ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চার বিজ্ঞানীকে আজীবন সম্মাননা

দেশের স্বার্থে জনবান্ধব বিজ্ঞানীও দরকার ॥ মতিয়া চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১ জানুয়ারি ২০১৭

দেশের স্বার্থে জনবান্ধব বিজ্ঞানীও দরকার ॥ মতিয়া চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিজ্ঞানীদের জনবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দেশের স্বার্থে জনবান্ধব সরকার যেমন দরকার তেমনি জনবান্ধব বিজ্ঞানীও দরকার। কৃষি কী শিল্প, আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গ্রাহক সাধারণ মানুষ। কৃষক যদি আপনাদের আবিষ্কার গ্রহণ না করে সে প্রযুক্তি আমরা সহজে মাঠে নিয়ে যেতে পারব না। তা ফাইল বা কৌটায় বন্দী হয়ে থাকবে। তাই সাধারণ মানুষের সন্তুষ্টির দিকে খেয়াল রেখেই আবিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য রাখতে হবে তারা যেন কোন একটি প্রযুক্তিকেই আঁকড়ে ধরে না থাকেন। যদিও উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি তার সন্তানতুল্য। শনিবার সকালে রাজধানীর বিসিএসআইআর অফিসার্স ক্লাবে বিসিএসআইআরের ৪ বিজ্ঞানীকে আজীবন সম্মাননা প্রদান ও বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ সময় আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত চার বিজ্ঞানীর হাতে সম্মাননা তুলে দেন প্রধান অতিথি মতিয়া চৌধুরী। সম্মাননাপ্রাপ্ত বিজ্ঞানীরা হলেন- সৈয়দ ফজলে রাব্বী, ড. আবদুল খালেক, ড. শামীম জাহাঙ্গীর আহমেদ ও ড. মুহাম্মদ কবিরউল্যা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখানে যেসব বিজ্ঞানীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে তারা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে গবেষণা করেছেন। এ দেশে অবস্থান করে বিজ্ঞান গবেষণায় যারা ব্রতী রয়েছেন, স্ব স্ব গবেষণার ক্ষেত্রে তারা যে অবদান রেখেছেনÑ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে এখানকার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি খুব বেশি প্রচারিত বা ব্যবহৃত তা বলা যাবে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিজ্ঞানমনস্ক। এ সরকারের আমলে দেশকে সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের কাজে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও প্রণোদনা দেয়া উচিত। যারা ভাল করবে তাদের উৎসাহিত করতে হবে। আমরা তাই করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞান গবেষণায় শেখ হাসিনার সরকারের আনুকূল্য থাকায় ড. মাকসুদুল আলম পাটের জীবন রহস্য আবিষ্কার করতে পেরেছেন। যখন জানতে পেরেছি দেশের ছেলে বিদেশে বসে নানা ধরনের আবিষ্কার করছেন তাকে মুঠোফোনে কল করে দেশে আসার আহ্বান জানাই। দেশে এসে সে জানাল, জিনম আবিষ্কারে কিছু যন্ত্রপাতি লাগবে। শেখ হাসিনা ৩৩ কোটি টাকা দিলেন, অর্থনৈতিকভাবে দেশ তখন এতটা সচ্ছল ছিল না। মাকসুদুল আলম বললেন, অর্থ ব্যয়ে আমাকে স্বাধীনতা দিতে হবে, যাদের নিয়ে গবেষণা করব তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রেও। আমরা তাকে পুরো স্বাধীনতা দিয়েছি। ওই কাজগুলো অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে করা হয়। শেখ হাসনিার সরকারের দূরদর্শিতায় বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশ পাটের জীবন রহস্য আবিষ্কার করে। এ বিষয়ে ভারত ও চীনও গবেষণা করছিল। তাদের অবাক করে বাংলাদেশ পাটের জীবন রহস্য আবিষ্কারে সক্ষম হয়। এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, যতক্ষণ তার হাতে দেশ, ততক্ষণ এগিয়ে যাবে বিজ্ঞানমনস্ক বাংলাদেশ। ততক্ষণ এগিয়ে যাবে কৃষি, মৎস্য ও বিজ্ঞান গবেষণা। তিনি বলেন, ইতোপূর্বের কোন সরকারের রূপকল্প অর্থাৎ পরিকল্পনা ছিল না। একমাত্র বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাই প্রথম রূপকল্প ঘোষণা করে মধ্যম ও উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা গড়াই এ সরকারের লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর মতিঝিলের দিকে গেলে পোড়া কাগজ পাওয়া যেত। সম্মাননাপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ কবিরউল্যা নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আশা করি সম্মাননা প্রদানের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অনেক প্রসেস পদ্ধতি শিল্পকারখানায় গিয়ে ফেরত আসছে, এতে শিল্পকারখানায় কাজের গতি মন্থর হচ্ছে। আমরা যেসব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছি তা আমার ভাষায় অনেক ক্ষেত্রেই ইমম্যাচিউরড (অপরিপক্ব)। এক্ষেত্রে বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা যেন আরও মনযোগ দেয়। ওই অনুষ্ঠানে কাজী আক্তারুজ্জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেনÑ বিসিএসআইরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান ও বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক আহমেদ।
×