ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চৌগাছায় লতাপাতার আড়ালে গণকবর

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬

চৌগাছায় লতাপাতার আড়ালে গণকবর

একাত্তরে বাংলাদেশের প্রথম মুক্ত ও স্বাধীন অঞ্চল হচ্ছে যশোর জেলার চৌগাছা। সেই প্রথম মুক্ত ও স্বাধীন অঞ্চলে অযতœ আর অবহেলায় বনজঙ্গলে ঢাকা পড়ে আছে শহীদদের গণকবর। স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও সংরক্ষণ করা হয়নি মুক্তিপাগল বীর শহীদদের এ সকল স্মৃতিচিহ্ন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানে বাঙালীর স্বাধীনতার ইতিহাস। সেই ইতিহাস যারা গড়েছেন, তাদের কতটুকু মনে রেখেছি আমরা? প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবস এলে শহীদদের স্মরণ করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়, কিন্তু সম্মান বা শ্রদ্ধাঞ্জলি জোটে না এসব শহীদদের কবরে। গরু-ছাগল চরে বেড়ায় বীরদের কবরের ওপর দিয়ে। বর্তমান প্রজন্মসহ অনেকেই জানে না এসব শহীদ ও তাদের গণকবরের ইতিকথা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে চৌগাছা উপজেলারও রয়েছে গৌরবময় অধ্যায়। এখানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষের সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রথম মুক্তির ঝা-া ওড়ে। ১১/১২টি সম্মুখ যুদ্ধসহ পাকহানাদার বাহিনীর হামলায় শহীদ হন অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে চৌগাছাতেই রয়েছে ডজনখানেক গণকবর। চৌগাছা ডাকবাংলার পাশে, আড়পাড়া গ্রামে, মাসিলা খাতের শাহ আখড়া, আফরা গ্রামে, সাঞ্চাডাঙ্গা কচুবিলা, পুড়াপাড়া কাটাখালের পাশে টেরীতলা রামকৃষ্ণপুর গ্রামে একাধিক গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। রামকৃঞ্চপুর মল্লিকদের বাঁশবাগানের গণকবরসহ এ উপজেলায় পাকবাহিনীর বর্বর ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত দু’একটি ছাড়া আর কোন গণকবর চিহ্নিত বা সংরক্ষণ করা হয়নি। লতা-পাতা আর আগাছা আঁকড়ে ধরে রয়েছে চির নিদ্রায় শায়িত শহীদদের রক্তেভেজা এসব গণকবর। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ড. নূর হোসেন ও সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার মোফাজ্জেল হোসেনসহ একাধিক মুক্তিযোদ্ধার মতে চৌগাছার গণকবর ও বধ্যভূমি সংরক্ষণ করার ব্যাপারটি আজ সময়ের দাবি। -সাজেদ রহমান, যশোর থেকে
×