ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিন গোলে পিছিয়ে নাটকীয় ড্র আর্সেনালের

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

তিন গোলে পিছিয়ে নাটকীয় ড্র আর্সেনালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুধু নাটকীয় না, অতিনাটকীয় বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। মঙ্গলবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচে এফসি বোর্নমাউথের মাঠে তিন গোলে পিছিয়ে পড়ে আর্সেনাল। শেষদিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র নিয়ে ফিরেছে আর্সেন ওয়েঙ্গারের দল। অপর দুই ম্যাচে সোয়ানসি সিটি ২-১ গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ও স্টোক সিটি ২-০ গোলে হারিয়েছে ওয়াটফোর্ডকে। ড্র করায় পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে ওঠার সুযোগ হারিয়েছে আর্সেনাল। ২০ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে গানার্সরা। বুধবার রাতের ম্যাচের আগ পর্যন্ত ১৯ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে চেলসি। ২৫ পয়েন্ট নিয়ে নয়ে বোর্নমাউথ। হাতের মুঠোয় থাকা জয় হাতছাড়া হওয়ায় সঙ্গত কারণেই হতাশ বোর্নমাউথ কোচ ইডি হোয়ি। হতাশ হওয়া ছাড়া কিইবা করার আছে তার। তিন গোলে এগিয়ে থাকার পরও আর্সেনালের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি তার দল। ছয় গোলের মহারোমাঞ্চের ম্যাচ ড্র হলেও আর্সেনালের জন্য তো সেটা জয়ের চেয়েও বড় কিছু। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের শেষ ২০ মিনিটে তিন গোল করে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে স্বস্তির এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরেছে ওয়েঙ্গারের দল। পরিসংখ্যান আর শক্তিমত্তার বিচারে বোর্নমাউথের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। সর্বশেষ তিন ম্যাচে নয় গোল হজম করা বোর্নমাউথ প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে মাত্র একবার। আর সেই দলটাই কি না আর্সেনালকে পেয়ে গোল উৎসবে মেতে ওঠে। প্রথমার্ধের খেলা দেখে বোর্নমাউথকে আর্সেনাল ভেবে ভুল করতে পারেন অনেকেই। পুরো সময়টাই আর্সেন ওয়েঙ্গারের শিষ্যদের চেয়ে অনেক ভাল খেলেছে স্বাগতিকরা। শুরু থেকেই অতিথি আর্সেনালকে চেপে ধরা বোর্নমাউথকে গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৬ মিনিট পর্যন্ত। অবশ্য এরমধ্যেই অন্তত দুইবার দারুণ সুযোগ সৃষ্টি করে হোয়ির দল। ১৬ মিনিটে চার্লি ড্যানিশের কোনাকুনি শটে প্রথম গোল পায় বোর্নমাউথ। দ্বিতীয় গোলটিতে অবশ্য রেফারিরও খানিকটা অবদান আছে। রায়ান ফ্রেশারকে ট্যাকল করতে গেলে ফেলে দেন আর্সেনাল ডিফেন্ডার জাকা। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পিটার চেককে ফাঁকি দিয়ে গোল করতে কোন সমস্যাই হয়নি উইলসনের। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় গানার্সরা। প্রথমার্ধে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। বিরতির পর দারুণভাবে শুরু করে আর্সেনাল। প্রথম মিনিট পাঁচেক টানা আক্রমণ করেন জিরুড-সানচেজরা। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেয়নি বোর্নমাউথ। ৫৬ মিনিটে ডি বক্সে হ্যান্ডবল হলেও সে যাত্রায় বেঁচে যায় আর্সেনাল। তবে ৫৮ মিনিটে আর রক্ষা হয়নি। ফিরতি আক্রমণে গোল পায় বোর্নমাউথ। গোল করেন ফেশার। তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পর মনে হচ্ছিল হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে ওয়েঙ্গারের দলকে। এরপর ম্যাচে ফিরতে হন্যে হয়ে পড়ে অতিথিরা। ৭০ মিনিটে জিরুডের হেডে বল পেয়ে ব্যবধান কমান চিলির তারকা সানচেজ। আর্সেনাল যে ম্যাচে ফিরবে তখনও কেউ কল্পনা করেনি। লোওবির বদলে নামা পেরেজের কোনাকুনি শটে দ্বিতীয় গোল করে আর্সেনাল। ম্যাচের বয়স তখন ৭৫ মিনিট। এরপরই জমে ওঠে ম্যাচ। র‌্যামসিকে ফাউল করায় সিমন ফান্সিসের লালকার্ডে ৮২ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বোর্নমাউথ। আর এই সুযোগে আরও আক্রমণ করতে থাকে আর্সেনাল। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে সমতা ফেরাতে পারেনি তারা। ম্যাচের অতিরিক্তি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে (৯২ মিনিট) দারুণ এক হেডে আর্সেনালকে সমতায় ফেরান ফরাসী তারকা অলিভিয়ের জিরুড। রোমাঞ্চকর ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্সেনাল। ম্যাচ শেষে আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার বলেন, এটি শারীরিক ও মানসকি পরীক্ষার ম্যাচ ছিল। ছেলেরা তাতে উতরে গেছে। তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পর তারা যেভাবে ফিরে এসেছে তাতে তাদের অভিনন্দন প্রাপ্য। তবে গানার্স কোচ স্বল্প বিরতিতে ম্যাচ খেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে বোর্নমাউথ কোচ ইডি হোয়ি বিশ্বাসই করতে পারছেন না ম্যাচটি জিততে পারেনি তার দল। তিনি বলেন, ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে। তিন গোলে এগিয়ে থাকার পর যা হলো তা মেনে নেয়া কঠিন।
×