ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএসসিসির কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময়ে ওবায়দুল কাদের

এমপি লিটন হত্যা যড়যন্ত্রকারীদের টেস্ট কেস

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৭

এমপি লিটন হত্যা যড়যন্ত্রকারীদের টেস্ট কেস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যা হচ্ছে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের টেস্ট কেস। এর মাধ্যমে তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। ষড়যন্ত্রকারীরা খুন করে কোনভাবেই পার পাবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে আগামী ১০ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য আওয়ামী লীগের জনসভা দেশের সর্বকালের সর্ববৃহৎ ও স্মরণীয় সভা হবে বলে জানান। মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে মেয়র হানিফ স্মৃতি মিলনায়তনে ১০ জানুয়ারির বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলীয় সমাবেশ নিয়ে সংস্থাটি কর্তৃক ডিএসসিসির কাউন্সিলরদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে আগামী ১০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, তিন সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, নওফেল চৌধুরী, আব্দুস সোবহান গোলাপ, ডিএসসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশে হুঙ্কার দিয়ে বলেন, মনে রাখতে হবে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের মাধ্যমে হত্যা করা আর বর্তমান ২০১৭ সালের শেখ হাসিনা এক নন। ওই সময়ের আওয়ামী লীগের চেয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা হাজারোগুণ বেশি শক্তিশালী। ষড়যন্ত্রকারীরা বর্তমানে ষড়যন্ত্রের চোরাবালিতে পড়ে গেছে। তারা বাঁচতে পারবে না। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বিভিন্নভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে পারে- এমন আশঙ্কা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার কিছু হলে সারাদেশে আগুন জ্বলবে। এজন্য দায়ী কেউ পার পাবে না। তিনি বলেন, গাইবান্ধার এমপি লিটনের হত্যাকারী কে ইতোমধ্যে দেশবাসী তা জেনে গেছেন। সবাই বুঝতে পারছেন কারা এর সঙ্গে জড়িত হতে পারে। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ দেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। আমাদের তা রুখতে হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়মী লীগকে ভোটে পরাজিত করতে না পেরে এখন ষড়যন্ত্রের চোরাবালি বেছে নিয়েছে। কোন ষড়যন্ত্রকারীকে ছাড় দেয়া হবে না। পুরান ঢাকার প্রতিটি অলি- গলিতে বসবাসকারী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ বর্তমান সময়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই এ বিষয়ে নেত্রী এদিন এর সমাধানে নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া আগামী ১০ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য আওয়ামী লীগের জনসভা হবে দেশের সর্বকালের সর্ববৃহৎ ও স্মরণীয় সভা। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশে অংশ নেয়ার ওপর জোর দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিছিল ও র‌্যালিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। কাউকে যেন বলা না লাগে যে ব্যানার গুছিয়ে রাখুন। তিনি বলেন, সমাবেশকে সফল করতে রাজধানীর প্রতিটি থানায় মতবিনিময় সভা এবং আশপাশের জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে, যা আগে কখনও করা হয়নি। সেতুমন্ত্রী বলেন, অগ্রিম সভা নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করলেও দেখতে পাচ্ছি প্রত্যেক জায়গাতেই এসব মতবিনিময় সভা জনসভায় রূপ নিচ্ছে, যা গণজাগরণেরই অংশ। ঢাকা শহরের উঠতি বয়সের ছেলেরা মাদকে আসক্ত হচ্ছে জানিয়ে মেয়র সাঈদ খোকনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনাদের গ্রীন সিটি ক্লিন সিটি গড়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কিন্তু তরুণ সমাজের একটি অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই মাদক যাতে ছড়াতে না পারে এজন্য মেয়র ও কাউন্সিলরগণ বিশেষ ক্যাম্পেন করবেন। একপর্যায়ে মন্ত্রী বলেন, আমি ১০ তারিখের সভা নিয়ে নতুন ঢাকায় সভা করেছি তাই সূত্রাপুর তথা পুরান ঢাকায় একটি সভা করতে চাই, যার স্থান মহানগরের নেতৃবৃন্দ ঠিক করে দেবেন। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ‘দক্ষিণের মাটি, সাঈদ খোকনের ঘাঁটি’ বলে সেøাগান দিতে থাকলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাঈদ খোকনের ঘাঁটি তখনই বলব যখন দক্ষিণ সিটি মাদকমুক্ত হবে। একই সঙ্গে খাদ্যে ভেজাল মেশানো অসাধু ব্যবসাীদের বিরুদ্ধে মেয়রকে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। সভাপতির বক্তব্যে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ১০ জানুয়ারির সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে হবে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকার সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য করে দিতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মূলত কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা থাকলেও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা আসতে থাকলে নগর ভবনের মিলনায়তন ও আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এ সময় নগর ভবনের আশপাশের এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীরা খ- খ- মিছিল বের করেন।
×