ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল এ্যাপ ভিত্তিক তিন সেবা উদ্বোধন

উদ্ভাবিত প্রযুক্তি হতে হবে অবশ্যই কৃষকবান্ধব ॥ মতিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

উদ্ভাবিত প্রযুক্তি হতে হবে অবশ্যই কৃষকবান্ধব ॥ মতিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের কৃষকদেরও অনেক বেশি উদ্ভাবনী শক্তি রয়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, আমাদের কৃষক কিন্তু নিজেই অনেক কিছু উদ্ভাবন করেন। তাদের একটা উদ্ভাবনী ও পর্যবেক্ষণ শক্তি আছে। কৃষক তার জমির প্রতিটি পরিবর্তন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তাই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তা হতে হবে অবশ্যই কৃষকবান্ধব। নতুন উদ্ভাবিত সেবাগুলো কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে না পারলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। তাই কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছে বর্তমান সরকার। এই সেবাগুলোকে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। বুধবার দুপুরে রাজধনীর খামারবাড়ির আ. কা. মু গিয়াসউদ্দিন মিলকী অডিটোরিয়ামে কৃষি সম্প্রসারণের উদ্ভাবিত মোবাইল এ্যাপ ভিক্তিক তিন সেবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উদ্ভাবিত মোবাইল এ্যাপ তিনটি হচ্ছেÑ বালাই নাশক নির্দেশনা, কৃষকের জানালা ও কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা। ওই অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, কৃষকের কোন সমস্যা হলে তা প্রতিকারের জন্য আমাদের কৃষি অফিসারের কাছে আসে। আমরা চাই মাঠ পর্যায়ে যে অফিসার আছেন তারাও আন্তরিকতার সঙ্গে কৃষকদের সেবা দেবেন। কেননা কৃষকের ট্যাক্সের পয়সাতেই আমাদের অফিসারদের বেতন হয়। এটা মাথায় থাকা দরকার। তিনি বলেন, ’৯৬ সালে আমরা যে জমি পেয়েছিলাম আজকে কিন্তু কৃষির সেই জমি নেই। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আর কৃষকের পরিশ্রমে আমরা খাদ্য উৎপাদনে অনেক এগিয়েছি। জনসংখ্যা বাড়ার পরও আমাদের খাদ্যে ঘাটতি নেই। তিনি আরও বলেন, টাকা হাতে নিয়ে বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েও একবার খাদ্য পাওয়া যায়নি। আমরা ঠেকে শিখেছি। মন্ত্রী বলেন, ভিক্ষুকের জাতি কোন ইজ্জত পায় না। কাজেই কারও কাছে হাত পাতা নয়, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে হবে। আগে পেট বাঁচাতে হবে। পেট বাঁচালেই মানুষ বাঁচবে। তাই মানব সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা দরকার। পৃথিবীতে ভিক্ষুকের জাতি কোন ইজ্জত পায় না। আর দেশে মানুষের পেটে খাবার না থাকলে সরকার কেতাদুরস্ত হয়ে লাভ নেই। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শহরের কিছু মানুষকে বিজ্ঞান মনষ্ক করেছেন তা নয়, এটু-আইয়ের মাধ্যমে বাংলার কৃষককে তিনি বিজ্ঞান মনষ্ক করেছেন। এখানে তার যে দূরদৃষ্টি, চিন্তা তার সফলতা আমাদের দেশের কৃষি ও কৃষক ভোগ বা অনুভব করছে। বক্তব্যে তিনি দেশের কৃষি ব্যবস্থার বর্তমান চিত্রও তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, কৃষকের জানালা এর মূল উদ্ভাবক ও পরিকল্পনাকারী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মালেক, বালাইনাশক নির্দেশিকা এর মূল উদ্ভাবক ও পরিকল্পনাকারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকল্প দাস এবং কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা এর মূল উদ্ভাবক ও পরিকল্পনাকারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহাদৎ হোসাইন সিদ্দিকী। উদ্ভাবনী এই তিন সেবার মাধ্যমে কৃষকরা ঘরে বসেই মোবাইল অথবা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ব্যবহার করে ফসল চাষের নানা সমস্যার সমাধান পাবেন। ওই অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক শেখ ইউসুফ হারুন, এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি এ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।
×