একটা সুন্দর চাঁদের আলো ঝরে পড়ছিল ধান কাটা শেষের
সোনালি বিলে; চারিদিকে তখন মৃদু বাতাসের সঙ্গীতে গড়ে
উঠেছে অদ্ভুত এক নীরবতা। আমরা ক’জন কেন জড়ো
হয়েছিলাম ওই বিলে, আজো কেউ জানি না। আমরা যারা
জড়ো হয়েছিলাম, তাদের ভিতর কেউ মৃত ছিলাম না,
ছিলাম না করুণ কেরানী বা স্বামী নির্যাতিতা কোন তরুণী।
আমরা সবাই স্বাধীন বেকার উদ্দাম তরুণ ও তরুণী।
আমাদের কারো ঠোঁট থেকে তখনও শুকিয়ে যায়নি
নব বসন্তের গন্ধ, বরং ছিলাম পুলকিত। আমরা
একে অপরের ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলাম বাতাসের
সঙ্গে বিলি কেটেছিলাম কেউ বা কারো চুলে।
আমাদের কাছে কোন মন্দিরা ছিল না, তার পরেও আমরা
হাতে হাতে মন্দিরা বাজিয়ে গেয়েছিলাম রাধার রাস পূর্ণিমার
গান, তবে ঝুলন দোলায় কেউ দোলেনি, অথচ আমাদের
মন দুলে উঠেছিল, সকলের মন তখন ছিল রাধা
কোন কৃষ্ণ ছিল না ওই নরম চাঁদের আলোয় আর সমুদ্র
থেকে উঠে আসা বাতাসে। সমুদ্র থেকে যে বাতাস উঠে
আসে কেউ তার মনের ভাষা পড়ে না, এমন করুণ বিরহী
রাধা আর বুঝি নেই পৃথিবীতে! আমরা ক’জন বেকার
তরুণ ও তরুণী সেই খোলা চাঁদের আলোর নিচে, সমুদ্রের
বাতাসে ভিজে ভিজে সকলেই রাধা হয়ে গিয়েছিলেম সেদিন।
আজকের এই বদ্ধ ঘরের কংস জীবনে কখনই আসবে না রাধা
কেবল যুদ্ধ আর যুদ্ধ, যুদ্ধই কি আসলে মানবজীবনÑ রাধা নয়?
শীর্ষ সংবাদ: