ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনীতির অগ্রযাত্রা গতিশীল হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

অর্থনীতির অগ্রযাত্রা  গতিশীল হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার॥ কয়েকবছর ধরে ক্রমেই গতিশীল হচ্ছে অর্থনীতির মহাসড়কে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর ৩ বছরে সে ধারাবাহিকতা আরও ত্বরান্বিত হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখা না গেলে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাহত হবে অগ্রগতি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩ বছর পর সরকারের কর্মকা- নিয়ে এমন মূল্যায়ন দেশের বিশিষ্টজনদের। এক সময়ের স্বল্পোন্নত দেশের তকমা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ হাঁটছে মধ্যম আয়ের পথে। মানুষ এখন স্বপ্ন দেখতে জানে বলেই, এ দেশে হচ্ছে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বড়ো প্রকল্প। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে বেশ আগেই। ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। কৃষিতে অধিক ভর্তুকি, রফতানি শিল্পকে উৎসাহ দেয়াসহ বিকাশ ঘটেছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও। সরকারের বর্তমান নীতি ও কৌশলের কারণেই মানুষ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, আশাবাদ কখন মানুষের মধ্যে আসে? যখন তারা দেখে যে তাদের বর্তমান অবস্থা আগের থেকে ভাল এবং ভবিষ্যতে আরও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, তিন বছরে আমাদের অর্থনীতি এবং সমাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বিদেশনীতির ক্ষেত্রেও আমরা ভাল অবস্থান আছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে মোটামুটি সমীহ জাগানো একটি নাম। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এখনও নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান। সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম আরও বলেন, গত তিন বছর সামাজিক সুস্থিরতা আমাদের ছিল, আশা করি আগামীতেও থাকবে। রাজনৈতিক সুস্থিরতাটাও আমরা চাই তবে এটি যেন কোন দলকে নিষ্ক্রিয় করার মাধ্যমে না হয়। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, বিনিয়োগ সেভাবে বাড়েনি স্থিতিশীল থাকা সত্ত্বেও। কারণ যারা বিনিয়োগ করেন তারা এক বছরের পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেন না। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার দেশের সার্বিক উন্নতির বিষয়ে যে নীতি এবং কৌশল নিচ্ছে, তা ইতিবাচক হলেও তার বাস্তবায়নের ব্যাপারে চ্যালেঞ্জগুলো দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে পারলেই আসবে কাক্সিক্ষত সুফল। বাংলাদেশ এখন হাঁটছে ২০২৫ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে। তবে দেশে এখনও চার কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে, যাদের মধ্যে দুই কোটি মানুষ অতিদরিদ্র। বিপুল এই জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তর করা গেলে এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের একটি স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা গেলে তবেই অর্জন করা সম্ভব হবে অদম্য বাংলাদেশ।
×