ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

আগ্রাসী কিম জং উন

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৪ জানুয়ারি ২০১৭

আগ্রাসী কিম জং উন

একরোখা নেতা হিসেবে কিম জং উনের নামডাক রয়েছে বিশ্বে। অনেকের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করার সাহস রাখেন কিম। দীর্ঘদিন থেকেই বিশ্বে তাবত নেতাদের হুমকি উপেক্ষা করে বহু সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। নানাবিধ চাপ তাকে সহ্য করতে হয়েছে কিন্তু তাতে কি? অনেকটা থোড়াই কেয়ার ভাব নিয়ে বসে আছেন তিনি। করে যাচ্ছেন আপন মনে যা তার ইচ্ছে হচ্ছে। এ কারণে অনেক মিত্র বন্ধু দেশও পিছপা হটেছে। যেমন চীন তাদের পূর্বের অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও সরে এসেছে। অর্থাৎ মিত্রের বন্ধন কিছুটা হলেও হাল্কা করেছে। কিন্তু তাতেও যেন কপালে ভাঁজটুকুও পড়ছে না কিমের। নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকছেন প্রতিবার। সম্প্রতি নতুন বছরের আগমনী উপলক্ষে দেয়া ভাষণে আবার আলোচনায় চলে এসেছেন কিম। খ্রিস্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বক্তব্যের বিষয়টি গভীর নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা যে বক্তব্য দিয়েছে তার ব্যাপারে খতিয়ে দেখছে দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের পরমাণু হামলার হুমকির ব্যাপারে তারা উদ্বিগ্ন বলেও জানানো হয়। বছরের প্রথম দিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানান, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে তার দেশ। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন দাবি করেন, তার দেশ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি এই দাবি করেন বলে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়। কিম বলেন, ‘আমরা আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে রয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্রদেশগুলোর যে কোন হুমকি মোকাবেলায় তার দেশের সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি। ২০১৬ সালে বেশ কয়েকবার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এতে দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। উল্লেখ্য, পিয়ংইয়ং ২০১৬ সালে পারমাণবিক শক্তি হিসেবে বিশ্বে আবির্ভূত হয়েছে। গত বছর দুটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ চালায় দেশটি। তিনি আরও বলেন, ‘সর্বাধুনিক অস্ত্রের উপাদান নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এবং আইসিবিএম রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।’ এদিকে জাতিসংঘ বার বার উত্তর কোরিয়াকে এসব পারমাণবিক অস্ত্রের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে আসছে। পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরে ২০০৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে জাতিসংঘ। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পঞ্চমবারের মতো দেশটি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটানোর পর নবেম্বরে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করে জাতিসংঘ। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে মহাশূন্যে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া। ওই উৎক্ষেপণকে দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। ২০১১ সালে কিমের বাবার মৃত্যুর পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন তিনি। সদ্য বিদায়ী ২০১৬ সালের শুরুতেও হাইড্রোজেন বোমার ঘোষণা দেয় দেশটি। শেষ প্রাšেন্ত এসে পঞ্চমবারের মতো পারমাণবিক বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর কথা জানায় উত্তর কোরিয়া। এর বাইরেও বেশ কয়েকবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়ে তারা। ২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় গত বছর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে দেশটির তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সূত্র : গুগল নিউজ
×