ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রক্ষা পায়নি শ্মশান

কলাপাড়ায় খাস ও ভূমিহীনকে বন্দোবস্ত জমি দখল

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬

কলাপাড়ায় খাস ও ভূমিহীনকে বন্দোবস্ত জমি দখল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৩০ ডিসেম্বর ॥ পায়রাবন্দর প্রকল্প এরিয়াঘেঁষা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের সরকারী প্রায় ছয় একর খাস জমি এবং ভূমিহীনদের বস্তোবস্ত দেয়া হস্তান্তর অযোগ্য সাড়ে তেরো একর জমি দখল করে ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ছআনি রাখাইনপাড়ার একটি শ্মশানের কিছু জমি একই সঙ্গে দখলের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে জমির ধরন পরিবর্তন করে বালু ভরাটের কাজ চলছে। বাদ পড়েনি দখল থেকে টিয়াখালী নদীতীর। এমনকি স্লুইস সংযুক্ত বেড়িবাঁধের বাইরের খাল এবং খালেরপারে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ছইলা-কেওড়া গাছও কেটে ওই জমি দখল চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে এ বিপুল পরিমাণ জমি ভরাটের কাজ চলছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম সাদিকুর রহমান শুক্রবার সকালে ওই জমিতে ভরাটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। বন বিভাগও নড়েচড়ে বসেছে। লিখিত অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা গাজী আব্বাস উদ্দিন জানান, এমএম বিল্ডার্স ভূমিহীনদের মাঝে সরকারের বন্দোবস্ত দেয়া হস্তান্তর অযোগ্য চাষযোগ্য কৃষিজমি অবৈধভাবে এওয়াজ বদল দলিল এবং অনাত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও বেআইনীভাবে হেবা দলিল দেখিয়ে প্রায় ১৪ একর এবং সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত পাঁচ একর ৯১ শতক জমি ৪-৫টি বেকু মেশিন দিয়ে বালু ভরাট করে উঁচু করে যাচ্ছে। বর্তমানে এমএম বিল্ডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত লোকজন এ পরিমাণ জমি দখলে নিয়ে বালু ভরাটের কাজ চালাচ্ছে। এ জমির বর্তমান মূল্য অন্ততপক্ষে আড়াই কোটি টাকা। আব্বাস উদ্দিন জানান, খাস খতিয়ানের ৬৫৩, ৬৫৪, ৬৫৫, ৬৫৬, ৩১৭, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬ ও ৩২৭ নম্বর দাগের জমি দখল করে বাউন্ডারি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্দোবস্ত দেয়া ৬৫৩, ৬৫১, ৬৮২, ৬৮৩, ৬৮৪, ৬৮৫, ৬৮৬, ৬৮৭, ৬৫৮, ৬৫৯, ৬৬০ ও ৬৬১ দাগের জমি দখলে নেয়া হয়েছে। রাখাইন দামো জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের শ্মশানটি বেকু মেশিন দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আলহাজ নুরুল হক মুন্সি জানান, তার ক্রয় করা জমি দখল করে বাউন্ডারি দেয়া হচ্ছিল। তিনি বাধা দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ ছআনিপাড়া খালের সঙ্গে বেড়িবাঁধের বাইরের নদীর সঙ্গে সংযোগ খালটির আগাও বাঁধ দিয়ে দখল করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম সাদিকুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়ে তিনি বেকু মেশিনের চাবি জব্দ করে ভরাটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানালেন। এমএম গ্রুপ কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মোঃ মহিউদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। কর্মরত কোন কর্মচারী এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তারা দাবি করছেন এ জমি তাদের কেনা। তবে এসব জমিজমার কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত মোঃ খোকন মিয়া জানান, কার্ডের জমি কেনা আছে। তবে কোন খাস জমি নেই।
×