যান্ডার নেন ৪৮ রানে তিন উইকেট। এ দু’জনই প্রথম ইনিংসে বড় সর্বনাশ করেছিলেন সফরকারীদের। চারটি করে উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছিলেন প্রথম ইনিংস মাত্র ১১০ রানে। সেটাই বড় চাপ হয়ে গেছে দ্বিতীয় ইনিংসে। টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করা রাবাদাই হয়েছেন ম্যাচসেরা। ২৮২ রানের জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম টেস্টে ২০৬ রানে হেরে গিয়েছিল লঙ্কানরা। দ্বিতীয় টেস্টেও ব্যাটিং ব্যর্থতা তাদের বড় পরাজয়বরণে মূল ভূমিকা রাখলো। স্কোর ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস- ৩৯২/১০; ১১৬ ওভার (এলগার ১২৯, ডি কক ১০১, প্লেসিস ৩৮, মহারাজ ৩২*, আমলা ২৯; কুমারা ৬/১২২, হেরাথ ২/৫৭, লাকমাল ২/৯৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ২২৪/৭ ডিক্লে. ৫১.৫ ওভার (এলগার ৫৫, প্লেসিস ৪১, ডুমিনি ৩০, স্টিফেন কুক ৩০, ডি কক ২৯, মহারাজ ২০*; লাকমাল ৪/৬৯)। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস- ১১০/১০; ৪৩ ওভার (থারাঙ্গা ২৬*, করুনারতেœ ২৪, ধনঞ্জয়া ১৬; ফিল্যান্ডার ৪/২৭, রাবাদা ৪/৩৭, মহারাজ ২/৩২) ও দ্বিতীয় ইনিংস- তৃতীয় দিনশেষে ১৩০/৪; ৪০ ওভার (কৌশল সিলভা ২৯, ধনঞ্জয়া ২২, ম্যাথুস ২৯*, চান্দিমাল ২৮*) এবং চতুর্থদিন- ২২৪/১০; ৬২ ওভার (ম্যাথুস ৪৯, চান্দিমাল ৩০, হেরাথ ৩৫*, থারাঙ্গা ১২, লাকমাল ১০; রাবাদা ৬/৫৫, ফিল্যান্ডার ৩/৪৮)। ফল ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ২৮২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা)। সিরিজ॥ তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
×