ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইসলামে জঙ্গীবাদের স্থান নেই ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

ইসলামে জঙ্গীবাদের স্থান নেই ॥ প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ৪ জানুয়ারি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হবে। আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তবে জঙ্গীবাদ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কারণ জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস মানুষের শান্তি নষ্ট করে, দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে। তিনি বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলামে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের স্থান নেই। মানুষ মেরে কেউ বেহেশতে যাবে না। তাই জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ রুখে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। জঙ্গীবাদ থেকে ছাত্র সমাজকে দূরে রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গীবাদ থেকে ছাত্রসমাজকে মুক্ত রাখতে হবে। তারা যেন কোন জঙ্গীবাদে জড়াতে না পারে। জঙ্গীরা শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের বিপথে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে শিক্ষক-অভিভাবক সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ যেন একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়, সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।’ বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং ছাত্রীদের জন্য শেখ হাসিনা হল নামে দুটি স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন। সকাল সোয়া ১০টা থেকে বেলা ১১টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত বেরোবির সঙ্গে এ ভিডিও কনফারেন্স চলে। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন পেশাজীবী জনগণের সঙ্গে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবহেলিত পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগে এক সময় মঙ্গা ছিল। খাদ্যাভাব, অর্থাভাব ছিল এ অঞ্চলের মানুষের নিত্যসঙ্গী। আওয়ামী লীগ সরকারের গত আট বছরে মানুষ মঙ্গা শব্দটি ভুলে গেছে। মঙ্গা শব্দটি এ অঞ্চলের মানুষের মন থেকে, অভিধান থেকে মুছে গেছে। রংপুর বিভাগ এখন সবদিক থেকেই এগিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মান উন্নত করতে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। আর এই গবেষণা অব্যাহত রাখতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রিসার্চ এ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং শেখ হাসিনা হল বিশ্ববিদ্যালয়টির অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। বেরোবি উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অঙ্গীকার করে বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশে যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে আপনার নির্দেশনায় সেইভাবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে। গাইবান্ধা ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে পঞ্চগড় জেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে দুপুর ১টা ৫ মিনিটে সর্বশেষ গাইবান্ধার জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, গাইবান্ধা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী, কমিউনিটি ক্লিনিকের ইনচার্জ, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের একজন সুবিধাভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তিনি তাদের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন। প্রধানমন্ত্রী সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের এই মর্মান্তিক হত্যাকা-কে জঙ্গীবাদ, জামায়াত-শিবির চক্রের পরিকল্পিত হত্যাকা- হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের সময় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আলেম সমাজ, শিক্ষক, এনজিও কর্মী, ছাত্রছাত্রীসহ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ মাঠে উপস্থিত ছিলেন। কুড়িগ্রাম ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, বুধবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট থেকে ১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম মাঠে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জেলাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, ৪৫ বিজিবি পরিচালক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মঞ্জু ম-লসহ সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক, কৃষক, সাধারণ মানুষসহ সাবেক ছিটমহলবাসীরা উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্স জেলার ৮৭৬ পয়েন্টে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ৫ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেয়। নীলফামারী ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- প্রচারসহ ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বুধবার নীলফামারীর জনগণের সঙ্গে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্স ঘিরে জেলা জুড়ে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠসহ ৮১৯ স্থানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করে এই ভিডিও কনফারেন্স। জেলা প্রশাসক মোঃ জাকীর হোসেন জানান, ৮১৯ স্থানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে একযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্স সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। পীরগঞ্জে জনতার ঢল ॥ সংবাদদাতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্স দেখার জন্য বুধবার সকাল ১০টায় পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে জনতার ঢল নেমেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, শহর ও গ্রামে ব্যাপক প্রচারের কারণে সর্বস্তরের মানুষ ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে সকাল থেকেই হাজার হাজার জনতা উপজেলা পরিষদে ভিড় জমান। বিপুলসংখ্যক মানুষ পৌর চত্বরে জমায়েত হন। এছাড়া একই সময়ে উপজেলার ১০ ইউপি চত্বরে ভিডিও কনফারেন্স দেখার জন্য লোকজন জমায়েত হন।
×