ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তর কোরিয়ার ওপর প্রভাব না খাটানোয় চীনের সমালোচনা

উনের হুমকি উড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৪ জানুয়ারি ২০১৭

 উনের হুমকি উড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখন্ডে আঘাত হানার সামর্থ্য রাখে না, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার টুইট বার্তায় একথা বলেছেন। পিয়ংইয়ং ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) উৎক্ষেপণ পরীক্ষার খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার দাবি করার মাত্র একদিন পর ট্রাম্প এ কথা বলেনে। এছাড়া উত্তর কোরিয়াকে নির্বিঘেœ পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে এগিয়ে যেতে দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য তিনি চীনের সমালোচনা করেন। খবর এএফপিও গার্ডিয়ান অনলাইনের। ট্রাম্প এ মাসের ২০ তারিখ প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন। উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে তার প্রশাসনের নীতি তিনি এখনও পরিষ্কার করে জানাননি। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন উত্তর কোরিয়াকে একঘরে করে রাখার নীতি অনুসরণ করে। ট্রাম্প এখনও এই নীতি থেকে সরে আসার কথা বলেননি। তবে দেশটি বিনা বাধায় যেভাবে পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে চীনের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প টুইটারে লিখেছেন যে, ‘উত্তর কোরিয়া বলেছে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম এমন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার দাবি করেছে তারা। আসল কথা হল, এরকম কখনও ঘটবে না।’ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্পের বক্তব্য আসলে পরিষ্কার নয়। তিনি কি উত্তর কোরিয়ার আইসিবিএম তৈরি করতে পারবে তা বিশ্বাস করেন না অথবা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু আক্রমণ যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব ক্ষমতাবলে ঠেকাবে, কোনটি বুঝিয়েছেন সেটি তার টুইট বার্তা থেকে স্পষ্ট হয়নি। তবে অভ্যাস অনুযায়ী চীনের সমালোচনার সুযোগ হাতছাড়া করেননি। ট্রাম্প মনে করেন, পরমাণু কর্মসূচী থেকে উত্তর কোরিয়াকে বিরত রাখার মতো চাপ দেয়ার ক্ষমতা চীনের ছিল। কিন্তু বেজিং অনিচ্ছাবশত তা করেনি। তিনি আরও লিখেছেন, ‘একতরফা বাণিজ্যের মাধ্যমে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ হাতিয়ে নিচ্ছে, কিন্তু উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে তারা কোন সহযোগিতা করছে না।’ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া ভাষণে বলেছেন, তার দেশ এখন আইসিবিএম উৎক্ষেপণ পরীক্ষার দোড়গোড়ায়। তাত্ত্বিকভাবে উত্তর কোরিয়ার আইসিবিএমের পাল্লা হবে ৯ হাজার কিলোমিটার। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখন্ড এর মধ্যে পড়বে। ধারণা করা যায়, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের অভিষেককে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশে তিনি এ কথা বলে থাকতে পারেন। উন দাবি করেন, উত্তর কোরিয়া এখন একটি পরমাণু শক্তি। গত এক বছরে তার নেতৃত্বে দুটি পরমাণু ও প্রায় ২০টির মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে উত্তর কোরিয়া। টেলিভিশনে প্রচারিত ৩০ মিনিটের ওই বক্তৃতায় উন দাবি করেন, ক্ষমতাধর শত্রু রাষ্ট্রও এখন উত্তর কোরিয়াকে ঘাঁটাতে সাহস পাবে না। ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে উন আশা প্রকাশ করেন যে, পরবর্তী মার্কিন প্রশাসন উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক পদক্ষেপগুলো প্রত্যাহার করবে। উনের ভাষণ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় সম্ভবত ৮ জানুয়ারি তার জন্মদিন উত্তর কোরিয়া আরেকটি দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে। ওয়াশিংটনে যখন ক্ষমতার পালাবদল ঘটতে চলেছে নিজের শক্তি প্রদর্শনের জন্য ঠিক এরকম একটি সময় বেছে নিতে পারে পিয়ংইয়ং। টেলিভিশনে দেয়া নববর্ষে ভাষণে উন আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া নিজ সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর তৎপরতা অব্যাহত রাখবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আমেরিকা নিয়মিত সামরিক মহড়া বন্ধ না করা তিনি পর্যন্ত সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। পরমাণু ও অস্ত্র কর্মসূচী বাদ দেয়ার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর প্রচ- আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। তবে এ চাপ উপেক্ষা করে বিগত বছরগুলোতে দেশটি এ দুই ক্ষেত্রে উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে।
×