ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান

আমাদের আজকের আলোচনা ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান নিয়ে। বাংলা বানানে দন্ত্যন আর মূধর্ন্য নিয়ে যত জটিলতা একই সমস্যা ‘ষ’ এর ব্যবহারেও। তবে নিয়ম মেনে চর্চা করলে বিষয়টি আর অত জটিল থাকে না। এসো সংক্ষেপে বিষয়টি দেখে নেই। ণ-ত্ব বিধান : মূলত সংস্কৃত বা তৎসম শব্দে ণ-এর ব্যবহার প্রচলিত। খাঁটি বাংলা ও বিদেশী শব্দে সব সময় ন ব্যবহৃত হয়। তৎসম শব্দে মূধর্ন্য ‘ণ’ ব্যবহারের যে সুনির্দিষ্ট নিয়ম তাকে ণ-ত্ব নিধান বলে। যেমন : (১) ‘ণ’ ট বর্গীয় ধ্বনি তাই ট, ঠ, ড, ঢ-এর আগে সব সময় ‘ণ’ হবে। অর্থাৎ ‘ন’ ‘ণ’ তে পরিণত হবে। উদাঃ বণ্টন, লুণ্ঠন ইত্যাদি। (২) ধ, র, ষ-এর পরে মূধর্ণ্য ‘ণ’ বসে। উদাঃ তৃণ, ধণ ইত্যাদি। (৩) ‘র’ ফলার পর মূধর্ণ্য ‘ণ’ হয়। উদাঃ প্রণাম, ঘ্রাণ ইত্যাদি। (৪) প্র, পূর্ব ও অপর শব্দের পর অহ্ন থাকলে ণ হয়। উদাঃ অপবাহ্ন, পূর্বাহ্ন। (৫) প্র, পরি, নির, পরা এই চারটি উপর্সগের পর মূধর্ণ্য ‘ণ’ হয়। উদাঃ নির্ণয়, প্রবীণ ইত্যাদি। ষ-ত্ব বিধান : তৎসময় শব্দে ‘ষ’ ব্যবহারের নিয়মকে ষ-ত্ব বিধান বলে। এর নিয়মগুলো দেখা যাক: (১) ঋ-কারের পর মূধর্ন্য ‘ষ’ হয়। উদাঃ কৃষক, তৃষ্ণা ইত্যাদি (২) অ, ব্যতীত অন্য স্বরবর্ণ এবং ক ও র-এসব বর্ণের মধ্যবর্তী দন্ত ‘স’ মূধর্ণ্য ‘ষ‘ হয়। উদাঃ মুমূর্ষ, শীচরণেষু ইত্যাদি। (৩) ট-বর্গের আগে সর্বদা মূধর্ণ্য ‘ষ’ হয়। উদাঃ কষ্ট, শ্রেষ্ঠ ইত্যাদি। (৪) ‘বি’ উপসর্গের পর সিহ ধাতুর ‘স’ ‘ষ’ হয়। উদাঃ দুর্বিষহ। (৫) ‘নাম’ বোঝালে অ-আ ভিন্ন স্বরবর্ণের পরবর্তী যেন শব্দের ‘স’ ‘ষ’ হয়। উদাঃ সুষেন। (৬) ই-কারান্ত এবং উ-কারান্ত উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতে ‘ষ’ হয়। উদাঃ অভিষেক, বিষণœ ইত্যাদি। (৭) রেফ (র্ ) এর পর ‘ষ’ হয়। উদাঃ বর্ষণ, কর্ষণ ইত্যাদি। মনে রেখ, ‘৩-বর্গীয় ধ্বনি, তদ্ভব ও বিদেশী শব্দে কখনও মূধন্য ‘ণ’ হয় না। ঘাঁটি বাংলা, বিদেশী ও সংস্কৃত ‘সৎ’ প্রত্যর যুক্ত শব্দে ‘ষ’ হয় না। -শিক্ষাসাগর ডেস্ক
×