ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরে এক শ’ দিনে ঘর গোছাবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১ জানুয়ারি ২০১৭

নতুন বছরে এক শ’ দিনে ঘর গোছাবে আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল ও সংগঠিত করতে নতুন বছরের প্রথম ১শ’ দিনের মধ্যে ঘর গোছানোর টার্গেট নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৭ সালেই নির্বাচনকেন্দ্রিক সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে চায় দলটি। এটাই দলের নতুন বছরের নতুন টার্গেট। আর এ লক্ষ্যে সংগঠন গোছানো, কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দলাদলি দূর করা, সাংগঠনিক সফরে বের হয়ে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার মতো কর্মসূচী নিয়ে এগিয়ে যাবে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন সূত্রে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে আগামী সংসদ নির্বাচনে বছরজুড়ে সৎ, যোগ্য, মেধাবী, সাহসী ও জনপ্রিয় প্রার্থী বাছাই করবে আওয়ামী লীগ। নীতি-নির্ধারকরা জানান, বর্তমান সংসদ সদস্য হিসেবে যারা আছেন তাদের মধ্য থেকে অন্তত অর্ধেককে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে আর দলীয় মনোনয়ন নাও দেয়া হতে পারে। এসব আসনের জন্য তাই জনপ্রিয় মুখ এ বছরের মধ্যেই খুঁজে বের করা হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক বিরোধী শক্তিকে মোকাবিলা করার মতো শক্তিশালী সংগঠনও এ বছরই গড়ে তোলা হবে। এর জন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে বাছাই করা হবে সাহসী নেতৃত্ব। শনিবার ধানম-ির একটি কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগের নতুন বছরের কর্মসূচী নিয়ে আয়োজিত সভায় এবং বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্জন সমগ্র বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। নতুন বছরে প্রথম ১শ’ দিন ঘরের ভেতরে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো সমাধান করতে হবে। তাছাড়া বিপদ এখনও যায়নি। নতুন বছরের জন্য এই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন বছরে আমাদের দুটি কাজ করতে হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ মোকাবেলা। নির্বাচনে যেমন জিততে হবে তেমনি সাম্প্রদায়িক উগ্রতাকেও নির্মূল করতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বিজয়কে সুসংহত করতে হবে। সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ আমাদের বিজয়ের পথে বাধা। এই বাধাও অতিক্রম করে আমাদের পুরোপুরি বিজয়ী হতে হবে। তিনি বলেন, ‘আজ নির্দ্বিধায় বলতে পারি, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের ফেলা আসা বছরের উন্নয়ন ও অর্জনের প্রাপ্তি অনেক অনেক বেশি। এখন গর্ব করে বলছি, বুক উঁচু করে বলছি, বঙ্গবন্ধু, তুমি এ দেশ স্বাধীন করে ভুল করোনি।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, তোমার স্বপ্নের বাংলাদেশ আজ কেবল এগিয়ে যাচ্ছে। আর তোমার নেতৃত্বে একাত্তরে যাদের পরাজিত করেছি, তারা কেবল পিছিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান পিছিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় অন্তত ২৫ সূচকে পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। সেতুমন্ত্রী বলেন, হোলি আর্টিজান ও শোলাকিয়ার ঘটনা সাময়িকভাবে বিচলিত-ধৈর্যহারা করেছিল। কিন্তু দিশেহারা করতে পারেনি। এখনও শোলাকিয়া ও হোলি আর্টিজানের রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি। বিজয়ের মাসের শেষ দিনে আমাদের শপথ হবে, এই দুটি ট্রাজেডি থেকে বেরিয়ে আসব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উগ্রবাদীদের প্রতিরোধ করা হবে। অবশ্য জঙ্গীবাদ মোকাবিলায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা এখন সব জায়গায় ব্যর্থ। আন্দোলনে ও নির্বাচনে ব্যর্থ। সর্বশেষ প্রমাণ নারায়ণগঞ্জ। ব্যর্থ লোক শুধু নালিশ করে। বিএনপি এখন বাংলাদেশ নালিশ পার্টি।’ তিনি বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাচন সংবিধান বহির্ভূত নয়। আসলে বিএনপি মিথ্যাচারকে পুঁজি করে রাজনীতি করে। সংবিধানকে রক্তাক্ত যারা করেছেন তারাই এখন সংবিধানের কথা টেনে আনেন। এটা ভূতের মুখে রাম নামের মতো। ধানম-ির কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোঃ হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, ফারুক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল, দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট প্রমুখ।
×