ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ভর্তিতে বাড়তি ফি আদায়কারীরা ফের সক্রিয়

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

চট্টগ্রামে ভর্তিতে বাড়তি ফি  আদায়কারীরা ফের সক্রিয়

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ভর্তি, পুনঃভর্তি ও বেতন আদায়ে আবারও নানা ছলচাতুরি শুরু করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত বছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের এমপিও বাতিলসহ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের হুঙ্কার দিলেও শেষ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এসব অসাধুদের বিরুদ্ধে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দায়িত্ব দেয়া হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থার নজির নেই। অথচ চট্টগ্রামে থাকা প্রায় সাড়ে ৬শ’ কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডার গার্টেনে মানছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত বেতন কাঠামো। এদিকে অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন গত বছরের ২০ জানুয়ারি ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক অথবা তাদের নিযুক্ত প্রতিনিধিকে তলব করে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক অথবা তাদের নিয়োজিত প্রতিনিধির সামনেই সাবেক জেলা প্রশাসক মেসবাহ উদ্দিন অভিযোগ পাওয়া ১৫টি স্বনামধন্য কলেজ ও মাধ্যমিক স্কুলসহ বাংলা ও ইংরেজী মাধ্যমের আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেন। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় বন্ধ করতে নোটিসও করা হয়েছিল। শুধু বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) স্কুল এ্যান্ড কলেজ ব্যতীত আর কোন প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেয়নি। এমনকি অতিরিক্ত অর্থ আদায়ও বন্ধ করেনি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে এই স্কুলটি আবারও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটিয়েছে প্রেপ-১ এ ৩৪০ শিক্ষার্থীর ভর্তিতে। পাহাড়তলীস্থ সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে নার্সারির ভর্তিতে এ বছর আদায় করা হয়েছে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা। এদিকে জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত ও তদন্তে প্রমাণিত চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ১৭টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ২০১৭ সালের বিভিন্ন শ্রেণীতে ভর্তি ও অন্যান্য ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ জমা পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- চিটাগাং ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা স্কুল এ্যান্ড কলেজ, সেন্টস্কলাস্টিকা স্কুল এ্যান্ড কলেজ, জামালখানস্থ আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, সিটি কর্পোরেশনের ৪৬ স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ, মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি স্কুল, পতেঙ্গার বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বেপজা স্কুল এ্যান্ড কলেজ, হালিশহরস্থ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ, কেওয়াইডব্লিউসিএ প্রাইমারি স্কুল, গানার্স ইংলিশ স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজ, এএল খান উচ্চ বিদ্যালয়, মাদার বাড়ির আইডিয়াল পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ, পাহাড়তলীস্থ বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারী উচ্চবিদ্যালয়, ব্রাইট মুন উচ্চ বিদ্যালয় ও ছোবহানিয়া আলীয়া মাদ্রাসা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে, গত বছর থেকে চট্টগ্রামের জন্য সেশন ফি বাবদ সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা এবং ঢাকার জন্য ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেশন ফির ক্ষেত্রে নাম পাল্টে অন্য ধরনের ফি আদায়ের চেষ্টা করলেও ওই সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×