ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ ফজলুর রহিম রিমন

নবম শ্রেণীর হিসাববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

নবম শ্রেণীর হিসাববিজ্ঞান

প্রভাষক হিসাব বিজ্ঞান হলিফ্লাওয়ার মডেল কলেজ ঝিগাতলা, ঢাকা। ইমেইল- [email protected] বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজ তোমাদের জন্য রয়েছে দ্বিতীয় অধ্যায়ের ওপর আলোচনা – এই অধ্যায় তোমাদের জন্য খুবেই গুরত্বপূর্ণ কেননা এই অধ্যায়টি ভালো করে বুঝতে না পারলে পরবর্তী অধ্যায়গুলো জটিল মনে হবে। তাই ভালো করে অধ্যায়টি শেষ করবে। লেনদেন লেনদেন শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুইটি শব্দ পাওয়া যায়, যেমন লেন +দেন। লেন শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো গ্রহন বা নেওয়া, অন্যদিকে দেন শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো প্রদান বা দেওয়া, যার ইংরেজী রূপ হলো এরাব ধহফ ঞধশব। মূলত ঘটনা হতে লেনদেনের উৎপত্তি। আমাদের দৈনন্দিন জীবিনে যা কিছু ঘটে তাই ঘটনা। ঘটনা ২ প্রকার যথা আর্থিক ঘটনা (টাকার সাথে সম্পর্কিত, যেমন ৫ টাকা দিয়ে কলম ক্রয়) ও অনার্থিক ঘটনা (টাকার সাথে সম্পর্ক নেই যেমন টিভি দেখা)। প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে কমপক্ষে ২টি পক্ষ জড়িত থাকে। এক পক্ষ সুবিধা গ্রহন করে আর অন্য পক্ষ সুবিধা প্রদান করে। যেমন তুমি তোমার বন্ধুকে ৫০০ টাকা প্রদান করলে, এটি একটি ঘটনা এবং এখানে ২টি পক্ষ রয়েছে। এখানে তোমার বন্ধু সুবিধা পেল এবং তুমি সুবিধা প্রদান করলে। তবে সব ঘটনা লেনদেন নয়। শুধু মাত্র ব্যবসায় সংক্রান্ত আর্থিক ঘটনা যা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় সে ঘটনাকে কে আমরা লেনদেন বলবো। শিক্ষার্থী বন্ধুরা একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, হিসাববিজ্ঞানের ভাষায় কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিষ্ঠানকে এক ভাবা যাবেনা। মালিক ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক থাকবে, তবে মালিক ও প্রতিষ্ঠানকে আলাদা দুইটি স্বত্ত্বা বিবেচনা করতে হবে। হিসাববিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করে। অন্য কারো স্বার্থ নয়। নিচের ছকের মাধ্যামে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলো- ঘটনা ১. আর্থিক ঘটনা ক) ব্যবসায় সংক্রান্ত আর্থিক ঘটনা খ) ব্যবসায় সংক্রান্ত নয় এমন আর্থিক ঘটনা ২. অনার্থিক ঘটনা পরিশেষে বলা যায় যে, প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় এমন ঘটনাকে লেনদেন বলে। লেনদেনের বৈশিষ্ট্যঃ লেনদেনের অনেক গুলো বৈশিষ্ট্য থাকলেও মূলত কোন ঘটনা লেনদেন হতে হলে উক্ত ঘটনার কমপক্ষে ৩টি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। বৈশিষ্ট্য গুলো – ১. দুইটি পক্ষ বা দ্বৈত স্বত্ত্বাঃ প্রতিটি লেনদেনে কমপক্ষে দুইটি পক্ষ থাকতে হবে।যেমন –ব্যবসায়ের জন্য পন্য ক্রয় ৫০০০ টাকা। এই ঘটনায় ক্রয় হিসাব ও নগদান হিসাব দুইটি পক্ষ বিদ্যমান তাই এটি লেনদেন। ২. অর্থের অংকে পরিমাপযোগ্যঃ কোন ঘটনা লেনদেন হতে হলে উক্ত ঘটনায় অবশ্যই টাকার পরিমান উল্লেখ থাকতে হবে। যেমন ২০ টাকা দিয়ে একটি কলম ক্রয় করা হলো, এখানে টাকার অংক(২০ টাকা) উল্লেখ করা আছে তাই এটি লেনদেন। ৩. আর্থিক অবস্থার পরিবর্তনঃ কোন ঘটনা দ্বারা যদি ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে তবে ঘটনাটি লেনদেন হবে। আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন না ঘটলে লেনদেন হবে না। যেমন ১০,০০০ টাকার পন্য বিক্রয় করা হয়েছে এবং ৫০০০ টাকার পন্য বিক্রয়ের ফরমায়েশ পাওয়া গেছে। দুইটি ঘটনার মধ্যে প্রথম ঘটনার দ্বারা ব্যবসায়ের নগদ টাকা বৃদ্ধি পাবে ও বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে, তাই প্রথম ঘটনাটি লেনদেন। অপর দিকে দ্বিতীয় ঘটনায় ফরমায়েশ পাওয়ার ফলে ব্যবসায়ের নগদ টাকা বা বিক্রয় কোনটির পরিবর্তন ঘটেনি, তাই এটি লেনদেন নয়। চলবে...
×