ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আর টেনিসে ফেরার ইচ্ছে নেই ইভানোভিচের

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২ জানুয়ারি ২০১৭

আর টেনিসে ফেরার ইচ্ছে নেই ইভানোভিচের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বয়সে পঁয়ত্রিশকেও ছাড়িয়ে গেছেন সেরেনা উইলিয়ামস। টেনিস কোর্টে এখনও অপ্রতিরোধ্য আমেরিকান তারকা। ত্রিশে পা রাখতে যাওয়া শারাপোভা এই বয়সেও নতুন করে কোর্টে ফিরতে মরিয়া। অথচ মাত্র ২৯ বছর বয়সেই টেনিসকে বিদায় বলে দিয়েছেন সার্বিয়ার আনা ইভানোভিচ। এতে বিস্মিত টেনিস বিশ্বের অনেকেই। মূলত ইনজুরির বিপক্ষে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়েই র‌্যাকেট তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে নিজের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট আনা ইভানোভিচ। তাই টেনিস কোর্টে আর ফেরার কোন ইচ্ছে নেই তার। এমনকি কোচ হিসেবেও কোর্টে ফিরবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ১৫টি ডব্লিউটিএ শিরোপার মালিক। অবসরের পর এক সাক্ষাতকারে আনা ইভানোভিচ নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে জানান, চোটের বিপক্ষে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। এক পর্যায়ে হৃদয়-মন আর সায় দিচ্ছিল না তার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই চোটের সঙ্গে লড়াই করেছি আমি। চোট কাটিয়ে ফেরাটা সবসময়ই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কোর্টে কিংবা কোর্টের বাইরে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তারপরও আবার সেই ফ্রেমে ফেরা হয়ে ওঠে না। যে কারণেই আমার শরীর এবং হৃদয় আর সামনের দিকে এগুতে সায় দিচ্ছিল না।’ এ সময় টেনিস কোর্টে ফেরার আর কোন আগ্রহ নেই উল্লেখ করে ইভানোভিচ আরও বলেন, ‘একজন কোচ হিসেবেও টেনিসে ফেরার ইচ্ছে আমার নেই। আমার যে ক্যারিয়ার ছিল তাতে আমি সন্তুষ্ট। এখন ভিন্ন কিছু নিয়ে চেষ্টা করার সময়।’ টেলিভিশনে যুগোসøাভিয়ার মনিকা সেলেসের খেলা দেখে বাবা-মায়ের কাছে র‌্যাকেট কেনার বায়না ধরেন আনা ইভানোভিচ। পাঁচ বছর বয়সী ছোট্ট সেই বালিকার আবদার তখন ফেলে দিতে পারেনি তার পরিবার। তখন থেকেই টেনিসের প্রেমে মজেছিলেন তিনি। এরপর গত একদশক ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন ইভানোভিচ। তবে স্বপ্নের গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান ২০০৮ সালে। সে বছরই প্রথম কোন মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। সেবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করলেও স্বপ্নভঙ্গ হয় সার্বিয়ান তারকার। রাশিয়ার মারিয়া শারাপোভার কাছে হেরে যান তিনি। তারপরও লড়াই চালিয়ে যান ইভানোভিচ। ফ্রেঞ্চ ওপেনে আবারও ফাইনালে জায়গা করে নেন টেনিস কোর্টের এই সুদর্শনা। এবার আর স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি প্রতিপক্ষ। ফাইনালে দিনারা সাফিনাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। টেনিস কোর্টে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দেয়ার সৌজন্যে সে বছরই বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটি দখল করে নেন ইভানোভিচ। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ নয় বছর। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে আর কখনই গ্র্যান্ডসøাম জিততে পারেননি তিনি। তবে কখনই হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েননি তিনি। সবসময়ই কোর্টে থাকার চেষ্টা করেছেন তিনি। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বদা নিজের সেরাটা দিতে মত্ত ছিলেন ইভানোভিচ। কিন্তু অবশেষে চোটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে অবসর নিতে বাধ্য হলেন সাবেক নাম্বার ওয়ান তারকা। তবে বিদায় বলার এই সিদ্ধান্তটা খুব সহজ ছিল না ইভানোভিচের, ‘আপনি খুব ভালবাসেন সেরকম কোন কিছু থেকে সরে আসাটা খুবই কঠিন ব্যাপার।’ কোর্টের লড়াইয়ে সার্বিয়ার ইভানোভিচ নিষ্প্রভ থাকলেও প্রেমের মাঠে কিন্তু দুর্দান্ত। প্রেমিক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্মান তারকা বাস্তিয়ান শোয়েইনস্টেইগারকে যে গত বছরই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। দুই জগতের দুই তারকা হয়েও দারুণ উপভোগ্য সময় পার করছেন তারা। একজন টেনিসে আরেকজন ফুটবলে। দুই তারকা দুই দেশের হলেও মনের টানে মিলে গেছেন একই বিন্দুতে। তাদের প্রেমের সূত্রপাত ছিল ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। হাতে-হাত রেখে নিউইয়র্কের রাস্তায় আনা ইভানোভিচ আর বাস্তিয়ান শোয়েইনস্টেইগারকে হাঁটতে দেখা যায়। এরপর গত বছর বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
×