ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ॥ উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ॥ উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান

প্রথম অধ্যায়ে তোমরা যা শিখবে- কোষ (ঈবষষ) : জীবদেহের গঠন ও কাজের একক যা স্বনির্ভর ও আত্মপ্রজননশীল, বৈষম্যভেদ্য পর্দা দিয়ে পরিবেষ্টিত নিদিষ্ট পরিমান প্রোটোপ্লাজম নিয়ে গঠিত এবং পূর্বতন কোষ থেকে সৃষ্ট তাকে কোষ (ঈবষষ) বলে। কোষের প্রকারভেদ (ঞুঢ়বং ড়ভ ঈবষষ) : ক) শারীরবৃত্তীয় কাজের ভিত্তিতে: ১। দেহ কোষ (ঝড়সধঃরপ পবষষ), ২। জনন কোষ (জবঢ়ৎড়ফঁপঃরাব পবষষ) খ) নিউক্লিয়াসের গঠনের ভিত্তিতে: ১। আদি কোষ (চৎড়শধৎুড়ঃরপ পবষষ), ২। প্রকৃত কোষ (ঊঁশধৎুড়ঃরপ পবষষ) জীবদেহে দুই ধরনের কোষ দেখা যায়: উদ্ভিদকোষ ও প্রাণিকোষ। উদ্ভিদ কোষ (চষধহঃ পবষষ) : উদ্ভিদ কোষ ঃ উদ্ভিদদেহের গঠন ও কার্যের একককে উদ্ভিদকোষ বলে। উদ্ভিদের জড় কোষপ্রাচীর থাকে । কোষে থাকে বিভিন্ন কোষ অঙ্গাণু, যেমন- কোষঝিল্লি, প্রোটোপ্লাজম, সাইটোপ্লাজম, ক্লোরোপ্লাস্ট, নিউক্লিয়াস, গলগিবডি, রাইবোজোম, লাইসোজোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, মাইটোকনড্রিয়া, কোষ গহ্বর । কোষপ্রাচীর: কোষ প্রাচীর এর অবস্থান, রাসায়নিক গঠন ও কাজ কোষপ্রাচীর (ঈবষষ ধিষষ) ঃ উদ্ভিদকোষের ঝিল্লীকে ঘিরে অবস্থিত, কোষের সজীব অংশ থেকে ক্ষরিত এবং সেলুলোজ ও লিগনিন বা কাইটিন দিয়ে গঠিত শক্ত, পুরু ও ছিদ্রযুক্ত জড় আবরণীকে কোষপ্রাচীর বলে। রেণু ও গ্যামিট ছাড়া সকল উদ্ভিদকোষে এ প্রাচীর উপস্থিত। কোষের অবস্থান ও বয়স ভেদে কোষপ্রাচীর সূক্ষ্ম অথবা স্থূল এবং মসৃণ বা কারুকার্যময় হতে পারে। কোষপ্রাচীরের গঠন ও আকৃতি সাধারণত কোষের শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপের ভিন্নতার উপরেই নির্ভরশীল। রবার্ট হুক ১৬৬৫ সালে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে যে কোষ দেখেছিলেন তা ছিল মূলত কোষপ্রাচীর। কোষপ্রাচীরের গঠন ঃ কোষপ্রাচীরের প্রধান উপাদান হল সেলুলোজ। প্রায় একশ সেলুলোজ চেইন মিলিতভাবে একটি ক্রিস্টালাইন মাইসেলিস (সরপবষষবং) গঠন করে। কোষপ্রাচীরের কাজ ঃ ১। কোষকে নির্দিষ্ট আকৃতি দান করে। ২। বাইরের পরিবেশ থেকে সজিব প্রোটাপ্লাজমকে সার্বিকভাবে রক্ষা করে। ৩। কোষের দৃঢ়তা দান করে। শিক্ষার্থীর ক্লাশের কাজ: কোষ কয় ধরনের ও কী কী? যা শিক্ষনীয়: উদ্ভিদকোষের বিভিন্ন অঙ্গাণুসমুহের নাম, কোষপ্রাচীর কী? এর গঠন ও কাজ বর্ণনা করো। উদ্ভিদকোষের চিহ্নিত চিত্র অংকন করে একটি পোস্টার তৈরি কর। প্রাণিকোষ: প্রাণিদেহের গঠন ও কার্যের একককে প্রাণিকোষ বলে। প্রাণিকোষে জড় কোষপ্রাচীর থাকে না। কোষে থাকে বিভিন্ন কোষ অঙ্গাণু, যেমন- কোষ ঝিল্লি, প্রোটোপ্লাজম, সাইটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াস, গলগিবডি, রাইবোজোম, লাইসোজোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, মাইটোকনড্রিয়া, কোষ গহ্বর, মাইল্ডোটিউবিউলস্, সেন্ট্রোসোম। প্লাজমামেমব্রেন : প্লাজমামেমব্রেন এর অবস্থান, রাসায়নিক গঠন ও কাজ। ফ্লুইড মোজাইক মডেল ঃ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে সিঙ্গার এবং নিকলসন প্রবর্তিত মডেলটি ফু¬ইড মোজাইক মডেল নামে পরিচিত। ক) ফসফোলিপিড দু’টি স্তরে বিন্যস্ত। দ্বিতীয় অধ্যায়ে তোমরা যা শিখবে- ১। প্রাণিকোষের গঠন ব্যাখ্যা করতে পারবে। ২। প্লাজমামেমব্রেনের রাসায়নিক গঠন বর্ণনা করতে পারবে। ৩। ফ্লুইড মোজাইক মডেল বর্ণনা করতে পারবে। পাঠ শিরোনাম: ক) প্রাণিকোষের গঠন, প্লাজমামেমব্রেন এর অবস্থান, রাসায়নিক গঠন ও কাজ র) একটি প্রান্ত পানি গ্রাহী মস্তক, রর) অন্য প্রান্ত পানি বিদ্বেষী লেজ। ফসফোলিপিড অণুর ফাঁকে ফাঁকে কোলেস্টেরল অণু থাকে। (খ) লিপিড বাইলেয়ার ঃ ফসফেলিপিড দিয়ে গঠিত। এতে প্রাণিগ্রাহী মাথা ও পানিবিদ্বেষী লেজ আছে। (গ) মেমব্রেন প্রোটিন ঃ তিন ধরনের প্রোটিনশনাক্ত করা হয়েছে। ১) প্রান্তীয় প্রোটিন, ২) অন্তর্নিহিত প্রোটিন, ৩) আন্তঃঝিল্লি প্রোটিন (ঘ) গ্লাইকোক্যালিক্স ঃ গ্লাইকোপ্রোটিন ও গ্লাইকোলিপিড কে একত্রে গ্লাইকোক্যালিক্স বলা হয়। (ঙ) কোলেস্টেরল ঃ প্রাণিকোষের ঝিল্লীতে এটি অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে। প্লাজমামেমব্রেনের কাজ: ১) কোষের সজীব অংশকে রক্ষা করা। ২) কোষের নির্দিষ্ট আকৃতি প্রদান করা। প্রাণিকোষের অঙ্গাণুর নামগুলো কী কী? প্রাণিকোষের অঙ্গাণুর গঠন ও কাজ বর্ণনা কর, ফ্লুইড মোজাইক মডেল কী? প্রাণিকোষ ও ফ্লুইড মোজাইক মডেলের চিহ্নিত চিত্র অংকন কর। সাইটোপ্লাজম (ঈুঃড়ঢ়ষধংস) প্লাজমা মেমব্রেন থেকে নিউক্লিয়ার মেমব্রেন পর্যন্ত বিস্তৃত সজীব, ঈষদচ্ছ, দানাদার ও অর্ধতরল প্রোটোপ্লাজমীয় পদার্থকে সাইটোপ্লাজম বলে। এর মধ্যে বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গাণু ভাসমান অবস্থায় থাকে। সজীব কোষের সাইটোপ্লাজম দুটি স্পষ্ট অবস্থা চযধংব) নিয়ে গঠিত। যথা: ১) সাইটোসল (ঈুঃড়ংড়ষ), ২) কোষীয় অঙ্গাণু (ঈবষষ ঙৎমধহবষষবং)। সাইটোসলকে ঘনত্ব অনুযায়ী দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা: ১. এক্টোপ্লাজম (ঊপঃড়ঢ়ষধংস), ২. এন্ডোপ্লাজম (ঊহফড়ঢ়ষধংস) কোষীয় অঙ্গাণু (ঈবষষ ঙৎমধহবষষবং): আবরণীবদ্ধ কোষীয় অঙ্গাণু এ ধরনের কোষীয় অঙ্গাণুগুলো সুনির্দিষ্ট আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে। যেমন- মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা, গলগি বডি, লাইসোসোম, ভ্যাকুওল, পারঅক্সিসোম, ভেসিক্ল। আবরণীবিহীন কোষীয় অঙ্গাণু এ ধরনের কোষীয় অঙ্গাণুগুলো কোনো আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে না। যেমন- রাইবোসোম, প্রোটিয়োসোম, সেন্ট্রিওল, মাইক্রোফিলামেন্ট, ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট, মাইক্রোটিউবিউলস। রাইবোসোম এর অবস্থান গঠন ও কাজ : রাইবোসোম : সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় বিরাজমান যে দানাদার কনায় প্রোটিন সংশ্লেষণ ঘটে তাকে রাইবোসোম বলে। প্রকার ঃ আকার ও সেডিমেন্টেশন হিসাবে এটি দু’প্রকার। যথা ঃ ৭০ং এবং ৮০ং গঠন ঃ এর প্রধান উপাদান হচ্ছে জঘঅ ও প্রোটিন । প্রোটিন সংশ্লেষণ করা । রাইবোসোম : সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় বিরাজমান অথবা অন্তঃপ্লাজমীয় জালিকার গায়ে অবস্থিত যে দানাদার কণায় প্রোটিন সংশ্লেষণ ঘটে তাকে রাইবোসোম বলে। বিজ্ঞানী ক্লড (ঈষধঁফব) ১৯৪০ সালে এটি সর্বপ্রম আবিষ্কার করেন। পরে প্যালাডে (চধষধফব ১৯৫৫) প্রাণীকোষে এর ইলেকট্রনিক আণুবীক্ষণিক গঠন পর্যবেক্ষণ করেন।
×