ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুলনায় কমান্ডারসহ ১৮ রাজাকারের নামে যুদ্ধাপরাধের মামলা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৪ জানুয়ারি ২০১৭

খুলনায় কমান্ডারসহ ১৮ রাজাকারের নামে যুদ্ধাপরাধের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলী আদালত ‘খ’ অঞ্চলে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার গিয়াসউদ্দিনসহ ১৮ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার যুদ্ধপারাধের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের গর্ভধারিণী মা ছকিনা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তপূর্বক বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রাইমস এ্যাক্ট ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার আইনজীবী এএম আহম্মেদ উল্লাহ। বাদীর আইনজীবী জানান, মামলায় রাজাকার কমান্ডার গিয়াসউদ্দিন (৭০) ও তার ভাই মোমতাজ উদ্দিনসহ (৮৫) ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাদীর নালিশী বর্ণনায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা পাকসেনাদের সঙ্গে খুলনা ও তার আশপাশের অঞ্চলে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বাদী এ সময় সন্তান ও নিকটাত্মীয়দের নিয়ে নগরীর শেখপাড়া বাগানবাড়িতে বসবাস করতেন। তার ছেলে আবুল হোসেন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছেলে আবুল হোসেন তার মামা দাউদ ও বাড়ির কাজের লোক আলী হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন। যুদ্ধকালীন ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর অসুস্থ মাকে দেখতে আবুল হোসেন তার মামা দাউদ ও আলী হোসেনকে নিয়ে বাড়িতে আসেন। রাত ১০টায় পার্শ্ববর্তী ইয়াসিনের বাড়িতে রেডিওর খবর শুনতে যান। এ সময় ওই এলাকার বাসিন্দা রাজাকার কমান্ডার গিয়াসউদ্দিন আবুল হোসেনকে দেখে ফেলে এবং অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভূতেরবাড়ি আনসার ক্যাম্পে অবস্থিত পাকবাহিনীকে খবর দেয়। রাত ২টার দিকে রাজাকার, আলবদর, পাকসেনারা এসে বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং আবুল হোসেন, দাউদ ও আলী হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় ভূতেরবাড়ি ক্যাম্পে। সেখানে নিয়ে তাদেরসহ অন্য স্থান থেকে ধরে আনা আরও অনেককে নির্যাতন করা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে আর্মির গাড়িতে পিছমোড়া দিয়ে বেঁধে আবুল, দাউদ ও আলী হোসেনসহ ৩৬ জনকে গল্লামারী ব্রিজের নিচে নেয়া হয়। সেখানে আর্মির নির্দেশে গিয়াস রাজাকার সর্বপ্রথম আবুল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। অন্য রাজাকাররা সেখানে নিয়ে যাওয়া আরও ১৫-২০ জনকে হত্যা করে। বাকিদের ক্যাম্পে ফেরত এনে পুনরায় নির্যাতন করে কাগজে সই রেখে ছেড়ে দেয়া হয়।
×