ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শীর্ষে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক

১৪ ব্যাংকের স্প্রেড বেশি

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

১৪ ব্যাংকের স্প্রেড বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মে কোন ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৪টি ব্যাংক স্প্রেডের এ সীমা লঙ্ঘন করেছে। আর এ সীমা লঙ্ঘনে সবার শীর্ষে রয়েছে বেসরকারী খাতের ব্র্যাক ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংক এবং বিদেশী খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। জানা গেছে, সুলভ বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঋণের সুদহার এক অঙ্কের ঘরে নামানোর দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি অনুযায়ী, ঋণের সুদহার কমাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় সর্বশেষ ‘স্প্রেড’ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে যেসব ব্যাংকের স্প্রেড সীমা অতিক্রম করবে তাদের ক্যামেলস রেটিং নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত সীমার বাইরে থাকা ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে স্প্রেড কমানোর দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৪ ব্যাংককে ৩০ সেপ্টেম্বর, ৬ ব্যাংককে ৩০ অক্টোবর, এক ব্যাংককে ৩০ নবেম্বর ও দুটি ব্যাংকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। নবেম্বর পর্যন্ত হিসাবে ওই নির্দেশনা পালন করেনি অন্তত ১২টি ব্যাংক। কারণ ওই নির্দেশনা পরিপালন হলে নবেম্বর পর্যন্ত মাত্র দুটি ব্যাংকের স্প্রেড নির্ধারিত সীমার বাইরে থাকার কথা। তবে সার্বিকভাবে আমানতের সুদের পাশাপাশি ঋণের সুদহার কমতে থাকায় ব্যাংকিং খাতে নবেম্বর শেষে গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ, আগের মাস অক্টোবরে যা ছিল ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। এদিকে, নবেম্বর মাসে প্রথমবার ঋণের গড় সুদহার এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে। এ মাসে ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ। এ মাসে আমানতের গড় সুদ দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা অক্টোবর মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নবেম্বর মাসে রূপালী ব্যাংক, ব্র্যাক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, সিটি ব্যাংক এনএ, উরি ব্যাংক ও এইচএসবিসির স্প্রেড নির্ধারিত সীমার বাইরে রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের। ব্র্যাক ব্যাংকের স্প্রেড ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ আর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এছাড়া রূপালী ব্যাংকের ৫ দশমিক ২৭, এবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ০৯, আইএফআইসি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৮৯, উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫৬, ওয়ান ব্যাংকের ৫ দশমিক ৩৭, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫ দশমিক ১১, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ৭১, উরি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৬২, এইচএসবিসির ৫ দশমিক ৮৭ এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও সিটি ব্যাংক এনএর ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, স্প্রেড নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে আমরা বরাবরই তাগাদা দিয়ে আসছি। এর আগে এ তালিকায় ২০টি ব্যাংক থাকলেও এবার ১৪টিতে নেমে এসেছে।
×