ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাহীন রেজা নূর

পাকিস্তানের নতুন বুজরুকি

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬

পাকিস্তানের নতুন বুজরুকি

সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলে খ্যাত পাকিস্তান আবারও নানা বুজরুকি শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী আজ সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটেছে পাকিস্তানী শাসকদের অবিমৃশ্যকারিতার কারণে। পবিত্র ইসলাম ধর্মকে একটি জঙ্গীবাদী ও হিংসাশ্রয়ী ধর্মরূপে রূপান্তরের এক উদ্ভট এবং ধ্বংসাত্মক খেলায় মেতে উঠেছে তারা। ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এই খেলার সূত্রপাত অবশ্য রসুলের (সা) ওফাতের পরপরই ঘটেছিল বলে প্রমাণ মিলবে। ওফাতের অব্যবহিত পরই ইসলাম ধর্মের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বিষয়ে নানা মতভেদ দেখা যায়। ক্রমান্বয়ে এই মতপার্থক্য এমনই রূপধারণ করতে থাকে যে, নানা ফেরকা, মাজহাব ইত্যাদি তৈরি হতে থাকে এই মতবিরোধের সূত্র ধরে। উমাইয়াদের সঙ্গে আব্বাসীয়দের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ কিংবা নিধনযজ্ঞ এবং অনুরূপভাবে ফাতেমিদের সঙ্গে অন্যান্য ইসলামপন্থীর উন্মত্ত হানাহানি ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে নিশ্চয়ই। এর সঙ্গে প্রকৃত ইসলাম, রসুলের (সা) আদর্শ বা শিক্ষা এবং পবিত্র কোরানের কোন নির্দেশনার যোগসূত্র নেই। ইসলাম দুনিয়াবি সকল প্রকার মোহ-লোভ-লালসা থেকে মানুষকে বিরত থাকার ও পরকালের প্রশান্তি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করে। তাই আমরা স্বয়ং রসুলকে (সা) এবং তার প্রকৃত অনুসারীদের জীবনের কোন অবস্থাতেই দুনিয়াবি মোহে আচ্ছন্ন থাকতে দেখি না। অতি সাধারণ মানের জীবনযাপন ও মজলুমদের জন্য সার্বক্ষণিক মমত্ব, দুনিয়ার নেশায় মশগুল মানুষের মনে অধ্যাত্ম চেতনা ও সত্যিকারের মানবপ্রেমের ফলগুধারা বইয়ে দেয়ার প্রচেষ্টায় নিমগ্ন থেকেছেন তারা। যে ব্যক্তি যত বেশি দুনিয়ায় আচ্ছন্ন, মোহমুক্তি তার জন্য তত বেশি সুদূরপরাহত হতে বাধ্য। তাই এই শ্রেণীর লোকের উদ্দেশেই পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে- ‘উহাদের ডাকিও না, উহারা আসিবে না।’ আরেকটি বিষয় এক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, ধর্ম নিয়ে কোন প্রকার বাড়াবাড়ি বা জবরদস্তির কোন অবকাশই নেই। যার যার ধর্ম তার তারÑ এই বাক্যের মধ্য দিয়ে সকল ধর্মের অস্তিত্বকে মেনে নেয়া হয়েছে। এর বিপরীতে ধর্মান্ধরা ইসলামের নামে মানুষের ওপর জবরদস্তি করার শিক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পিস টিভির কর্ণধার জাকির নায়েকের কথা স্মর্তব্য। পেশায় একজন চিকিৎসক এবং ইসলাম বিষয়ে কোন আলেম তো তিনি ননই, এমনকি অন্যকে ইসলামে দাখিল করানো বা মুসলমান বানাবার কোন ধর্মীয় এখতিয়ারও তার নেই। অথচ তা সত্ত্বে¡ও তিনি ইসলাম বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অন্যান্য ধর্মের প্রতি অবজ্ঞাসূচক উক্তি-মন্তব্য ইত্যাদির মাধ্যমে অন্যান্য ধর্মের অসারতা প্রমাণের যে চেষ্টা করেন তা যে অপরাপর ধর্মাবলম্বীদের জন্য অবমাননাকর এই সাধারণ বোধটুকুও তিনি বোধহয় খুইয়ে ফেলেছেন। তাই তার বিতর্ক-অনুষ্ঠানাদিতে তাকে প্রায়শই প্রশ্নকর্তার প্রতি বলতে শোনা যেত, এই প্রশ্নের উত্তর তিনি দেবেন, তবে শর্ত এই যে, মনঃপূত জবাব পেলে প্রশ্নকর্তা এই সমাবেশে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন। একজন মুসলমানকে সত্যবাদী, পরমতসহিষ্ণু, বিনয়ী, আল্লাহর অস্তিত্বের প্রশ্নে সাচ্চা ইমানদার, কারও প্রতি কোন প্রকার অসদাচরণ, জবরদস্তি, অবিচার, অন্যায় না করা, মোনাফিকি, ঠকবাজি, রগবাজি, ধোঁকাবাজি থেকে নিজেকে বিরত রাখা, অর্থ-সম্পদ-বিত্ত-বৈভবের প্রতি লালায়িত না হওয়া, পরিশ্রমী, মজলুমের সেবা করা, বিলাস-বৈভব-চাকচিক্য তথা দুনিয়াবি যাবতীয় স্থূল মজা লোটার মানসিকতা পরিহার করা, সব জীবের প্রতি সদয় হওয়া, নারী ও নারীর মর্যাদা রক্ষার ব্যাপারে সদা সজাগ থাকা তথা নারীকে ভোগের বস্তু মনে না করে মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সজাগ-সচেতন থাকা ইত্যাদিই হচ্ছে একজন মুসলমানের পরিচয়। কিন্তু আমরা সর্বত্রই ঠিক এই সকল গুণের বিপরীতে যত সব ভন্ডামিতে পূর্ণ মানুষের চেহারাই দেখতে পাই। যারা জীবনাচারের ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওপরে উল্লিখিত গুণাবলীর ধারে-কাছেও অবস্থান করেন না। একজন মুসলমান একজন সাচ্চা মানুষ হবেন সেটিই প্রত্যাশিত। একজন মুসলমানের কাছে তার সব প্রতিবেশী, নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ সমাজের সব মানুষ নিরাপদে থাকবে। এদের সকলকে হেফাজত করা মুসলমানের পবিত্র দায়িত্ব। অথচ এই অসাম্প্রদায়িক ধর্মটিকে দুনিয়ায় আচ্ছন্ন কিছু বিপথগামী প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে তাদের অপকর্ম আর অপব্যাখ্যার দ্বারা। তাবত বিশ্বই এখন পাকিস্তানকে ধর্মীয় সন্ত্রাসের দুর্গ মনে করে। ওই সন্ত্রাস আজ বিশ্বব্যাপী এক মহাসঙ্কট সৃষ্টি করেছে। আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, সুদান, নাইজিরিয়া, মিসর, ইয়ামেন প্রভৃতি দেশে আইএস, বোকো হারাম, মুসলিম ব্রাদারহুড ইত্যাদি সংগঠনের নামে যে সন্ত্রাস বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়াস চলছে এবং যার জের ধরে দুনিয়াব্যাপী সংঘাত-সংঘর্ষ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘনঘটারূপে প্রতিভাত হচ্ছে, এই সঙ্কট সৃষ্টিতে সৌদি পেট্রো-ডলারের বদৌলতে ওয়াহাবী মতবাদী অনেক ব্যক্তি, সংগঠন, এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। জাকির নায়েকের পিস টিভি ও তার এনজিও ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন এক্ষেত্রে যে জঙ্গীবাদী ও বিদ্বেষমূলক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিল তাতে ভারত তো বটেই, এমনকি মালয়েশিয়া, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে তার কুপ্রভাব পড়তে শুরু করে। এই বাস্তবতা অনুভবপূর্বক কিছুকাল আগে ভারতে ও বাংলাদেশে তার ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও পিস টিভির প্রচারণা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিককালে নওয়াই ওয়াক্ত ও ডেইলি পাকিস্তান পত্রিকার খবরে জানা যায় যে, সেখানকার কিছু ধর্মীয় সংগঠন পিস টিভি ও ওই ইসলামিক ফাউন্ডেশন পুনরায় চালুর ব্যাপারে দাবি তুলেছে। এদের মধ্যে দিফা-এ-পাকিস্তান কাউন্সিল ও জুই-এস প্রধান মাওলানা শমিউল হক, জেইউডি প্রধান হাফিজ সাঈদ ও অন্যান্য ধর্মীয় গ্রুপও রয়েছে। এ থেকেই তাদের জঙ্গীবাদী মতবাদের প্রতি সমর্থন দৃশ্যগোচর হয় বৈকি! এরা বলতে চায় যে, ভারতের মোদি সরকারকে ব্যবহার করে উগ্রবাদীরা এই টিভি ও ফাউন্ডেশনটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে দেখা যাবে যে, বিশ্বের বহু বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেম জাকির নায়েকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ও তার প্রচণ্ড সমালোচনা করেছেন। এর কয়েকটি নিদর্শন নিম্নে বর্ণিত হলো:- যুক্তরাজ্যের ২০ লাখ সুন্নি মুসলিমের প্রতিনিধিত্বকারী ব্রিটিশ মুসলিম ফোরামের মতে মুসলমানদের সম্পর্কে বিশ্বের খারাপ ধারণা রয়েছে যে, তারা গোঁড়ামিপূর্ণ, উদ্ধত এবং অসৎ, তা জাকির নায়েকের বক্তব্যে সমর্থন পায়। মুসলমান এবং অমুসলমান উভয়েরই জানা দরকার যে, তিনি মধ্যপন্থী ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করেন না। নায়েকের বিশেষ মতামতকে বলা হয় ‘ওয়াহাবীবাদ’, যা হচ্ছে ইসলামে বেশ নতুন একটি ধারা। গত কয়েক দশকে কোটি কোটি পেট্রো-ডলার দিয়ে সৌদিরা এই কট্টরপন্থী মতবাদকে মুসলমান জগতে ছড়িয়ে দিয়েছে, বিশেষ করে জাকির নায়েকের মতো লোকের মধ্য দিয়ে। অনেক সুশিক্ষিত মুসলমানের দৃষ্টিতে ওয়াহাবী মতবাদ হলো মুসলমান সমাজের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভাইরাস। অল-ইন্ডিয়া ওলেমা কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা মেহমুদ দরিয়াবাদী নায়েকের সম্পর্কে বলেছেনÑ ‘...তিনি কোন ‘আলেমও নন, কোন মুফতিও নন। তিনি যেভাবে ইচ্ছা ইসলাম অনুশীলন করতে পারেন; কিন্তু মঞ্চ থেকে তার ফতোয়া দেয়া উচিত না।’ সমাজবিজ্ঞানী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সৌদিরা মনে করে যে, সারাবিশ্বের মুসলমানদের শুদ্ধিবাদী সালাফি ইসলামে রূপান্তরে তাদের আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার আছে। নায়েকের এই অহঙ্কারী ওয়াহাবী মতবাদ ভারতের প্রচলিত সহনশীল ইসলামের বিপরীত। ইসলামী শরিয়ত এবং ধর্মনিরপেক্ষতার সম্পর্কে নায়েক দাবি করেন যে, ‘ভারতের মুসলমানরা চায় যেন ইসলামী আইন (শরিয়ত) ভারতের প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর জারি হয়, কারণ সেটা সবচেয়ে সহজ।’ যে সব মুসলমান সুফী, অলি-আউলিয়াদের সম্মান করে ও মাজারে যায় নায়েক তাদের বলেন ‘কবর পূজাকারী’। ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, পেট্রো-ডলার দিয়ে সৌদি আরব তাদের গোঁড়া ওয়াহাবী দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা মুসলিম জগতে। ২০০৮ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সুন্নি ইসলামী সংস্থা রাজা একাডেমি প্রথম জাকির নায়েকের টেলিভিশন প্রোগ্রাম বন্ধ করার দাবি করে। রাজা একাডেমির সদস্য ইবরাহিম তাহিল বলেনÑ ‘তিনি আগে খ্রীস্টানদের আক্রমণ করতেন; কিন্তু এখন তিনি সুন্নি মুসলমানদের বিরুদ্ধে।’ কিছু বিশিষ্ট ভারতীয় মুসলিম চিন্তাবিদ, যেমন সালমান খুরশিদ ও জাভেদ আখতার নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, তিনি ভারতীয় মুসলিম সমাজকে চরমপন্থী বানাতে চেষ্টা করছেন এবং জাতির মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করছেন। ভারতীয় মুসলমানদের বিরাট অংশ নায়েকের বিরুদ্ধে রাগ প্রকাশ করেছেন যে, তিনি সুফীদের ‘কবর পূজাকারী’ বলেন। জাকির নায়েকের দৃষ্টিতে ইসলামী ইতিহাসের মধ্যে যা কিছু আছে তা অবশ্যই ত্রুটিহীন এবং ইসলামী ইতিহাসের বাইরে যা কিছু আছে অবশ্যই ত্রুটিপূর্ণ ও খারাপ। তার দৃষ্টিতে তার নিজের মতামতের বাইরে যা কিছু আছে সবই তার কাছে জাহিলিয়া (অজ্ঞতা) এবং ইসলামী উম্মাহ্র মধ্যে যা কিছু আছে তা বিশুদ্ধ। এই মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে যখন নায়েক বিশ্বাসঘাতক ইয়াজিদের সম্পর্কে বলেছেন- ‘রাদি আল্লাহ তায়ালা আনহু’ (অর্থাৎ ‘আল্লাহ্ তার ওপর সন্তুষ্ট হোক’) অথচ এই ইয়াজিদ প্রাচীন ইসলামের একজন কলঙ্কিত নেতা, যাকে সুন্নি উলেমা বলেছেন ‘একজন ফাসিক (অপরাধী)’, যিনি মদ খেতেন ও নামাজ পড়েননি। নায়েকের মতবাদ হলো এই ওয়াহাবী, মৌলবাদী, সঙ্কীর্ণচিত্ত মনোভাব, যার কাছে আত্মসমালোচনা অসম্ভব। এই মনোভাবের কারণেই ইসলামের স্বর্ণযুগ শেষ হয়েছে। ইসলামী সাহিত্য এবং বৈজ্ঞানিক সাফল্য নিয়ে গর্ব করার মতো অনেক কিছু আছে। কিন্তু ইসলামের স্বর্ণযুগ ছিল তখন যখন ইসলামের তৎকালীন মনোভাব অন্য সভ্যতার প্রতি (যেমন গ্রীক ও হিন্দু সভ্যতার প্রতি) সবচেয়ে উদারপন্থী ছিল। সেই সময়ে ইসলামী শিক্ষার্থীগণ প্রায়ই অন্যান্য সভ্যতার সাহিত্য পাঠ করতেন এবং তাদের দর্শন প্রয়োগ করতেন। ইসলামী ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিগণ, যেমন ইবনে সিনা ও ইবনে রুশদ, তারা অন্যান্য ‘জাহিলিয়া’ সভ্যতার সাহিত্য ও চিন্তার প্রতি এত মুগ্ধ ছিলেন যে, তৎকালীন হুজুররা তাদের বিরোধিতা করতেন। এই ইসলামী পুনর্জাগরণের পতন ঘটল যখন জাকির নায়েকের মতো সঙ্কীর্ণচিত্ত প্রতিমূর্তি ‘অ-ইসলামী’ গ্রীক ও হিন্দুদের সব জ্ঞান ‘জাহিলিয়া’ (অজ্ঞতা) ও প্রলোভন বলে নিষেধ করলেন এবং দাবি করলেন যেন ছাত্রছাত্রীরা শুধু ‘খাঁটি ইসলামী’ বিষয় পড়েন। জাকির নায়েক সবচেয়ে জোর গলায় ইসলামের স্বর্ণযুগ নিয়ে গর্ব করেন; কিন্তু তারই কট্টর মনোভাবের কারণে স্বর্ণযুগের পতন হচ্ছে। বিশেষ করে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এবং সন্ত্রাসীদের কাছে জাকির নায়েক খুব প্রিয়, দেখিয়েছেন ইংল্যান্ডের একজন মধ্যপন্থী মুসলমান। কাফিল আহমেদ, যিনি স্কটল্যান্ডের গ্ল্যাস্কো বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলার চেষ্টা করেছিলেন, তিনি কয়েক মাস আগে জাকির নায়েককে তার বাড়িতে লেকচার দেয়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন। যখন করাচীর লাল মসজিদ থেকে তালেবান জঙ্গীদের বের করা হলো, তখন দ্য ডন সংবাদপত্র অনুযায়ী, তাদের সরঞ্জামের মধ্যে, বিশেষ করে জাকির নায়েকের অনেক বেশি ভিডিও পাওয়া গিয়েছিল। বিশিষ্ট আলেমগণের উপরোল্লিখিত ভাষ্য, মন্তব্য ও অভিমত অনুসারে এ কথা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, পিস টিভি ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ক্রিয়াকলাপ মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ-বিসম্বাদ সৃষ্টি করে মাত্র। তাছাড়া জাতিগত বিদ্বেষ সৃষ্টিতেও তার এসব কার্যকলাপ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সুতরাং পিস টিভি ও ওই ফাউন্ডেশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবত রাখাটাই ভারত ও বাংলাদেশের বৃহৎ সংখ্যক আলেম-ওলামা শ্রেয়তর বলে মনে করেন। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক
×