ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গুলশানে অগ্নিকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

গুলশানে অগ্নিকাণ্ডের  নিরপেক্ষ তদন্ত  দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর গুলশানে ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। বুধবার দুপুরে অগ্নিকা-স্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অগ্নিকা-ের ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে নিরপেক্ষ তদন্ত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেন, পুলিশী রাষ্ট্র না হলে সরকার পুলিশকে বিএনপির জন্য সমাবেশের অনুমতি দিতে বলবে। ফখরুল বলেন, গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকা-ের ঘটনা পরিকল্পিত অগ্নিকা- বলে সন্দেহ করছেন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও যারা দোকান পরিচালনা করছেন তারা। এ কারণেই এটা সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, কারণ উদঘাটন করা দরকার। এ ঘটনার জন্য কারা দায়ী সেটাও বের করা উচিৎ এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও দোকান পরিচালকদের পুনর্বাসন করতে হবে। এর আগে নিরপেক্ষ এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি শুনেছি ডিএনসিসি মার্কেটে ৬৯৫টি ছোট-বড় দোকান রয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক যে এই অগ্নিকা-ে সবাই প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছেন, পথে বসেছেন। এখানে অনেকে দোকান করতেন, তাদের সীমিত পুঁজি। তাদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে। এখন সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব এসব ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মির্জা ফখরুল বলেন, দোকান মালিকদের অনেকেই মনে করছেন আগুন লাগানো হয়েছে। অনেকে আবার অভিযোগ করেছেন সময়মতো ফায়ার সার্ভিসের সব ইউনিট পৌঁছালে এত দোকান পুড়ত না। তিনি বলেন, আমরা মঙ্গলবারই দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছি। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা আবদুল আলিম নকি, ফারুক হোসেন ভুঁইয়া প্রমুখ। পুলিশী রাষ্ট্র না হলে সরকার সমাবেশের অনুমদিতে বলবে- রিজভী ॥ পুলিশী রাষ্ট্র না হলে সরকার পুলিশকে বিএনপির জন্য সমাবেশের অনুমতি দিতে বলবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ কর্মসূচী পালনের প্রস্তুতি নিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভা অনুষ্ঠত হবে। যৌথসভায় ঢাকা মহানগর ও আশপাশের জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকারী দলের নেতাদের হুমকি-ধমক উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার পূর্ব ঘোষিত সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচী সফল করা হবে। রিজভী বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থারক্তাক্ত পন্থায় ধ্বংস করা হয়েছে। এ অবস্থার অবসানে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের কোন বিকল্প নেই। রাষ্ট্রপনিরপেক্ষ নির্বাচন কনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটি আন্তরিকতার সঙ্গে করতে পারলে বিএনপিসহ জনগণ তাকে স্বাগত জানাবে। আমরা রাষ্ট্রপতির নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। কারণ রাষ্ট্রপতি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আর নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে বিএনপি পরবর্তীতে কি ধরনের কর্মসূচীতে যাবে। রাষ্ট্রপতি যদি চান তাহলে সংলাপ ও আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করব। অন্যথায় আন্দোলন কর্মসূচী পালন করব। রিজভী বলেন, বর্তমানে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে। আওয়ামী লীগের অন্তঃকোন্দলে দেশব্যাপী খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেদের অপরাধকে ঢেকে রাখার জন্য বেসামাল হয়ে বিএনপি নেতাদের নামে মিথ্যাচার ও দোষারোপের রাজনীতি শুরু করেছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠসম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএনপি Ñআমীর খসরু ॥ বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যুব জাগপা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। আমীর খসরু বলেন, রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে বিএনপি মুক্ত আলোচনার পথ খুলে দিয়েছে। এই সংকট আলোচনা ও সংলাপের মধ্য দিয়েই সমাধান করতে হবে। অন্যথায় রাজনীতি উগ্রবাদীদের হাতে চলে যাবে। আর আওয়ামী লীগকে এর দায়ভার নিতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি পজিটিভ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, আর আওয়ামী লীগ নেগেটিভ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। একারণে তারা পজিটিভ রাজনীতিকে ভয় পাচ্ছে। তাই ৫ জানুয়ারি ঘনিয়ে আসলে আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসে’ বিএনপিকে সমাবেশ করতে দিলে লাখো লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। এ কারণে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিতে তাদের এত ভয়।
×