ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন

২১ দেশের অংশগ্রহণে বাণিজ্যমেলা আজ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১ জানুয়ারি ২০১৭

২১ দেশের অংশগ্রহণে বাণিজ্যমেলা আজ শুরু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশসহ ২১ দেশের অংশগ্রহণে শুরু হচ্ছে ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০১৭। আজ রবিবার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে সকাল ১০টায় মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্রেতা-দর্শনার্থীর সমাগমের সুবিধার্থে অন্যান্যবারের তুলনায় মেলা প্রাঙ্গণে বাড়ানো হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মেলার বিভিন্ন পয়েন্টে মোট ১৪০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এবারের মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা গতবারের তুলনায় দেড়গুণ বেশি থাকছে। সেই সঙ্গে টহল বুথের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাণিজ্যমেলা সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। প্রতিবারের মতো বাণিজ্যমেলার আয়োজন করছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর মেলায় বাংলাদেশসহ ২১টি দেশ অংশগ্রহণ করছে। দেশগুলো ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, হংকং, জাপান, আরব আমিরাত, মরিশাস, ঘানা, মরক্কো, ভুটান। তিনি জানান, মেলায় এবারও সাধারণ, প্রিমিয়ার, সংরক্ষিত, বিদেশী, সাধারণ মিনি, সংরক্ষিত মিনি, প্রিমিয়ার মিনি, বিদেশী মিনি প্যাভিলিয়ন, সাধারণ ও প্রিমিয়ার স্টল, ফুড স্টল, রেস্তরাঁসহ ১৩ ক্যাটাগরির ৫৮০টি স্টল থাকবে। থাকবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এছাড়াও থাকবে একটি ই-শপ, দুটি শিশুপার্ক, তিনটি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা, মা ও শিশু কেন্দ্র। বিনোদনের জন্য মাঠের মধ্যে ফুলের বাগান, এটিএম বুথ। মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র‌্যাব, আনসার এবং বেসরকারী সিকিউরিটি ফোর্সসহ ১৪০টি সিসি ক্যামেরা থাকবে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে দেশী-বিদেশী পণ্যের সঙ্গে ভোক্তার পরিচিত হওয়ার সুযোগ বাড়ে। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদকের মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ যোগায় এবং নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র স্থাপনে ৬০ বিঘা জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী ৩ বছরের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে। তবে গত বছরই আজকের দিনে একই প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেছিলেন, ২০১৮ সালের পর আর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে হবে না। তখন এই মেলা হবে ঢাকার পূর্বাচলে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র নির্মাণ হলে আমরা সেখানে ১২ মাসই মেলার আয়োজন করতে পারব। তবে আগারগাঁওয়ের এই স্থানেও অন্তত বছরে একদিন বাণিজ্যমেলা করা হবে। প্রসঙ্গত, পূর্বাচল উপশহরে ২০ একর জমিতে এর স্থায়ী কাঠামো গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’র নক্সার অনুমোদন দিয়েছেন। এতে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এতে চীন অনুদান দিচ্ছে ৬২৫ কোটি টাকা। বাকিটা সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন। বাণিজ্যমেলায় ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ২৫ কোটি টাকা, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি টাকা, ২০১৪ সালে ৮০ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার রফতানির আদেশ পাওয়া গেছে বলে জানান মন্ত্রী। এবার আরও বেশি রফতানির আদেশ পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি শুরু হয়ে মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলায় প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য প্রবেশ টিকেটের মূল্য ৩০ ও অপ্রাপ্ত বয়স্কের জন্য ২০ টাকা রাখা হয়েছে। শনিবার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের মতো এবারও মেলার গেট হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের মতো।
×