ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরিজ হার এড়ানোর প্রত্যাশা মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

সিরিজ হার এড়ানোর প্রত্যাশা মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হারের পর হোয়াইটওয়াশও হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম টি২০তেও হেরেছে। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি২০তে খেলতে নামবে মাশরাফিবাহিনী। ম্যাচটি হারলেই তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজেও হার হয়ে যাবে। শুক্রবার সেই সিরিজ হার এড়ানোর ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দল এখন নেপিয়ার থেকে আছে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। নিউজিল্যান্ডের এ শহরের বে ওভালে হবে দ্বিতীয় টি২০। এমনকি রবিবার তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচটিও একই স্টেডিয়ামে হবে। যদি বাংলাদেশ দল কোনভাবে দ্বিতীয় টি২০তে জিতে, তাহলে টি২০ সিরিজে ১-১ সমতা আসবে। আর তা না হলে প্রথম টি২০তে ৬ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় টি২০তে হেরে সিরিজ হারই হয়ে যাবে। ওয়ানডের মতো টি২০ সিরিজেও এক ম্যাচ আগেই সিরিজ হার নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। পারবে দল সিরিজে সমতা আনতে। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে টানা হারের কবলে পড়ে দলের এখন বেহাল দশা চলছে। এ দশা থেকে বের হওয়া কঠিন তা বোঝা যাচ্ছে। নিউজিল্যান্ড পুরোদমে বাংলাদেশ দলকে চেপে ধরেছে। যদি টি২০ সিরিজেও হারে বাংলাদেশ তাহলে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার সম্ভাবনাতেই পড়ে যাবে। দেশের মাটিতে দুর্দান্ত সাফল্য পাওয়া দলটি দেশের বাইরে খেলতে গিয়েই ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছে। এমন দশা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হলে তো বোঝা যাচ্ছে বছরজুড়েই বাংলাদেশের খারাপ সময় আসন্ন। এখন থেকে যে বিদেশ সফরই বেশি। দীর্ঘ দুইবছর পর বাংলাদেশ দল বিদেশের মাটিতে খেলতে গিয়েছে। তাতে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। এবার টি২০ সিরিজেও হারের কবলে পড়েছে। বিদেশের মাটিতে দলের যে বেহাল দশা তা ভবিষ্যত খারাপ অবস্থাকেই কি ইঙ্গিত করছে! বিদেশ সফর দুই বছর পর হলেও এখন থেকে টানা বিদেশের মাটিতেই খেলতে হবে বাংলাদেশ দলকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই যার শুরু হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষেই আবার ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলবে। ফেব্রুয়ারিতে হায়দরাবাদে ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি হবে ভারতের বিপক্ষে টেস্টটি। ভারতের বিপক্ষে খেলার পরই আবার শ্রীলঙ্কা সফর রয়েছে বাংলাদেশের। দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুই টি২০ খেলতে শ্রীলঙ্কা যাবে বাংলাদেশ। সফরটি মার্চ পর্যন্ত চলবে। এ সফর শেষে অবশ্য একমাস কোন আন্তর্জাতিক খেলা নেই বাংলাদেশের। মে মাস থেকেই আবার শুরু হয়ে যাবে ব্যস্ততা। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ইংল্যান্ডে জুনে অনুষ্ঠিত হবে। এবার র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা আটে থাকায় বাংলাদেশ খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। এ টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি নিতে মে মাসে আয়ারল্যান্ডে একটি তিনজাতি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। যে সিরিজে বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড ছাড়াও থাকবে নিউজিল্যান্ড। ডাবল লীগ পদ্ধতির এ সিরিজে ১২ মে বাংলাদেশ খেলতে নামবে। ২৪ মে সিরিজ শেষে ১ জুন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচেই স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটি দিয়েই ২০০২ ও ২০০৪ সালের পর তৃতীয়বারের মতো টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে খেলবে বাংলাদেশ। ৫ জুন অস্ট্রেলিয়া ও ৯ জুন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা দিয়ে গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হবে বাংলাদেশের। যদি নক আউট পর্বে ওঠে বাংলাদেশ, তাহলে আরও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হবে ১৮ জুন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে এসেই আবার আরেকটি সিরিজের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত হয়ে যেতে হবে। এবার অবশ্য দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও ১টি টি২০ ম্যাচ খেলতে জুনের শেষেই বাংলাদেশে পা রাখার কথা পাকিস্তান ক্রিকেটারদের। জুলাই মাসটি জুড়েই হবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ। তবে বিদেশের মাটিতে এই সময় যদি দলের কাহিল অবস্থা হয়, তাহলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও তার প্রভাব পড়তে পারে। এখানেই বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের শেষ নয়। আছে আরও খেলা। আগস্টের শুরুতেই আবার অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। আইসিসির ভবিষ্যত সফরসূচী অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২ টেস্ট ও তিন ওয়ানডের সিরিজ খেলার কথা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। আবার এরমধ্যে ২০১৫ সালের অক্টোবরে যে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে এসে খেলে যায়নি, সেই টেস্ট সিরিজটিও হতে পারে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২ টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও ২টি২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্ট ও ১টি টি২০ সিরিজ খেলার পর একটি তিনজাতি সিরিজও খেলতে পারে বাংলাদেশ। মার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ২ টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও ১টি টি২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। জুনে এশিয়া কাপ রয়েছে। নবেম্বরে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে। বিদেশ সফরে প্রচুর খেলা রয়েছে বাংলাদেশের। এ সফরগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থা কি হবে, তা সময়েই বোঝা যাবে। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে যে হাল হচ্ছে তার প্রভাব দলের মধ্যে থাকবে। যে প্রভাব খারাপ দিনের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে যেন। যদি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে পারে বাংলাদেশ, তাহলে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তা না হলে নেতিবাচক প্রভাবই পড়তে পারে। শুক্রবার দ্বিতীয় টি২০তে দল বেহাল দশা কাটিয়ে উঠতে পারল, নাকি সেই দশাতেই পড়ে থাকল; তা বোঝা যাবে।
×